Wednesday, December 18, 2013

মূর্খের বসতি

প্রশ্নঃ আমার একজন পরিচিত আরব, তিনি আরব হবার কারণে বেশ গর্বিত। আমি অনারব, আর সে কারণে তিনি আমাকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে অবজ্ঞা করেন।

আমি এ কারণে তার উপর বেশ ক্ষেপে আছি, আর আমি তাকে সূরা আল-জুমআর আয়াত "তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন" শুনিয়ে তাকে বুঝিয়ে দিতে চাই যে সে আসলে কিছুই না!

এটা কী গ্রহণযোগ্য, না কী তাঁকে হেয় করার জন্য আমি পাপী হব?

উত্তরঃ

আপনারা দুইজনই মূর্খ!

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর সাহাবীরা ছিলেন আরব। এ কারণে আপনি আরবদের ব্যাপারে বাজে কথা বলতে পারেন না।

আর আবু জাহেলও কিন্ত আরব ছিল। তাই "শুধুমাত্র" আরব হবার কারণে কিন্ত গর্বিত হওয়া কোনভাবেই সাজে না।

http://assimalhakeem.net/node/6880

---------------------------------------------------------------------------------

শায়খ আসিম আল-হাকিম মাঝেমাঝেই উত্তর দেবার ক্ষেত্রে কিছু কড়া ভাষা ব্যবহার করেন।

কিন্ত পুরো উত্তরটা পড়ে মনে হল, দুইজনকে "মূর্খ" বলাটা ঠিকই আছে।

সমস্যা একটাই।

এই রকম মূর্খ দিয়ে আমাদের চারপাশটা ভর্তি।

শয়তানের পদাংক অনুসরণ বলতে কী বোঝায়?

"হে ঈমানদারগণ, তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর। আর শয়তানের পদাংক অনুসরণ কোর না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।"

এক শুক্রবারে শায়খ শহীদুল্লাহ মাদানী আমাদের মসজিদে খুতবা দিতে এসে সূরা বাকারার এই আয়াতটার উপর অসম্ভব সুন্দর একটা আলোচনা করেছিলেন।

তিনি বলেছিলেন,

"এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের ১০০% ইসলাম পালন করতে বলেছেন। ৭০% না, ৮০% না, ৯০% না, পুরো ১০০%। আর এই ১০০% ইসলাম ভিত্তি হচ্ছে কুরআন আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ।

অর্থ্যাৎ আমরা যাই করি না কেন, তার মূল ভিত্তি কুরআন আর হাদীসে থাকতে হবে।

আর এর বাইরে আমরা যাই করি না কেন, তার প্রত্যেকটা হচ্ছে শয়তানের পদাংক অনুসরণ করা।

যেমন, আপনার কাজকর্মের ৬০%-এর ভিত্তি যদি হয় কুরআন আর হাদীস, তাহলে বাকী ৪০% হচ্ছে শয়তানের পদাংক অনুসরণ।

আপনার কাজকর্মের ৫০% যদি হয় কুরআন আর হাদীসের অনুসরণ, তাহলে বাকী ৫০% হচ্ছে শয়তানের পদাংক অনুসরণ।"

খুব সোজা বাংলায়, আমরা যাই করি, আর যাই বলি, তার সমর্থন যদি কুরআন এবং হাদীসে থাকে, এবং সহীহ আক্বীদার আলেমগণ যদি তার ব্যাপারে হ্যাঁ-বাচক উত্তর দিয়ে থাকেন, তাহলে সেটা ইসলামে অনুমোদিত।

আর যদি তা না হয়, তাহলে সেই জিনিসের ব্যাপারে আপনার যতই আবেগ থাক না কেন, আর যতই আপনার বাপ-দাদা চৌদ্দগোষ্ঠী পালন করে থাক না কেন, সেটা আর কিছুই না, আল্লাহর দেওয়া সংজ্ঞা অনুযায়ী, শয়তানের পদাংক অনুসরণ।

Monday, December 2, 2013

রাজনৈতিক অস্থিরতার চক্র - মুক্তির পথ বেছে নিতে হবে আমাদেরই

আমার একটা অভ্যাস (না কি বদভ্যাস বলব?) আছে। যদি কোন বিষয়ে কোন কিছু ভবিতব্য বলে মনে হয়, তাহলে কেমন যেন একটা দায়সারা গা-ছাড়া ভাব চলে আসে। মনে হয়, "ধুর, এটা ঘটার সম্ভাবনাই বেশি, এত মাথা ঘামিয়ে লাভ কী?"

অস্বীকার করব না, অনেক ক্ষেত্রেই আমার এই "বিজ্ঞ" prediction ভুল প্রমাণিত হয়েছে, তারপরও কেন যেন এই অভ্যাস (না বদভ্যাস?) ছাড়তে পারি না।

এই যে গত কয়েক দিন ধরে নিয়মিত সহিংসতায় মানুষের মৃত্যুর খবর শুনছি, আর প্রায় প্রতিদিনই তো টিভিতে শাহবাগের পুড়ে যাওয়া মানুষদের দেখছি, তাঁদের স্বজনদের আহাজারি শুনছি। মন খারাপ হয়, কিন্ত কেন যেন মনকে ঐভাবে ছুঁতে পারে না।

কারণ, জানি যে যা ঘটছে, তার পিছনের মূল কারণ আমরা নিজেরা।

অবাক হচ্ছেন?

নিচের কথাগুলো পড়ে দেখুন।

"সর্বশক্তিমান আল্লাহর জ্ঞানের অন্যতম নিদর্শন হল এই যে, তিনি তাঁর দাসের উপর এমন শাসক নিযুক্ত করে দেন, যাঁরা তাঁদের (শাসক) কর্ম ও সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তাদের দ্বারা শাসিতদের কর্ম ও সিদ্ধান্তের প্রতিফলন ঘটান।

☛ তারা (শাসিত) যদি হক্বের (আল্লাহর দেওয়া হুকুম-আহকাম) উপর অটল থাকে, তাহলে তাদের শাসকরাও হক্বের উপর অটল থাকবেন। আর তারা যদি হক্বের পথ থেকে সরে যায়, তাদের তাদের শাসকরাও অনুরূপভাবে হক্বের পথ থেকে সরে যাবেন।

☛ তারা যদি নিজেদের এবং অন্যদের উপর জুলুম করতে থাকে (নিয়মিত পাপে নিমজ্জিত হওয়াই ইসলামে নিজের উপর জুলুম), তাহলে তাদের শাসকও তাদের উপর জুলুম করতে শুরু করবেন।

☛ তারা যদি প্রতারণায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, তাদের শাসকও তাদের সাথে প্রতারণা করবেন। এরই সাথে, তারা যদি একে অন্যের অধিকার প্রদানে গড়িমসি শুরু করে আর কৃপণতার আশ্রয় নেয়, তাদের শাসকও অনুরূপভাবে তাদের অধিকার প্রদানে গড়িমসি শুরু করবেন আর তাদের ক্ষেত্রে কৃপণতার আশ্রয় নেবেন (অর্থ্যাৎ জনকল্যাণে সামান্য অর্থই ব্যয় করা হবে)।

☛ তারা যদি দূর্বলদের সম্পত্তি, যা কোনভাবেই তাদের প্রাপ্য নয়, হরণ করতে শুরু করে, তাহলে তাদের শাসক তাদের উপর একের পর এক কর চাপিয়ে দিবেন।

☛ আর দূর্বলদের কাছ থেকে যতটুকুই অন্যায়ভাবে ছিনিয়ে নিক না কেন, তাহলে তাদের শাসক তাঁর ক্ষমতা দিয়ে সেই সম্পত্তি তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেবেন। 

সোজা কথায়, শাসকেরা হবেন তাদের নিজেদের প্রতিফলন।"

না, কথাগুলা আমার না। কথাগুলা ইমাম ইবনুল কায়্যিমের।

একটু নিজেদের দিকে তাকিয়ে দেখি তো, এই কাজগুলো কি আমাদের আশেপাশে ঘটছে? 

তারচেয়েও বড় কথা, আমরা নিজেরা, প্রত্যেকে, কি এই কাজগুলোর সাথে জড়িত?

উত্তর আমরা সবাই জানি বলেই মনে হয়।

আমাদের অনেকেরই প্রশ্ন, কী করলে এই রাজনৈতিক অস্থিরতার চক্রের হাত থেকে আমরা মুক্তি পাব?

উত্তর আসলে একেবারেই সোজা। নৈর্বক্তিক প্রশ্নের মত, দুটো অপশন থেকে আমাদের একটা বেছে নিতে হবে।

এক, নিজেরা যা খুশি, যেভাবে খুশি, সেভাবেই চলা।

দুই, আল্লাহর কাছে তওবা করে নিজেদের সংশোধন করা, কুরআন হাদীসের আলোকে নিজেদের জীবন পরিচালিত করা।

দ্বিতীয়টার পরিণতি, এই ভয়াবহ রাজনৈতিক অস্থিরতার চক্র, যা স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের দেশকে কুরে কুরে খাচ্ছে, ইনশাআল্লাহ, তার থেকে মুক্তিলাভ।

প্রথমটার পরিণতি, আমরা যেমন যেভাবে খুশি সেভাবে চলব, ঠিক তেমনিভাবে আমাদের শাসকেরাও যেভাবে খুশি সেভাবেই চলবেন!

পছন্দ এখন আমাদের।

আর সেই অনুযায়ী কর্মফলটাও ভোগ করতে হবে আমাদের।


Friday, November 15, 2013

কী অনুভূতি নিয়ে আশুরাকে পালন করা উচিত?

ইসলামের ইতিহাসে আশুরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্মৃতিবিজরিত দিন। একদিকে জালিম ফিরআউনের কবল থেকে মুসা আলাইহিস সালাম ও বনী ইসরাইলের মুক্তি, আবার অন্যদিকে কারবালার প্রান্তরে ইমাম হোসেন রাযিআল্লাহু আনহু এবং তার সঙ্গীদের মৃত্যু।

কিন্ত কীভাবে আমরা আশুরাকে পালন করব? অর্থ্যাৎ, আশুরা পালনের সময় মনের মধ্যে কোন আবেগটি আমাদের মধ্যে কাজ করা উচিত, মুসা আলাইহিস সালামের বিপদ থেকে পরিত্রাণ লাভের আনন্দ, না কী ইমাম হোসেন রাযিআল্লাহু আনহুর শহীদ হওয়ার জন্য দুঃখ?

→ "রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ছেলে ইবরাহীম যে মাসে মারা যান, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বা সাহাবীগণ, কেউই সে মাসকে 'শোকের মাস' হিসেবে পালন করেন নি, আর সে মাসে বিয়ে করাও বাদ দেন নি। অথবা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রাণপ্রিয় চাচা, হামযা রাযিআল্লাহু আনহু যে মাসে শহীদ হয়েছিলেন, আর তাঁর কলিজা কেটে চিবানো হয়েছিল, সেই মাসকেও তাঁরা 'শোকের মাস' বা 'বিবাহ বর্জনের মাস' হিসাবে পালন করেন নি। অতএব, মহররমকে 'শোকের মাস' হিসাবে পালন করা আর এই মাসে বিয়ে বর্জন করা সুস্পষ্ট বিদআত ছাড়া কিছুই নয়।"


→ "আমাদের অন্যতম আনন্দের উপলক্ষ হচ্ছে আশুরা। এই দিনে মুসা আলাইহিস সালাম ও বনী ইসরাইলকে জালিম ফিরআউনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য আমরা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে থাকি। কিন্ত বেশিরভাগ মানুষ এটাকে ইমাম হোসেন রাযিআল্লাহু আনহুর শহীদ হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোক পালন করে।

প্রকৃতপক্ষে, এই শোক প্রকাশের আবহের মূল সূচনাকারী শিয়া সম্প্রদায়। তারা এই দিনে তাজিয়া মিছিল বের করে, চাবুক আর ছুরি দিয়ে নিজেদের শরীর রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত করে, যার সাথে ইসলামের নূন্যতম সম্পর্ক নেই।

মজার ব্যাপার হল, শিয়াদের মূল বিশ্বাসের সাথে ঘৃণা আর প্রতিশোধ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ইতিহাসে তারা ইসলাম ও মুসলিমদের প্রতারক হিসেবেই পরিচিত। অতীতের প্রতিটি ঘটনায় তারা ইসলামের শত্রুদের মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহায়তা করেছে। তাদের বিশ্বাসের তিনটি ভিত্তি হলঃ শির্ক, কুফরী এবং তাদের আয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশ তাদের ইমামদের প্রদান!

তারা কি কাফির?

এখানে যে বিষয়টা বুঝতে হবে, কোন ব্যক্তিকে সুনির্দিষ্টভাবে কাফির বলার আগে তার বিশ্বাস সম্পর্কে প্রকৃত ও সুস্পষ্ট ধ্যারণা থাকতে হবে। সাধারণত, যদি কারো বিরুদ্ধে কোন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না থাকে, তার আগ পর্যন্ত তাকে মুসলিম হিসেবেই ধরে নিতে হবে।

কিন্ত কেউ যদি আয়িশা রাযিআল্লাহু আনহাকে গালি দেয়, আবু বকর আর উমার রাযিআল্লাহু আনহুকে অভিশাপ দেয়, তাহলে অবশ্যই সে কাফির। অথবা যদি বলে যে কুরআন অপরিবর্তিত নয়, অথবা তাদের কাছে অন্য একটি কুরআন রয়েছে, তাহলেও সে কাফির। যদি কেউ মনে করে যে তাদের ইমাম অদৃশ্য ক্ষমতার অধিকারী, অথবা মৃতকে জীবিত করতে পারে, তাহলে তা শির্ক।

আল্লাহ তাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে সঠিক বুঝ দান করুন এবং তাদের সুন্নাহ আঁকড়ে ধরার তৌফিক দান করুন।"


অতএব, আমাদের একটি খুশির উপলক্ষ হিসেবেই আশুরাকে পালন করতে হবে।

কিন্ত এরই সাথে, ইসলামের জন্য, আল্লাহর সন্তষ্টির জন্য, ইমাম হোসেন রাযিআল্লাহু আনহুর আত্মৎসর্গের কথাও আমাদের স্মরণে রাখা উচিত, কিন্ত অবশ্যই এটা মাথায় রাখতে হবে, ইসলামে "শোক দিবস" নামক কোন কনসেপ্ট নেই।

[ড. বিলাল ফিলিপস এবং শায়খ আসিম আল-হাকিমের কথাগুলো সিফাত মাহজাবীন আপুর সৌজন্যে।]

Monday, November 11, 2013

আশুরা বিষয়ক কিছু তথ্য

ইনশাআল্লাহ আগামী শুক্রবার বাংলাদেশে আশুরা। খুব সংক্ষেপে আশুরা বিষয়ক কয়েকটা কথা উল্লেখ করলাম।

☛ ১০ মুহাররম ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক দিন। আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে যে কথাটা বলতে হয়, এই দিনেই কারবালা প্রান্তরে ইমাম হুসাইন রাযিআল্লাহু আনহু শহীদ হন।

☛ আমাদের দেশে ইমাম হুসাইন রাযিআল্লাহু আনহুর হত্যাকারী হিসেবে ইয়াজিদকে দায়ী করা হয়। কিন্ত প্রকৃত ইতিহাস হল, ইয়াজিদ এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত নন। প্রকৃতপক্ষে এ সব বানোয়াট ঘটনা শিয়াদের ছড়ানো কাহিনী।

☛ এ ছাড়া কারবালা প্রান্তরে পাথর উল্টালে রক্ত বের হওয়া, সূর্যগ্রহণ, আকাশের দিগন্ত লাল হওয়া, আকাশ থেকে পাথর পড়া ইত্যাদিও সত্য না।

☛ এ দিন এবং তার আগের দিন রোজা রাখা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নত। কিন্ত এই আমলের সাথে কারবালার ঘটনার কোনই সম্পর্ক নাই।

☛ প্রকৃতপক্ষে, এই দিনে আল্লাহ মুসা আলাইহিস সালামকে বনী ইসরাইল সহ ফিরআউনের কবল থেকে রক্ষা করেন। তাই ইহুদীরা এ দিনে রোজা রাখত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনায় গিয়ে যখন তাদের এ আমল করতে দেখেন, তখন তিনিও এই দিনে রোজা রাখার ঘোষণা দেন। যেহেতু ইসলামের অন্যতম একটি মূলনীতি হল, কাফের-মুশরিকদের বৈপরীত্য করা, তাই তিনি তাঁর মৃত্যুর আগের বছরে পরবর্তী বছর আশুরার দিনের সাথে তার আগের দিন, অর্থ্যাৎ ৯ মুহাররম রোজা রাখার সংকল্প করেছিলেন। কিন্ত তার আশুরা আসার আগেই পরের বছর তিনি মারা যান।

☛ আশুরার দিনের রোজা এক বছরের করা গুনাহর কাফফারা, অতএব এর গুরুত্ব বলাই বাহুল্য। আর এর আগের দিন অথবা পরের দিন রোজা রাখা উত্তম। কিন্ত কেউ যদি শুধুমাত্র আশুরার দিনই রোজা রাখেন, সেটাও গ্রহণযোগ্য।

খুব সংক্ষেপে কোন রেফারেন্স ছাড়া কথাগুলো উল্লেখ করলাম। বিস্তারিত জানতে নিচের লেখাগুলো পড়তে অনুরোধ করছি।

১) শরীফ আবু হায়াত অপু ভাইয়ের লেখা "কারবালার কাহিনী"।

২) শুধুমাত্র আশুরার দিনে রোজা রাখা বিষয়ক IslamQA.com এর ফতোয়া

Tuesday, November 5, 2013

নারী এবং পুরুষের পার্থক্য

১৯১২ সালে মেডিসিনে নোবেল পুরষ্কার বিষয়ী ফ্রেঞ্চ সার্জন এবং জীববিজ্ঞানী ড. অ্যালেক্সিস ক্যারল, তাঁর "পুরুষঃ অজানা দিগন্ত" (Man, the unknown) বইয়ে পুরুষ এবং নারীর বায়োলজিকাল নানা পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করেছেন।

তিনি এই বলে উপসংহার টেনেছেন,

"প্রকৃতগতভাবেই নারী ও পুরুষ একে অপরের থেকে আলাদা। এই পার্থক্য আলাদা আলাদা যৌনাঙ্গের কারণে নয়, জরায়ুর উপস্থিতি-অনুপস্থিতি, গর্ভধারণে সক্ষমতা-অক্ষমতা অথবা শিক্ষার বিভিন্ন ধরণের কারণেও নয়।

বরং এই পার্থক্যের সূচনা একদম শুরুতে, মায়ের গর্ভে শরীরের গঠন শুরু হওয়ার সময়, যেখানে ডিম্বকোষ থেকে দুই আলাদা লিঙ্গের জন্য আলাদা আলাদা রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয়।

এই মূল বিষয়গুলো সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণেই নারীবাদের ধারক ও বাহকদের মাথায় এই ধারণা ঢুকেছে যে পুরুষ ও নারী, উভয়কেই একই পরিমাণ জ্ঞান অর্জন করতে হবে, তাদের সমান ক্ষমতা পেতে হবে এবং তাদের উভয়ের একই দ্বায়িত্ব পালন করতে হবে।

কিন্ত বাস্তবতা এটাই, নারী ও পুরুষ একে অপরের থেকে পুরোপুরিই আলাদা। নারীর দেহের প্রতিটি কোষ তার নারীত্বের পরিচয় বহন করে। একই কথা সত্য তার প্রতিটি অঙ্গের ক্ষেত্রে, এবং বিশেষ করে, তার স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষেত্রে।

মানুষের শরীরের গঠনপ্রকৃতি একেবারেই সুনির্দিষ্ট, যেমন সুনির্দিষ্ট এক বছরের ব্যাপ্তি। মানুষের ইচ্ছামত এগুলো পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। এগুলো যেমন আছে, ঠিক তেমনভাবেই মেনে নিতে আমরা বাধ্য।

অতএব, নারীদের উচিত, পুরুষদের অনুকরণ না করে তাদের নিজেদের প্রকৃতি অনুযায়ী নিজেদের দক্ষতাকে শাণিত করে তোলা। যে কাজের জন্য তারা সৃষ্ট, কোনভাবেই তাদের সে কাজ পরিত্যাগ করা উচিত নয়।"

মূল পোস্টটি দেখুন এখানে

Collected from : সিফাত মাহজাবীন আপু।

নিজস্ব একটা মন্তব্যঃ

আশা করি ড. অ্যালেক্সিস ক্যারল এবার ছাগু হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।

Monday, November 4, 2013

অন্য ধর্মের দেবদেবীদের গালি দেওয়া কতটুকু যৌক্তিক?

সত্য সত্যই। তা চাপা থাকে না, চাপা রাখাও যায় না। একদিন না একদিন তা প্রকাশিত হয়েই যায়।

কিন্ত এই সত্য মানুষের কাছে প্রচার করার কাজটা, অনেক সময়ই বেশ ধৈর্য নিয়ে, ধীরে ধীরে করা উচিত। কারণ, সত্য অনেক সময়ই মানুষের মনে বেশ বড় একটা আঘাত হানে। আর মানুষ খুবই আবেগপ্রবণ একটা প্রাণী। আবেগের বশবর্তী হয়ে মানুষ হেন কাজ নাই, যা করতে পারে না। আর সেখানে, সত্যকে অস্বীকার করা খুবই সহজ।

আর সে জন্যই আল্লাহ কুরআনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নির্দেশ দিয়েছিলেন,

"আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহবান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে এবং তাদের সাথে বিতর্ক করুন পছন্দ যুক্ত পন্থায়।" [সূরা আন-নাহল, আয়াত ১২৫]

আজকে হঠাৎ করেই ফেসবুকে এমন কতগুলো পেজ চোখে পড়ল, যেখানে "সত্য প্রচারের" জন্য হিন্দু ধর্মের দেবদেবীদের নানাভাবে আক্রমণ করা হয়েছে।

আর দুঃখের সাথে এটাও দেখতে হল, কমেন্ট বক্সে অনেক হিন্দুই আমাদের প্রিয় রাসূলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আক্রমণ করেছেন!

ইসলাম সত্য, আর অন্য সকল ধর্ম মিথ্যা। এটাই ধ্রুব সত্য, no doubt at all।

কিন্ত তাই বলে, অন্য ধর্মের দেবদেবীদের গালিগালাজ করলে কাজের কাজ কি আসলেই কিছু হবে?

কুরআনে তো আল্লাহ বলেই দিয়েছেন,

"আল্লাহকে ছেড়ে যাদেরকে তারা ডাকে তাদেরকে তোমরা গালি দিও না; কারণ এতে তারাও সীমালংঘন করে অজ্ঞতাবশত আল্লাহকে গালি দিবে।" [সূরা আল-আন'আম, আয়াত ১০৮]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই যে এত বছর ধরে ইসলাম প্রচার করলেন, এত এত যন্ত্রণা, অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করলেন, একটাবারও কি মক্কার মুশরিকদের দেবদেবীদের গালি দিয়েছেন?

আর আমাদের চাক্ষুষ উদাহরণ হিসেবে ড. জাকির নায়েক তো আছেনই। এই যে তাঁর এত এত পিস কনফারেন্স, বিভিন্ন ধর্মের তুলনা নিয়ে তাঁর এত এত লেকচার, কোনখানেই কি তিনি অন্য ধর্মের দেবদেবীদের গালি দিয়েছেন?

আমাদের মাথায় রাখা উচিত, আমাদের কাজ শুধু সত্য পৌঁছিয়ে দেওয়া, কাউকে ঘাড় ধরে সত্য মানানো না।

আর এটাও মনে রাখা উচিত, দ্বীন প্রচার করতে গিয়ে আমরা যা যা বলি, যা যা করি, তারও হিসাব কিন্ত আল্লাহর কাছে দিতে হবে!

তাঁর আদেশ না মেনে, তাঁর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দেখানো পথ অনুসরণ না করে "দ্বীন প্রচার" করতে গেলে কাজের কাজ তো কিছুই হবে না, বরং নিজেদেরই পরকাল নিয়ে টানাটানি পড়ে যেতে পারে!


Friday, November 1, 2013

কেন আল্লাহ জাহান্নামের ভয় দেখালেন?

কিছুদিন আগে, আমার একজন বন্ধুর সাথে আমার একটা বিষয়ে মনোমালিন্য হয়। যার ফলে, আমি তার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেই। এমন কী, হোয়াটস অ্যাপ আর ভাইবারে, তার সাথে যে যে গ্রুপে ছিলাম, রাগের মাথায় সেই সব গ্রুপ থেকেও নিজেকে রিমুভ করে দেই!

প্রায় ১৭-১৮ দিন পর,ফেসবুকে হঠাৎ এই হাদীসটা চোখে পড়ে,

হযরত আবু হোরাইয়া (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন, কোন মুসলমানের জন্য তার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সর্ম্পক ছিন্ন করে থাকা জায়েয নয়। যে ব্যক্তি তিন দিনের অধিক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকল এবং মারা গেল সে দোযখে যাবে। (আবু দাঊদ) - See more at: http://muminun.net/bengali/hadith/index.php?cID=448#sthash.hfsbUe0X.dpuf
হযরত আবু হোরাইয়া (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন, কোন মুসলমানের জন্য তার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সর্ম্পক ছিন্ন করে থাকা জায়েয নয়। যে ব্যক্তি তিন দিনের অধিক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকল এবং মারা গেল সে দোযখে যাবে। (আবু দাঊদ) - See more at: http://muminun.net/bengali/hadith/index.php?cID=448#sthash.hfsbUe0X.dpuf
"কোন মুসলমানের জন্য তার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সম্পর্ক ছিন্ন করে রাখা বৈধ নয়। যে ব্যক্তি তিন দিনের অধিক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকল এবং মারা গেল, সে জাহান্নামে যাবে।"

আল্লাহর অসীম রহমতে, এই হাদীসটা পড়েই আমার মাথায় যেন বাজ পড়ল!

আমার ঐ বন্ধুর সাথে আমি সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে রেখেছি প্রায় ১৭-১৮ দিন হয়ে গেল! আল্লাহর দয়ায় এখনো বেঁচে আছি বলে রক্ষা, অথচ এর মধ্যেই যদি মারা যেতাম, আমার স্থান হত জাহান্নাম!!!

তাড়াতাড়ি করে "মান-অভিমান চুলায় যাক", এই বলে আমার বন্ধুর ওয়ালে গিয়ে সালাম দিয়ে আসলাম।

আলহামদুলিল্লাহ, সেও সালামের উত্তর দিল, আর দুজনে মিলে আমার সেই আগের মত হয়ে গেলাম, যেন আমাদের মধ্যে কোনদিন কোন মনোমালিন্য হয়ই নাই!

নাস্তিকদের একটা খুব প্রিয় কথন যেটা,

"আল্লাহ খালি জাহান্নামের ভয় দেখান। এটা করলে জাহান্নাম, ওটা করলে জাহান্নাম, সেটা করলে জাহান্নাম! এত ভয় নিয়ে বেঁচে থাকা যায়?"

আর

"আমি কেন আল্লাহর ভয়ে, জাহান্নামের ভয়ে খারাপ কাজ বাদ দেব? কেন, আমাদের কি বিবেক নেই?"

অবশ্যই আমাদের বিবেক আছে, সেই বিবেকের কাছে দায়বদ্ধতাও আছে।

কিন্ত সাথে আর একটা জিনিসও আছে, নিজের মন্দ কাজের জন্য যুক্তি, তথা অজুহাত।

শুধু মাত্র একটা উদাহরণ দেই।

নিয়মিত ব্যভিচারে যারা অভ্যস্ত, তারা কিন্ত খুব সহজ একটা যুক্তি দিতে পারেন।

"আরে, আমাদের একে অন্যকে পছন্দ, কিন্ত সমাজ আমাদের এক হতে দেবে না। এখন কী করব? আমরা তো কেউ কাউকে কোন জোর খাটাচ্ছি না, নিজের পছন্দে একে অন্যের সাথে একান্ত সময় কাটাচ্ছি, তাতে কার কী সমস্যা হয়?"

যুক্তিটা কিন্ত সত্যিই অসাধারণ, কিন্ত এই কাজটার consequence কিন্ত আমাদের সবারই জানা।

যাদের কাছে (including so many muslims) এই যুক্তিটা ভাল যুক্তি মনে হয়, তাঁদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস অনুযায়ী একটা অনুরোধ করব।

চোখ বন্ধ করে একটু কল্পনা করুন তো, আপনার মা আপনার বাবাকে বাদ দিয়ে অন্য কোন পুরুষের সাথে একান্ত সময় কাটাচ্ছেন......

সত্যিই যদি বিবেক বলে আপনার কিছু থাকে, এরপর থেকে ব্যভিচারের প্রতি আপনার প্রবল ঘৃণা জন্মানোর কথা।

যাক সে কথা।

সোজা বাংলায়, শুধুমাত্র একটা কারণেই আল্লাহ আমাদের জাহান্নাম নিয়ে এত ভয় দেখিয়েছেন, কারণ আমাদের সৃষ্টিকর্তা হিসেবে তিনি জানেন, যুক্তি (actually কুযুক্তি) নামক নানা রকম অজুহাত খাড়া করে নিজেদের যত মন্দ কাজ আছে, তার সব কিছু জাস্টিফাই করা আমাদের কাছে বাঁ হাতের খেল।

তাই তিনি সে সব কাজের ক্ষেত্রে জাহান্নামের ভয় দেখিয়েছেন, যে সব কাজগুলো সত্যিকার অর্থেই খারাপ কাজ, মন্দ কাজ, সমাজ ব্যবস্থাকে লন্ডভন্ড করে ফেলতে পারে যা, সেগুলো মানুষ যেন করার আগে তিন-চার বার চিন্তা করে, এটা ভাবে যে, "আল্লাহ তো দেখছেনই, সাথে দুই কাঁধের ফেরেশতা তো সব নোট করে রাখছেন, এইখানে কুকাজটা করে না হয় কোনভাবে ফাঁকিঝুঁকি দিয়ে বেরিয়ে যাব, কিন্ত আল্লাহকে ফাঁকি দেব কীভাবে? আর আল্লাহ মাফ না করলে তো সোজা জাহান্নাম!"

আল্লাহর ইবাদত করি বা না করি, আল্লাহর তাতে বিন্দুমাত্র কিছু যায় আসে না।

কিন্ত তাঁর ইবাদত করলে, অক্ষরে অক্ষরে মেনে চললে, আমাদের সমাজের যে চরিত্র দাঁড়াবে, তার একটা ছোট্ট উদাহরণ দিতে পারি।

মক্কা-মদীনায় যখন ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হয়ে গেল, তখন একজন যুবতী ঘুটঘুটে রাতের বেলায় একা একা রাস্তায় চলতে পারতেন। না ছিল তার কাছে থাকা জিনিস চুরি বা ডাকাতি হবার ভয়, না ছিল ধর্ষিত হবার ভয়। শুধু একটাই ভয় ছিল, কোন বন্য জন্তু হঠাৎ করে আক্রমণ করে বসে না কী!

নারী স্বাধীনতার এই দৃষ্টান্ত কি বর্তমান সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা প্রচলিত সমাজের কোথাও দেখাতে পারবেন?
কোন মুসলমানের জন্য তার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সর্ম্পক ছিন্ন করে থাকা জায়েয নয়। যে ব্যক্তি তিন দিনের অধিক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকল এবং মারা গেল সে দোযখে যাবে। - See more at: http://muminun.net/bengali/hadith/index.php?cID=448#sthash.hfsbUe0X.dpuf
হযরত আবু হোরাইয়া (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন, কোন মুসলমানের জন্য তার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সর্ম্পক ছিন্ন করে থাকা জায়েয নয়। যে ব্যক্তি তিন দিনের অধিক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকল এবং মারা গেল সে দোযখে যাবে। (আবু দাঊদ) - See more at: http://muminun.net/bengali/hadith/index.php?cID=448#sthash.hfsbUe0X.dpuf
হযরত আবু হোরাইয়া (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন, কোন মুসলমানের জন্য তার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সর্ম্পক ছিন্ন করে থাকা জায়েয নয়। যে ব্যক্তি তিন দিনের অধিক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকল এবং মারা গেল সে দোযখে যাবে। (আবু দাঊদ) - See more at: http://muminun.net/bengali/hadith/index.php?cID=448#sthash.hfsbUe0X.dpuf
হযরত আবু হোরাইয়া (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন, কোন মুসলমানের জন্য তার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সর্ম্পক ছিন্ন করে থাকা জায়েয নয়। যে ব্যক্তি তিন দিনের অধিক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকল এবং মারা গেল সে দোযখে যাবে। (আবু দাঊদ) - See more at: http://muminun.net/bengali/hadith/index.php?cID=448#sthash.hfsbUe0X.dpuf

Wednesday, October 30, 2013

কেন নিজেকে সালাফী বলি?

ধরুন আপনি কলা কিনতে গেছেন।

আপনি (দোকানদারকে) : ভাই, এটা কোথাকার কলা?

দোকানদারঃ আরে ভাই, কলা তো কলাই। কোথাকার কলা এইটা দিয়া কী করবেন?

আপনিঃ এমনি জানতে চাচ্ছি। বলেন না কোথাকার কলা?

দোকানদারঃ আরে না না, কলা হইল কলা। আপনি নিবেন কলা, ভাল কইরা বাইছা লন, সমস্যা নাই। কিন্ত এইটা কয়া যাইব না কোন জায়গার কলা!

ধরে নিলাম, আপনি খুবই ধৈর্যশীল একজন মানুষ, এবং খুবই শান্ত একজনও। হয়ত আপনি সেই দোকানদারের কাছ থেকে কলা কিনবেনও। কিন্ত, বেশ বিরক্ত হবেন আপনি, এ কথাটুকু কিন্ত বলাই যায়।

ঠিক এই exact feeling-টা আমার হয়, যখন আমি শুনি,

☛ "ভাই, নিজেকে সালাফী/আহলে হাদীস বলেন কেন? আমরা তো মুসলিম।"

☛ "ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম আমাদের নাম রেখেছেন মুসলিম। আপনি কেন বলেন আপনি সালাফী/আহলে হাদীস?"

☛ "আল্লাহ বলেছেন আমাদের মুসলিম হয়ে মরতে। আপনি কেন সালাফী/আহলে হাদীস হয়ে মরার কথা বলেন?"

ভাই, শোনেন,

কোন সালাফী/আহলে হাদীস কবে বলেছেন যে, "আমরা মুসলিম না?"

সালাফী/আহলে হাদীস হল মুসলিম হিসেবে আমাদের বৈশিষ্ট্য। যেমন চাঁপাইনবাবগঞ্জের কলার বৈশিষ্ট্যই হল এই কলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে উৎপাদিত।

এখন চাঁপাইনবাবগঞ্জে কলাগুলোকে "চাঁপাইনবাবগঞ্জের কলা" বললে কি ওগুলো কলা থাকে না?

ঠিক তেমনি, সালাফী/আহলে হাদীস পরিচয় দিলে কি কেউ "মুসলিম" থাকে না???

শিয়ারা কাফের, কাদিয়ানীরা কাফের, আহমদিয়ারাও কাফের। কিন্ত কোন শিয়া বা কাদিয়ানী বা আহমদিয়াকে ডেকে আপনি বলতে পারবেন না, "এই ভাই শোনেন, আপনি কিন্ত কাফের!" এতটা অধিকার আমার আপনার মত ম্যাংগো পিপলের নাই!

তো এখন, আমরাও বলি, "আমি মুসলিম", শিয়া কাদিয়ানী আহমদিয়ারা বলে, "আমি মুসলিম"। তাহলে পার্থক্য করা যাবে কীভাবে?

ঠিক এই জন্যই "সালাফী বা আহলে হাদীস" কথাটার উদ্ভাবন।

সালাফী মানে সলফে সালেহীনদের অনুসারী। আহলে হাদীস, যদিও generally বোঝায় হাদীসের অনুসারী, কিন্ত ব্যাপক অর্থে সহীহ হাদীসের অনুসারী।

আর এটাই ছিল আমাদের প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ। আল্লাহর কিতাব, তথা কুরআনের অনুসরণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ, বা হাদীসের অনুসরণ, আর তাঁর পরবর্তী তিন যুগ, অর্থ্যাৎ সাহাবী, তাবেয়ী এবং তাবে-তাবেয়ী, অর্থ্যাৎ সালাফদের অনুসরণ।

অতএব, যে মুসলিম এগুলো অনুসরণ করেন, মাঝখানের নানা বিভ্রান্তি, বিভিন্ন "রায়" থেকে দূরে থাকেন, তিনিই সালাফী/আহলে হাদীস।

কিন্ত তার মানে এই না যে মুসলিম পরিচয়টাকে খাটো করে দেখা হচ্ছে।

"চাঁপাইনবাবগঞ্জের কলা"-কে "চাঁপাইনবাবগঞ্জের কলা" বলে ডাকলে at the end, যেমন সেগুলো কলাই থাকে, আপেল বা আঙ্গুর হয়ে যায় না;

তেমনিভাবে যিনি নিজেকে "সালাফী/আহলে হাদীস" বলে পরিচয় দেন, তিনি মুসলিমই থাকেন, নিজেকে সহীহ ইসলামের অনুসারী হিসেবে বুঝিয়ে থাকেন, "দ্বীন-ই-ইলাহী"-র মত কোন নতুন ধর্মের অনুসারী হিসেবে নিজেকে দাবি করেন না!

[In essence, যেহেতু কুরআন বা হাদীসের ব্যাখ্যা বুঝতে শেষমেশ সালাফদেরই দ্বারস্থ হই, তাই নিজেকে "সালাফী" বলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কিন্ত তার মানে আবার এই না যে, "আহলে হাদীস" বলা যাবে না। যিনি সালাফী, তিনিই আহলে হাদীস। এরপর ব্যক্তিগত অভিমত।]

আশা করি বুঝিয়ে বলতে পারলাম।

Thursday, October 24, 2013

আসুন "না" বলি

ঠিক যে মুহূর্ত থেকে আপনি আল্লাহর জন্য কোন কিছু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন, সেই মুহূর্ত থেকে কিছু অসাধারণ পরীক্ষার সম্মুখীন আপনাকে হতে হবে।

আপনি যদি "শুধুমাত্র" হালাল উপার্জন করতে চান, দেখবেন যে নানা "সন্দেহজনক" উপার্জনের রাস্তা আপনার সামনে খুলে যাচ্ছে!

আপনি যদি কোন দ্বীনদার মানুষকে বিয়ে করতে চান, দেখবেন যে এমন সব বিয়ের প্রস্তাব আপনার কাছে আসছে, যাঁদের কাছে ইসলাম পালন অনেক পরের একটা বিষয়!!

যদি আপনি পরিপূর্ণ হিজাব পালন করতে চান, তাহলে দেখবেন যে এমন সব জায়গায় পড়াশুনা বা চাকরির প্রস্তাব আপনি পাচ্ছেন, যার একমাত্র শর্ত হবে হিজাব ছেড়ে দেওয়া!!!

সত্যি বলতে কী, এগুলো কোন কিছুই কিন্ত কাকতালীয় না। এগুলো আসলে আমাদের জন্য এক একটি সুযোগ।

এগুলো আল্লাহর কাছে আমাদের প্রমাণ দেওয়ার জন্য সুযোগ; যে হ্যাঁ, আমরা শুধু মুখেই না, আমাদের জীবনেও ইসলামকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত।

এগুলো আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পরীক্ষা। তিনি দেখতে চান, আমরা আমাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কতটা দৃঢ়, কতটা অনমনীয়।

এই পরীক্ষাগুলোকে সাগ্রহে বরণ করে নিন। কোন দ্বিতীয় চিন্তা না করে যে কোন ক্ষেত্রে প্রতিটি সন্দেহজনক বিষয় এড়িয়ে চলুন।

যে মুহূর্ত থেকে আপনি এগুলো করতে শুরু করবেন, আল্লাহর রহমত আর সাহায্যের দুয়ার আপনার জন্য খুলে যাবে।

কখনোই "না" বলতে ভয় পাবেন না। মনে রাখবেন, এই "না" আসলে আল্লাহকে বলা একটা বিশাল বড় "হ্যাঁ"!

- শায়খ তাউফীক চৌধুরী

Courtesy : পড়ন্ত বিকেল


Friday, October 18, 2013

শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহর মতানুসারে বিদআতীদের বিচারের মূলনীতি

ড. আহমাদ আল-হুলাইবি,তাঁর "উসুল আল-হুকুম আলাল-মুবতাদিয়াহ ইন্দা শাইখ আল-ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ (শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহর মতানুসারে বিদআতীদের বিচারের মূলনীতি)" নামক গ্রন্থে ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ কীভাবে বিদআতীদের বিচার করতেন,তা তুলে ধরেছেন।

সংক্ষেপে মূলনীতিগুলো হচ্ছে, 

১) নিজস্ব ইজতিহাদে ভুলের কারণে কোন ধার্মিক ও পূণ্যবান ব্যক্তি যদি বিদআতে আপতিত হন,সেই ক্ষেত্রে তার জন্য অজুহাত বের করতে হবে। একই সাথে তাঁর ভুল ইজতিহাদের এমনভাবে সমালোচনা করতে হবে,যেন তাঁর মর্যাদাহানি না হয়।

২) আক্বীদাগত বা অন্য কোন বিষয়,মুজতাহিদ যে বিষয়েই কোন ভুল করে থাকুন না কেন,তার জন্য তাঁকে পাপী বলে মনে করা যাবে না। আর তাঁকে বিভ্রান্ত বা অবিশ্বাসী বলেও ঘোষণা দেওয়া যাবে না।

৩) বিদআতীকে বা তাঁর ইজতিহাদকে অব্যাহতি দেওয়ার চেষ্টা করার মানে এই নয় যে তাঁর বিদআতের সাথে একমত পোষণ করা,অথবা অন্য কাউকে সেই বিদআত অনুসরণ করার জন্য সম্মতি দেওয়া। বরং এটাই কর্তব্য যে,যথাযথ আদব অনুসরণ করে তাঁর বিদআতের বিরুদ্ধে কুরআন-হাদীসের স্বাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থিত করা।

৪) কেউ বিদআতে আপতিত হলেই এই রায় দেওয়া যাবে না যে তিনি "আহলুল আহওয়া ওয়াল বিদআ'"-র অন্তর্ভুক্ত। আর তাঁর প্রতি শত্রুতাও পোষণ করা যাবে না,যদি না সেই বিদআত আহলুস সুন্নাহ ওয়া আল-জামাআতের সম্মানিত আলেমগণের নিকট চরম মাত্রার বিদআত বলে পরিগণিত হয়।

৫) আক্বীদাগত বা অন্য কোন বিষয়,যে বিষয়েই কেউ যদি বিভ্রান্তিতে আপতিত হন,তার জন্য তাঁকে জাহান্নামী বলে ধরে নেওয়া যাবে না,যদি না তা সম্মানিত আলেমগণের নিকট চরম মাত্রার বিভ্রান্তি বলে পরিগণিত হয়। একইভাবে,কোন দল যদি সেই বিভ্রান্তিতে আপতিত হয়,তাহলেও সেই দলকে বিভ্রান্ত ৭২ দলের একটি বলে ধরে নেওয়া যাবে না।

৬) কোন কাজ,যার পরিণতি কুফরী বা ফিসক;এমন কোন কাজ করার ফলে কোন ব্যক্তিকে কাফির বা ফাসিক বলে গণ্য করার আগে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে,তাঁর বিরুদ্ধে "হুজ্জাহ" (পরিপূর্ণ প্রমাণ) না পাওয়া পর্যন্ত তাকে কাফির বা ফাসিক বলে রায় দেওয়া যাবে না।

৭) উম্মাহর মধ্যে ঐক্য স্থাপনের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। আক্বীদাগত কম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বিভেদের কারণে যেন উম্মাহর ভ্রাতৃত্বের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি না হয়,সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

৮) বিদআতীদের ভাল এবং মন্দ বর্ণনা করার সময় সুবিচার করা বাঞ্ছনীয়। তাদের মাঝে যা সত্য,তা গ্রহণ করতে হবে,আর যা মিথ্যা ও ভ্রান্ত,তা বর্জন করতে হবে।

Courtesy : শাইখ আবিদ

Thursday, October 17, 2013

কুরআন-হাদীস নিজে নিজে বোঝা

কুরআন-হাদীস নিজে নিজে বোঝা কি এতই সহজ?

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে যুল খুওয়াইসিরা বেয়াদবি করে চলে যাচ্ছিল,তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন,যুল খুওয়াইসিরার অনুগামীরা ইসলামের মধ্যে প্রবেশ করে আবার বেরিয়ে যাবে। আর তিনি ঘোষণা করেছিলেন,তিনি যদি তাদেরকে পান,সামূদ জাতির মত এই সম্প্রদায়কে হত্যা করে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন। পরবর্তীতে এই নির্দেশও তিনি দিয়ে যান,যেখানেই তাদেরকে পাওয়া যায়,তাদেরকে হত্যা করতে,কারণ তাদের হত্যা করলে পুরষ্কার রয়েছে।

আমরা সবাই জানি,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে পান নি। পেয়েছিলেন আলী রাযিআল্লাহু আনহু এবং অন্যান্য সাহাবীরা।

এই খারেজিরা অনেক সাহাবীসহ বহু মুসলিমকে বিনা বিচারে "কাফির" আখ্যায়িত করে হত্যা করেছে।

সাহাবীরাও কি তাই করেছিলেন?

না,তা তাঁরা করেন নি। বরং যুদ্ধের ময়দান ব্যতীত কোন খারেজিকে হত্যা করা তো দূরের কথা,তাঁরা তাদের সাথে মিশেছেন,সালাম বিনিময় করেছেন,এমন কী তাদের ইমামতিতে নামায পর্যন্ত পরেছেন।

এর মানে কী,সাহাবীরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা মানেন নি,খারেজিদের সাথে আপোষ করেছেন (নাউযুবিল্লাহ মিন জালিক)?

মোটেই তা না। কারণ স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীদের নির্ভরযোগ্যতার সংজ্ঞা দিয়ে গেছেন। আর তাঁরা যেভাবে ইসলাম বুঝেছেন,সেটাই প্রকৃত ইসলাম।

তাই সালাফী আলেমগণ সব সময় চেষ্টা করেন,কোন একটা ঘটনার প্রেক্ষিতে সালাফগণ কী ব্যাখ্যা দিয়ে গেছেন,বা কী কাজ করেছেন,সেটা অনুযায়ী similar কোন পরিস্থিতিকে ব্যাখ্যা করতে,ঐ অনুযায়ী ফতোয়া দিতে।

যাদের তাফসীরসহ পুরো কুরআন মুখস্থ,লক্ষ লক্ষ হাদীস সনদ সহ মুখস্ত,জিজ্ঞাসা করলেই যাঁরা মনে দিতে পারেন এই হাদীস সহীহ,ঐ হাদীস হাসান,ঐ হাদীস যঈফ,ঐ হাদীস জাল,তাঁরাও নিজেরা কোন ফতোয়া দেওয়ার আগে দেখেছেন সালাফদের ব্যাখ্যা কী,তারপরই ফতোয়া দিয়েছেন!

অবশ্যই আমরা আলেমদের কথা "ভেরিফাই" করতে পারি,দেখতে পারি তাঁরা যে কথা বলছেন,তার পিছনের রেফারেন্সটুকু কতটুকু শক্ত। আর কুরআন-হাদীসের বই সরাসরি পড়তেও কোন বাধানিষেধ নেই।

কিন্ত আলেম "হক্বপথে" আছেন না কী,সেটা "যাচাই" করার জন্য যদি কুরআন-হাদীস পড়া হয়,তাহলে কিন্ত "হক্ব" পাবার বদলে "ভ্রান্ত" হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

ঠিক যেভাবে খারেজিরা নিজে নিজে কুরআন বুঝতে গিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ আলেম,সাহাবীদের চেয়ে ইসলাম বেশি বুঝে উলটো ইসলাম থেকেই বেরিয়ে গিয়েছিল।

Wednesday, October 16, 2013

বুঝতে কি পারো?

ছাগল তিনটার কোরবানী করা শেষ। মালা আপা (আমাদের বাসার কাজের লোক) রক্ত ধুয়ে ফেলছেন,যেন ছাদের মেঝেতে রক্ত জমাট বেঁধে না যায়।

দুটো ছাগলের রক্ত পরিষ্কার করতে ৪-৫ মিনিট টাইম লাগল। তারপর আপা গেলেন তিন নম্বর ছাগলটার কাছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই আমিও সেই দিকেই তাকালাম।

তাকিয়ে দেখি,তরল রক্তের মাঝে লাল টকটকে কাপড়ের মত একটা কিছু পরে আছে।

আপাকে বললাম,"আপা,দেখেন তো ঐটা কী?"

আপা বললেন,"আর কিছু না ভাইয়া। রক্ত জমাট বেঁধে গেছে।"

আমি পুরো থ হয়ে গেলাম।

আপা বিষয়টা খোলাসা করে দেওয়ার পরও,তখনও আমার কাছে মনে হচ্ছিল যে লাল টকটকে একটা কাপড় মেঝেতে পরে আছে!

আসলে আল্লাহর অস্তিত্ব,তাঁর জ্ঞান,তাঁর রহমত,এগুলো বুঝতে আসলে তেমন কিছুই লাগে না।

শুধু দুইটা চোখ লাগে।

আর সেই চোখ দুইটা দিয়ে চারপাশে ঘটা ঘটনাগুলো হৃদয় দিয়ে অনুভব করা লাগে।

Thursday, October 3, 2013

শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হারাম,কিন্ত কোন শাসক?

প্রশ্নঃ শাসক,এমন কী যদি তারা পাপী এবং অত্যাচারীও হয়,তাদের প্রতি কী ধরণের আচরণ করতে হবে,তার বর্ণনা বিভিন্ন হাদীসে দেওয়া আছে। কিন্ত অনেকেই বলে থাকেন,এই শাসক হচ্ছেন এক ও অভিন্ন মুসলিম উম্মাহর খলিফা,বিভিন্ন দেশের বাদশা,রাজা,রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী নন। এই বিষয়ে বিশদ ব্যাখ্যা চাচ্ছি।

উত্তরঃ

এটা একটা ভুল ধারণা ছাড়া কিছুই নয় যে,শাসকের প্রতি আচরণের বিষয়ে যে সকল হাদীসগুলো বর্ণিত হয়েছে,সেগুলোতে শাসক বলতে শুধুমাত্র এক ও অভিন্ন মুসলিম উম্মাহর খলিফাকে বুঝানো হয়েছে। সম্মানিত শায়খগণ এ বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন। নিচে তাদের কিছু উল্লেখ করা হলঃ

১) শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহঃ

"সুন্নাহ এই যে,মুসলিমদের ইমাম (খলিফা) হবেন একজন,আর বিভিন্ন অঞ্চলে তাঁর প্রতিনিধি থাকবেন।

কিন্ত ধরুন,কিছু অঞ্চলে পাপে নিমজ্জিত হয়ে আর বাকী অঞ্চলে অসমর্থ হয়ে,অথবা এই কারণ ছাড়া অন্য যে কারণেই হোক না কেন,উম্মাহ এই সুন্নাহ পরিত্যাগ করল,যার ফলে একের বদলে অনেক ইমামের আবির্ভাব ঘটল।

তাহলে,ইমামদের উপর এটা অত্যাবশ্যকীয় হয়ে যায় যে,তাঁরা প্রত্যেকে নিজ নিজ অঞ্চলে "হুদুদ" (ইসলামে অপরাধের জন্য যে শাস্তি বর্ণিত হয়েছে) প্রতিষ্ঠা করবেন,এবং তাঁর অঞ্চলের লোকেদের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করবেন।"

[মাজমু আল-ফাতাওয়া,৩৫/১৭৫-১৭৬]

২) ইমাম আশ-শাওকানী রাহিমাহুল্লাহঃ

"সত্য এই যে,মুসলিমদের ইমাম হবেন একজন। কিন্ত,বিশ্বের নানা প্রান্তে ইসলাম ছড়িয়ে যাবার পর দেখা যায় যে,অঞ্চলগত দূরত্বের কারণে প্রত্যেক অঞ্চলে একজন করে ইমাম বা শাসকের আবির্ভাব ঘটে,যাদের কারোরই অন্য অঞ্চলে শাসন করার কোন অধিকার ছিল না।

অতএব,একের অধিক ইমামের উপস্থিতি কোন খারাপ কিছু নয়,এবং কোন অঞ্চলের মুসলিমদের এটাই কর্তব্য যে,সে যে অঞ্চলের অধিবাসী,সেই অঞ্চলে যে ইমামের আদেশ এবং নিষেধ মান্য করা হয়,তাঁর বায়আত গ্রহণ করে তাঁর আনুগত্য করা। অন্য সকল অঞ্চলের ইমামদের ব্যাপারেও একই কথা প্রযোজ্য।

আর কোন মুসলিমের এটা কর্তব্য নয় যে,সে যে অঞ্চলের অধিবাসী,সেই অঞ্চলের ইমাম ব্যতীত অন্য কোন অঞ্চলের ইমামের আনুগত্য করা।"

অতঃপর তিনি বলেন,

"আপনাদের এটা জেনে রাখা উচিত,এটা (একের অধিক ইমামের উপস্থিতি) ইসলামী শরীয়াতের বাইরে পরে না,বরং বিভিন্ন স্বাক্ষ্যপ্রমাণ এটাই নির্দেশ করে যে শরীয়াতে এর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আর এর বিপক্ষে যত কথাই উঠুক না কেন,এগুলোর কোনটিতেই কান দেবেন না,কারণ স্বর্ণযুগের ইসলামী শাসনব্যবস্থার সময়কার পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং বর্তমান সময়ের পারিপার্শ্বিক অবস্থার ভিন্নতা দিবালোকের চেয়েও স্পষ্ট।"

[আস-সাইয়েলুল জারার,৪/৫১২]

৩) ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল ওয়াহহাব রাহিমাহুল্লাহঃ

"প্রত্যেক মাযহাবের ইমামগণ এই বিষয়ে একমত যে,যিনিই কোন দেশ বা একের অধিক দেশের ক্ষমতা দখল করেন,তিনি প্রতিটি বিষয়ে ইমামের (খলিফা) স্থলাভিষিক্ত হন। যদি তা না হত,তাহলে এই দুনিয়ার কোন কাজই সঠিকভাবে সম্পন্ন হত না।

সেই ইমাম আহমাদ রাহিমাহুল্লাহর সময় থেকে এখন পর্যন্ত,এত লম্বা একটা সময়েও,লোকেরা একজন ইমাম (খলিফা) বাছাইয়ের ব্যাপারে একমত হতে পারে নি। আর এখন পর্যন্ত,কেউ এটাও কোন আলেম থেকে প্রমাণ করতে পারেন নি,শরীয়াতের কোন হুকুম-আহকাম প্রতিষ্ঠিত করতে,ইমামের (খলিফা) উপস্থিতি একান্ত আবশ্যক।"

[আদ-দারূর আস-সানিয়্যাহ,৭/২৩৯]

Courtesy : গাজী আরমান আব্দুর রহমান ভাই।

Sunday, September 29, 2013

সাঈদ ইবনে আবী ওয়াক্কাসকে উদ্দেশ্য করে উমার রাযিআল্লাহু আনহুর নির্দেশ

"আমি জোর নির্দেশ দিচ্ছি,প্রতিটি ক্ষেত্রে,তুমি এবং তোমার অধীনস্ত সৈন্যরা যেন আল্লাহকে ভয় করে। কারণ শত্রুদের মুখোমুখি হবার সবচেয়ে ভাল উপায় এবং যুদ্ধে সবচেয়ে ভাল পরিকল্পনা হচ্ছে আল্লাহর ভয়। আমি আদেশ দিচ্ছি,তুমি এবং তোমার সৈন্যরা যেন পাপের ব্যাপারে তোমাদের শত্রুদের চেয়ে বেশি সতর্ক থাকে,কারণ কোন সৈন্যদলের পাপ তাদের জন্য তাদের শত্রুদের চেয়ে বেশি ভয়ংকর। আর মুসলিমরা শুধুমাত্র একটি কারণেই আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত হয়,আর সেটা হল তাদের শত্রুদের আল্লাহর প্রতি অবাধ্যতার কারণে।"

- উমার রাযিআল্লাহু আনহু (সাঈদ ইবনে আবী ওয়াক্কাসকে উদ্দেশ্য করে)

["আল-ফারূক উমার ইবনে আল-খাত্তাব",মুহাম্মাদ রাশিদ রিবা,পৃষ্ঠা ১১৯]

Friday, September 27, 2013

অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদেশ

☛ সহীহ মুসলিম, হাদীস #৪৫৫৪

হুদাইফাহ রাযিআল্লাহু আনহু একটি দীর্ঘ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন,"ভবিষ্যতে এমন কিছু শাসক আসবে যারা না আমার নির্দেশ অনুসরণ করবে,না অনুসরণ করবে আমার সুন্নাত। এমন কী তাদের মধ্যে এমনও লোক থাকবে যাদের দেহ থাকবে মানুষের,কিন্ত মন হবে শয়তানের।" হুদাইফাহ রাযিআল্লাহু আনহু প্রশ্ন করলেন, "ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমি যদি তাদের পাই,আমি কী করব?" রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,"তুমি শাসকের কথা শুনবে এবং তার আনুগত্য করবে। এমন কী সে যদি তোমার পিঠে চাবুক দিয়ে পেটায় আর তোমার ধনসম্পদ বাজেয়াপ্ত করে,তারপরও তুমি তার কথা শুনবে এবং তার আনুগত্য করবে।"

☛ সহীহ মুসলিম, হাদীস #৪৫২৪

আবু হুরাইরাহ রাযিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,"দুর্দশা এবং সমৃদ্ধিতে,সুখে এবং দু:খে,এমন কী যখন অন্য কাউকে তোমাদের চেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়,সে সময়েও শাসকের আনুগত্য করা তোমাদের জন্য ফরয।"

☛ সহীহ মুসলিম, হাদীস #৪৫৫১

আলকামাহ ইবনে ওয়ালি আল-হাদরামী তাঁর পিতা বর্ণনা করেন, সালামাহ ইবনে ইয়াজিদ আল-জুয়াফী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেন, "ইয়া রাসূলুল্লাহ। যদি আমরা এমন শাসকের সম্মুখীন হই,যারা আমাদের কাছে এটাই দাবি করে যে আমরা যেন তাদের প্রতি আমাদের দ্বায়িত্ব পালন করি,কিন্ত তারা আমাদের প্রতি তাদের দ্বায়িত্ব পালন করে না,এদের ব্যাপারে আপনি কী মনে করেন? সে অবস্থায় আপনি কী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমাদের আদেশ করেন?" রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন উত্তর দেওয়া থেকে বিরত থাকলেন। সালামাহ আবার তাঁকে (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই প্রশ্ন করলেন। তিনি আবারও উত্তর দেওয়া থেকে বিরত থাকলেন। সালামাহ আবারও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একই প্রশ্ন করলেন। দ্বিতীয় অথবা তৃতীয়বার,আশআত ইবনে কায়েস (বুঝতে পারলেন যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উত্তর দেওয়ার জন্য জোর করা হচ্ছে, যার জন্য তিনি) সালামাহকে টেনে এক পাশে সরিয়ে আনলেন এবং বললেন, "তাদের কথা শুনবে এবং তাদের আনুগত্য করবে। কারণ তাদের বোঝা তাদের আর তোমাদের বোঝা তোমাদের (অর্থ্যাৎ তারা তাদের দ্বায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে এবং তোমরা তোমাদের দ্বায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে)।"

Courtesy : My best friend Shaykh Abid.


Tuesday, September 24, 2013

কেনিয়া (এবং পাকিস্তানে) অমুসলিমদের উপর সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিক্রিয়া - শায়খ ইয়াসির কাযী

কেনিয়ায় ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসবাদী হামলাটি নব্য-খারেজী সংগঠনগুলোর সত্যিকার ঘৃণ্য চরিত্রই আরো একটাবার ফুটিয়ে তুলেছে।

এই রক্তপাতের মাধ্যমে তারা আসলে কী পাবে বলে আশা করে? কোন প্রভু তাদেরকে এটা করতে আদেশ করেছেন? নিরীহ নিরস্ত্র মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করার এই পন্থা তারা কোন বইয়ে খুঁজে পেয়েছে? যখন তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মায়ের নাম জিজ্ঞাসা করে মানুষকে বিচার করছে,আর তাকেই মেরে ফেলছে যে তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মা) নাম জানে না,এর মাধ্যমে তারা কোন নবীর মর্যাদা রক্ষার চেষ্টা করছে?

তারা কি একটাবারও এটা বুঝতে চেষ্টা করেছে যে,তাদের প্রভু,তাদের ঐশীগ্রন্থ,আর তাদের নবী,প্রত্যেকে তাদের পাগলামি আর উন্মাদনা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ও পবিত্র?

যারা এই ঘটনার সাথে নানা পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে তারা সম্পূর্ণরূপে বিষয়টা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। এটা সেই সাদা-কালো মানসিকতা যেটা এই রকম উন্মাদনাকে একদম প্রথমেই উসকিয়ে দেয়।

আমরা পশ্চিমা শাসকদের নানা অন্যায়-অবিচারের বিপক্ষে,কিন্ত মুসলিমদের এ রকম কার্যকলাপ কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কারণ মুসলিম হিসেবে,আমাদের প্রত্যেকের দ্বায়িত্ব ইসলাম সম্পর্কে ভালভাবে জানা,আর আমাদের কাজের মাধ্যমে আমাদের বিশ্বাসটাকে আশেপাশের লোকেদের সামনে তুলে ধরা।

এই জঙ্গিদের কার্যকলাপ থেকে আমাদের বিশ্বাস,আমাদের ধ্যানধারণা,আমাদের ইসলাম,সম্পূর্ণরূপে মুক্ত ও পবিত্র।

- শায়খ ইয়াসির কাযী

[যদিও শায়খ তাঁর লেখায় উল্লেখ করেন নি,কিন্ত এরই সাথে,সম্প্রতি পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় গির্জায় ভয়াবহ হামলার কথাটাও এখানে উল্লেখ করতে চাই।

হ্যাঁ,এই মানুষদের বেশিরভাগই অমুসলিম,কিন্ত কুরআনের কোন আয়াতে বা কোন হাদীসে লেখা আছে যে যে অমুসলিমেরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে কোন চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত নেই,অমুসলিম শাসক গোষ্ঠীর চক্রান্তের প্রতিশোধ নিতে তাদের ধরে ধরে মেরে ফেলতে?

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে গেছেন,“যদি কোন ব্যক্তি কোন মু’আহিদ (অমুসলিম)-কে হত্যা করে তবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবেনা। যদিও চল্লিশ বছরের দূরত্ব থেকেই জান্নাতের ঘ্রাণ পাওয়া যায়।”

এই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোর সদস্যদের ঈমান নিয়ে এতটুকু প্রশ্ন তোলা যায় না। শুধু এটাই আফসোস হয়,এদের এই ঈমান ইসলামের কোন কাজে আসে না,বরং বিশ্বব্যাপী অমুসলিমদের মধ্যে ইসলামের প্রতি ঘৃণাই ছড়িয়ে দেয়।]

Friday, September 20, 2013

চলো পাল্টাই

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে হিজাব নিষিদ্ধ করার পর মুসলিমদের আবার ঐক্যবদ্ধ হওয়ার একটা প্রবল সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। প্র্যাকটিসিং মুসলিমরা তো আছেনই,মডারেট মুসলিমদের অনেকেই ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই ঘৃণ্য পদক্ষেপের বিরুদ্ধে লিখছেন,প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছেন। সকল প্রশংসা আল্লাহর। আসলেই শয়তানের চক্রান্ত দুর্বল,আর আল্লাহই প্রকৃত কৌশলী।

এবার আমি একটু অন্যদিকে দৃষ্টি ফেরাই।

একটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশে,একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি এত বড় ঘটনা ঘটানোর যে সাহসটা পেল,এটার পিছনে কি আমরাই দায়ী না?

আমাদের early generation,অর্থ্যাৎ আমাদের বাবা-মা,ছোটবেলা থেকে আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেন,"তোমাদের অনেক বড় হতে হবে,এদের এদের মত!" আর উদাহরণ হিসেবে উঠে আসে কিছু প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সেক্যুলারদের নাম!

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামায,যে মুসলিম আদায় করে না,সহীহ ধারণা মতে সে মুসলিমই না! আর এক ওয়াক্ত ফরয নামায ইচ্ছাকৃতভাবে না পড়া হল কুফরী। কিন্ত আমাদের আশেপাশের "মুসলিম"-দের দেখলে মনে হয়,এই পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয তো দূরের কথা,সুন্নাতও না,নফল! মন চাইলে পড়ব,মন না চাইলে পড়ব না।

ইসলামে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন কী মসজিদ নামায পড়ে বের হওয়ার সময়েও যেন পুরুষ ও মহিলা সাহাবীরা একত্রে না মিলেমিশে চলেন,তার আদেশ জারি করেছিলেন। আর বর্তমানের ইয়াং জেনারেশন মুসলিমরা তো মনে হয় ফ্রি মিক্সিংকে পাপ তো দূরের কথা,মাকরূহও বলে মনে করেন না!

আর ভাইয়েদের কাছে তো নিয়মিত শেভ না করলে আর গোড়ালীর নিচে প্যান্ট না ঝুলালে তো নিজেদের স্মার্টই মনে হয় না! মডারেট আপুদের কথা আর কী বলব? যাঁরা হিজাব করেন না তাঁদের কথা না-ই বলি,যাঁরা হিজাব করেন,তাঁদের মধ্যে এমন একটা দলের উদ্ভব ঘটেছে যে কোন একটা উৎসব বা ফ্যামিলি ফাংশন সামনে আসুক,আর কী চাই,হিজাবের থোড়াই কেয়ার করে মেকআপ দিয়ে সেই ফাংশনে "সক্রিয়ভাবে" অংশগ্রহণ করেন,আর ফেসবুকে সেই ছবি আপলোড দেন! আল্লাহু আকবার!!!

এই লিস্ট চলতেই থাকবে,চলতেই থাকবে,শেষ কখন হবে তা একমাত্র আল্লাহই বলতে পারবেন।

যাই হোক,এইভাবে নিজেদের স্বকীয়তাকে বিসর্জন দিয়ে,নিজেদের "আধুনিক" হিসেবে প্রমাণ করার প্রাণান্তকর চেষ্টায় আমরা লিপ্ত থাকব,আর ইসলামের শত্রুরা বসে বসে আঙ্গুল চুষবে???

উমার রাযিআল্লাহু আনহু ঠিক এই আশংকাই ব্যক্ত করেছিলেন এভাবে,

"আমি সেই দিনের ভয় করি,যেদিন কাফিররা তাদের মিথ্যা নিয়ে গর্বিত হবে,আর মুসলিমরা তাদের বিশ্বাসের জন্য লজ্জিত হবে।"

ভাই/আপু,সত্যি সত্যি চান,ইসলাম আবার দুনিয়া জুড়ে প্রতিষ্ঠিত হোক? নির্বিঘ্নে প্রতিটি মুসলিম তাদের নিজ নিজ ritual বাধাহীনভাবে পালন করুক?

আসুন নিজেদের পাল্টাই। ইসলামকে বুঝি। সঠিকভাবে ইসলাম পালন করি,১০ ভাগ ইসলাম নয়,২০ ভাগ নয়,৫০ ভাগ নয়,১০০ ভাগ ইসলাম!

দেখবেন,আল্লাহই তাঁর অসীম দয়া আর করুণায় আমাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে পরিবর্তন করে দেবেন। তিনিই সর্বশক্তিমান,মহা প্রতাপশালী,প্রজ্ঞাময়। আমরা তাঁর কাছ থেকেই এসেছি,আর তাঁর কাছেই আমাদের প্রত্যার্পন।

যেমনটা বলেছেন শাইখ আবদুর রাহীম ম্যাককার্থি,

"আমরা শাইখ আল-আলবানীর কাছে ইমাম হাসান আল-বান্নার বলা একটি কথা শিখেছিলাম --

আপনাদের অন্তরের জগতে ইসলামের শাসনকে প্রতিষ্ঠা করুন, তাহলে আল্লাহ সারা পৃথিবীতে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠিত করে দেবেন।"

Thursday, September 19, 2013

আমি সালাফী বলছি

আমার ইসলামপূর্ব জীবনে,আমি বেশ "পপুলার" ছিলাম। যে কোন মানুষের সাথে,প্রায় সহজভাবেই মিশে যেতে পারতাম।

এর অন্যতম একটা কারণ ছিল,সবার প্রায় সব কথার সাথে "হ্যাঁ-হ্যাঁ" করার একটা বিশেষ টেকনিক!

দেখা গেল,হয়ত কারো কোন কথার সাথে আমি ভিতরে ভিতরে একমত না,কিন্ত "থাক,কী হবে বলে,শুধুশুধু একটা তর্ক শুরু হবে (আর আমার 'পপুলারিটি' নষ্ট হবে)",এই রকম একটা চিন্তা মাথায় কাজ করত।

ফলাফলঃ আমার পপুলারিটি বেশ ভালভাবেই বজায় থাকত!

আলহামদুলিল্লাহ,জীবনের একটা পর্যায়ে এসে আল্লাহ ইসলাম বোঝার তাওফীক দিলেন। আর কোন বিদআতীমার্কা ইসলাম না,একদম সলফে সালেহীনের ইসলামের সংস্পর্শে চলে এলাম।

আর এই ইসলাম বুঝে অবাক হয়ে গেলাম!

সলফে সালেহীনরা,যেটায় একমত হতেন না,সেটাতে চুপ করে তো থাকতেনই না,বরং যারা বিদআতী,বরং "জাজমেন্টাল" হয়ে তাদের মুখের উপর চ্যাটাং-চ্যাটাং করে বলেই দিতেন যে,তাদের পথ ভুল!

বর্তমানে,একটা নতুন ধারার ইসলাম প্রচার চলছে,যার মূলমন্ত্র হল,"আসলে সবাই ঠিক। আসুন জাজমেন্টাল না হয়ে নিজেদের মধ্যেকার 'সামান্য' কিছু পার্থক্য বাদ দিয়ে 'এক উম্মাহ' হয়ে যাই।"

মানে,যারা মিলাদ পড়ে তারা ঠিক,সব পীরপূজারীও ঠিক,সব মাজারপূজারীও ঠিক,যারা "ফানাফুল্লাহ"-য় বিশ্বাস করে তারাও ঠিক!

আল্লাহু আকবার!!!

সরি ভাই,আমি এই ইসলাম মানতে পারব না। আমার কাছে বিদআত বিদআতই,মাজারপূজা মাজারপূজাই,পীরপূজা পীরপূজাই! আর যে সব বই এইগুলা প্রমোট করে,সেইগুলা বস্তাপঁচা আবর্জনা ছাড়া আর কিছুই না!

আমি জানি,এই পোস্টের জন্য হয়ত অনেকের কাছে আমার "পপুলারিটি" কমে যাবে,কিন্ত সরি,"পপুলারিটির" কোন ভ্যালু আমার কাছে এখন আর নাই আলহামদুলিল্লাহ!

কারণ আমি সলফে সালেহীনদের একজন অনুসারী।

আমি একজন সালাফী।

“তুমি অবশ্যই সলফে সালেহীনের বর্ণনা ও কথা-বার্তাকে দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করো যদিও মানুষ তোমাকে প্রত্যাখ্যান করে। অন্যান্য মানুষের রায় বা অভিমত তা যতই সুন্দর ও সাজানো গুছানো হোক না কেন, তথাপি তুমি তা গ্রহণ ও অনুসরণ থেকে পূর্ণ সাবধান ও দূরে থেকো। তাহলে এক পর্যায়ে এ বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়ে যাবে যে, তুমি যে পথের উপর রয়েছ সেটাই হলো সরল সঠিক পথ।” - ইমাম আল আওযা‘য়ী।

Friday, September 13, 2013

নির্ভয়ার ধর্ষকদের ফাঁসির আদেশ,অতঃপর...............

"সিরিয়া যদি রাসায়নিক অস্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হাতে সত্যি সত্যিই তুলে দেয়,তাহলে সিরিয়ায় আর হামলা চালানোর কোন প্রয়োজন হবে না।"

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যে সাক্ষাৎকারে এ মত ব্যক্ত করেছিলেন,ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের পর্দায় সেই সাক্ষাৎকার দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল।

তো সেই সাক্ষাৎকারটি নিচ্ছিলেন একজন নারী সাংবাদিক।

সাক্ষাৎকারের সময়,as always,প্রেসিডেন্ট ছিলেন স্যুট-টাই পরিহিত। সাংবাদিক সাহেবাও পরেছিলেন স্যুট।

কিন্ত যেটা ছিল সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয়,সেটা হল,

প্রেসিডেন্ট যদিও ফুলপ্যান্ট পরিহিত ছিলেন,কিন্ত সাংবাদিকের পরনে ছিল হাফপ্যান্ট!

পাশ্চাত্য সভ্যতাকে "রোল মডেল" হিসেবে যাঁরা আমাদের সামনে উপস্থাপন করেন,তাঁরাও নিশ্চয় খেয়াল করেছেন,সেখানকার যে কোন উৎসবে,পুরুষেরা যতটা পারেন নিজেদের আবৃত করেন,আর নারীরা যতটা পারেন,শরীরের নানা অংশ দেখাতে সচেষ্ট থাকেন।

আচ্ছা,কেন তখন "সমঅধিকারের" কথা আসে না? কেন এই প্রশ্ন উত্থাপিত হয় না,যেখানে পুরুষেরা পা থেকে গলা পর্যন্ত আবৃত,সেখানে কেন নারীদের যতটা সম্ভব,উন্মুক্ত হয়ে চলাফেরা করতে হবে?

ও না না,তখন এটা আবার "সংস্কৃতির" অংশ হয়ে যায়। এক এক দেশে তো আবার এক এক সংস্কৃতি!

হুমায়ূন আহমেদের "বৃষ্টিবিলাস" বইয়ে পড়েছিলাম,নায়িকা (নাম মনে নাই)-র মা নায়িকাকে বলছেন,"মেয়েদের সেজেগুজে বিয়েবাড়িতে যাওয়া খুব ভাল। এতে অনেকের চোখে পড়ে,ভাল সম্বন্ধ আসে। আমি যতবার বিয়েবাড়িতে গিয়েছি,ততবার আমার জন্য সম্বন্ধ এসেছে।"

আবার হুমায়ূন আহমেদের এই "ডাইহার্ড" মহিলা ফ্যানরাই বলেন,"আমি তাকেই বিয়ে করব,যে 'আমার রূপ'-কে নয়,'আমাকে (অর্থ্যাৎ তাঁর মেধা)' মূল্যায়ন করবে!"

কিন্ত সত্যি সেটাই,যেটা হুমায়ূন আহমেদ তাঁর বৃষ্টিবিলাস বইয়ে নায়িকার নাম দিয়ে বলেছেন,অথচ তাঁদের মাথায় এটা ঢোকে না।

আমি বুঝি না,মেয়েরা এত কিছু বোঝেন,এই বাংলা কথাটা কেন বোঝেন না (বা বুঝলেও মানেন না) যে,ছোটবেলা থেকে চারপাশ থেকে তাঁদের মাথায় এইটা ঢোকানোর প্রাণান্তকর চেষ্টা চালানো হচ্ছে যে,"তোমার আসল সম্পদ তোমার রুপ,তোমার সৌন্দর্য। এটা যত expose করবে,তত তোমার দাম বাড়বে। তোমার কাজ,তোমার মেধা,তোমার চরিত্রের কানাকড়ি দামও নাই। তাই নিজের সৌন্দর্য,নিজের শরীরকে কাজে লাগাও।"

অন্যদিকে আল্লাহ হিজাবের সিস্টেমটা দিয়ে এই কথাটাই বোঝাতে চাইলেন,"তোমরা যদি নিজেদের এই শারীরিক সৌন্দর্যটাকে লুকিয়ে রাখ,তাহলেই শুধুমাত্র তোমাদের মেধা,তোমাদের গুণ,তোমাদের চরিত্র,অর্থ্যাৎ,'তোমাকে' সবাই মূল্যায়ন করবে। নইলে,তোমার চারপাশ তোমার শরীরটাকেই চাইবে,'তোমাকে' না।"

কিন্ত কীসের কী?

আজ নির্ভয়ার ধর্ষকদের ফাঁসির আদেশ হয়েছে (একজন অবশ্য 'নাবালক' হবার কারণে সবচেয়ে active থেকেও লঘু শাস্তি পেয়ে পার পেয়ে গেছেন,যাই হোক)। তো প্রথম আলো ডটকমে এই খবরটার সাথে আরেকটা খবর অ্যাড করা আছে।

দিল্লির নারীদের এই রায়ের পর জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল,তাঁরা কি এখন নিরাপদ বোধ করছেন?

তাঁরা সত্যি উত্তরই দিয়েছেন,না,তাঁরা নিরাপদ বোধ করছেন না।

তবে,একটা উত্তর পড়ে পুরো টাসকি খেয়ে গেলাম!

"যে দেশে নারীর ছোট পোশাক পরাকে সব সমস্যার মূল হিসেবে মনে করা হয়, সে দেশে নারী নিরাপদ বোধ করবে কীভাবে?"

অর্থ্যাৎ,

"কুমীর ভরা নদীতে কীভাবে সাঁতার কাটা হবে,সেটা যদি কুমীরে টেনে নিয়ে যাওয়ার মূল কারণ হয়,তাহলে সাঁতারু নিরাপদ বোধ করবেন কীভাবে?"

একটি অসাধারণ হাদীস ও আমি

আবু হুরাইরাহ রাযিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

"আল্লাহ জান্নাত ও জাহান্নাম তৈরি করে জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম)-কে বললেন,'যাও,জান্নাত এবং এর অধিবাসীদের জন্য আমি কী কী তৈরি করলাম,গিয়ে দেখে এস।'"

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

"আদেশমত জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) জান্নাত এবং এর অধিবাসীদের জন্য আল্লাহ যা যা তৈরি করেছেন,তা দেখে আসলেন। অতঃপর,তিনি আল্লাহকে বললেন,'আপনার মহিমার কসম। এমন কেউ নেই,যে এই জান্নাতের কথা শুনে এর ভিতরে প্রবেশ করার জন্য আগ্রহবোধ করবে না।'

এরপর আল্লাহ জান্নাতকে দুঃখ-কষ্ট দ্বারা আবৃত করলেন এবং জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম)-কে বললেন,'যাও,জান্নাত এবং এর অধিবাসীদের জন্য আমি কী কী তৈরি করলাম,এবার গিয়ে দেখে এস।'

জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) ফিরে এসে বললেন,'আপনার মহিমার কসম। আমার সন্দেহ হচ্ছে,কেউ এই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে কী না!'

এবার আল্লাহ জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম)-কে বললেন,'যাও,জাহান্নাম এবং এর অধিবাসীদের জন্য আমি কী কী তৈরি করলাম,গিয়ে দেখে এস।'

আদেশমত জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) জাহান্নাম দেখতে গেলেন,এবং এর নানা স্তর দেখে আসলেন।

জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) ফিরে এসে বললেন,'আপনার মহিমার কসম। এমন কেউ নেই,যে এই জাহান্নামের কথা শুনে এর ভিতরে প্রবেশ করার জন্য আগ্রহবোধ করবে।'

অতঃপর আল্লাহ জাহান্নামকে ভোগ-লালসা দ্বারা আবৃত করলেন এবং জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম)-কে বললেন,'যাও,এবার গিয়ে দেখে এস,জাহান্নাম এবং এর অধিবাসীদের জন্য আমি কী কী তৈরি করলাম।'

জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) ফিরে এসে বললেন,'আপনার মহিমার কসম। আমার সন্দেহ হচ্ছে,কেউ এই জাহান্নামে ঢোকার হাত থেকে বাঁচতে পারবে কী না!'"

[তিরমিযী,আবু দাউদ,নাসাঈ]

হাদীসটা প্রথম শুনেই বুকে একটা ধাক্কা লেগেছিল। এখনো যখনই হাদীসটা শুনি,বুকে চরম একটা ধাক্কা এসে লাগে।

আর চারপাশের বাঁধভাঙা আনন্দ-উল্লাসের কবলে আবার ভেসে যাওয়ার আগমূহূর্তে,এই হাদীসটা একদম টনিকের মত কাজ করে!

Friday, September 6, 2013

শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী রাহিমাহুল্লাহর তেরশ' বছর আগের একজন "দরবারী আলেম"

আসুন শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী রাহিমাহুল্লাহর তেরশ' বছর আগের একজন "দরবারী আলেম" সম্পর্কে জেনে নিই।

ইবন সা'দ রাহিমাহুল্লাহ বর্ণনা করেন,একদল মুসলিম আল-হাজ্জাজের (সে সময়ের স্বৈরশাসক) বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার ব্যাপারে ফতোয়া জানার জন্য হাসান আল-বাসরী রাহিমাহুল্লাহর কাছে আসেন। তারা বলেন,"হে আবু সাঈদ (হাসান আল-বাসরীর ডাকনাম),একজন শাসক অন্যায়ভাবে রক্ত প্রবাহিত করে,অন্যায়ভাবে সম্পদ ভক্ষণ করে,সাথে আরো অনেক কিছু করে। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার ব্যাপারে আপনি কী মনে করেন?"

হাসান রাহিমাহুল্লাহ উত্তর দেন,

"আমি মনে করি তা উচিত হবে না। কারণ,

☛ যদি (এই শাসকের কর্মকাণ্ড) আল্লাহর পক্ষ থেকে (আমাদের কর্মকাণ্ডের ফলস্বরূপ) শাস্তি হয়ে থাকে,তাহলে তোমাদের তরবারি দিয়ে তোমরা তাকে (রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে) সরাতে পারবে না।

☛ আর যদি তা আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা হয়ে থাকে,তাহলে আল্লাহর বিচারের জন্য আমাদের ধৈর্য ধরা উচিত। কারণ,তিনিই সর্বোত্তম বিচারক।"

কিন্ত সেই লোকেরা তাঁর সাথে একমত না হয়ে চলে গেল। পরবর্তীতে,তারা আল-হাজ্জাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল,যার ফলে আল-হাজ্জাজ তাদের প্রত্যেককে হত্যা করেন।

হাসান রাহিমাহুল্লাহ এ ঘটনার পর বলেন,

"যখন কোন জনপদ অত্যাচারী শাসকের দ্বারা পরীক্ষিত হয়,তখন যদি তারা ধৈর্য ধরে,শীঘ্রই আল্লাহ কোন বা কোনভাবে তাদের এই পরীক্ষা থেকে মুক্তির পথ করে দেন। কিন্ত আফসোস,তারা তরবারি হাতে তুলে নিতে এতই মরিয়া হয়ে ওঠে যে,আল্লাহ তাদেরকে তাদের তরবারির উপরেই ছেড়ে দেন। আল্লাহর শপথ,একটা দিনের জন্যও তারা (পূর্বের চেয়ে) কোন ভাল কিছু নিয়ে আসতে পারে না।"

[তাবাক্বাত আল-কুবরা,৭/১৬৩-১৬৫]

মূল পোস্টটি দেখুন এখানে

Courtesy : ফেসবুক পেজ IRF (Islamic Research Foundation).


Friday, August 30, 2013

আলেম "জানেন না"!!!

প্রশ্নঃ সূরা নাহলের ৪৩ নম্বর আয়াতে বলা আছে,"তোমরা যদি না জানো তাহলে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস করে জেনে নাও।"

কিন্ত বর্তমানে কিছু যুবকের কাছে যখন এটা বলা হয়,তখন তারা বলে,"শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী,শায়খ আব্দুল আযীয বিন বায,তাঁরা ফিকহ এবং হাদীস বিষয়ে অভিজ্ঞ। কিন্ত জিহাদের বিষয়ে তাঁদের কোন অভিজ্ঞতা নেই।"

তাহলে এ ব্যাপারে কে অভিজ্ঞ? কার কাছ থেকে আমরা সঠিক দিকনির্দেশনা নিতে পারি?

শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানীঃ

হুম,কথাটা কিন্ত এক অর্থে ঠিক! শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী,শায়খ আব্দুল আযীয বিন বায,তাঁরা কেউই এটাও জানেন না যে একটা অস্র কীভাবে বহন করতে হয়।

কিন্ত তার মানে কি এই,তাঁরা জিহাদ সম্পর্কে অজ্ঞ?

প্রশ্নকর্তাঃ অবশ্যই না।

শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানীঃ

তাহলে এই বক্তব্যের ভিত্তি কী???

এটা ঐ যুবকদের প্রতি শয়তানের প্রলোভন ব্যতীত আর কিছুই না। সে তাদের কাছে তাদের বক্তব্য,যেটা সম্পূর্ণরুপে কুরআন এবং সুন্নাহ বিরোধী,তা সঠিক বলে তুলে ধরে তাদের পথভ্রষ্ট করার চেষ্টা করছে।

প্রশ্নকর্তাঃ আরেকটা প্রশ্ন। যখন তাদের কাছে এটা তুলে ধরা হয়,তারা বলে,"শায়খ আলবানী এবং শায়খ বিন বায,তাঁদের কারোরই "বাস্তব" সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। আমরা বাস্তবে (জিহাদের ময়দানে) অবস্থান করছি,আর শায়খ আলবানী (তাঁর ঘরে বসে) বই লিখছেন!"

শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানীঃ

ও তাই? আচ্ছা ঠিক আছে,তারা আমাকে একটা "বাস্তব" কাহিনী তুলে ধরে সেটার "সঠিক" সিদ্ধান্তটা আমার কাছে তুলে ধরুক,আমি তাদের কাছ থেকে শিখে নিই!

জেনে রাখুন,বাস্তবতা নিজের চোখে দেখার মানে এই নয় যে এই বাস্তবতা আপনাকে ঐ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে পারে। কোন কিছুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র দুটো জিনিস থেকেই নেওয়া যায়,আল্লাহর কিতাব এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ!

কী গোঁড়ামি,সুবহানআল্লাহ!!!

পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে আলেমদের কাছে যখন প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়,তাদের মধ্যে প্রচুর প্রশ্ন থাকে যা "বাস্তবে ঘটে গেছে"! এখন প্রত্যেক আলেম কি ঐ ঘটনাগুলোর প্রত্যেকটা ঘটার সময় সেখানে উপস্থিত থেকে "বাস্তবতা অনুভব করেছিলেন",না কি প্রশ্নকর্তা "বাস্তবে যা ঘটেছে",সেটাই তার প্রশ্নে উত্থাপন করে থাকেন?

যেহেতু প্রশ্নকর্তা,ঘটনা ঘটার সময়,"বাস্তবে" উপস্থিত ছিলেন,তাহলে তিনি নিজে নিজে কেন সিদ্ধান্ত নেন না,কেন ঐ সিদ্ধান্ত নিতে আলেমের কাছে আসেন?

কারণ একটাই। প্রশ্নকর্তা জানেন যে,আলেম "প্রত্যক্ষভাবে" ঐ ঘটনা ঘটার সময় উপস্থিত না থাকলেও,এ ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্তটা কি হবে,তা জানেন,তা কেউ পছন্দ করুক,বা না করুক।

এখন,সেই যুবকেরা,তারা ভাবছে যে "যেহেতু" তারা বাস্তবতাকে নিজে প্রত্যক্ষ করছে,"তাই" তাদের সিদ্ধান্তই সঠিক,যতই তারা কুরআন এবং হাদীস সম্পর্কে অজ্ঞ হোক না কেন! কী চমৎকার!

তারা এই বিষয়ে সম্বন্ধে "সম্যক অবগত",আল্লাহ তাদের এই জ্ঞানকে বরকত দান করুন,কিন্ত তার মানে এই নয় যে,এই বাস্তবতাই ঐ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে পারে। যেমন আল্লাহ কুরআনে বলেছেন,ঠিক তেমনিভাবে কোন ব্যাপারে সিদ্ধান্ত "একমাত্র" আলেমরাই দিতে পারেন,কুরআন হাদীস ফিকহ বিষয়ে অজ্ঞ কেউ নয়।

এটা খুবই স্বাভাবিক যে,আলেমদের যা যা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে,তার "প্রত্যেকটা" সম্পর্কে তাঁদের বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকবে না। যার কারণে,কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য "বাস্তব অভিজ্ঞতা" কোন শর্ত নয়।

আসলে সত্যি বলতে,তাদের নিজেদের উক্তি থেকেই স্পষ্ট যে তারা ভ্রান্তির মধ্যে ডুবে আছে। অর্থ্যাৎ,যদিও তারা "বাস্তবতা" সম্পর্কে সম্যক অবগত,তারপরও তাদের জ্ঞানের বিভ্রান্তির কারণে তারা ভ্রান্তিতে নিপতিত হয়েছে।

হে আমার ভাই,অবশ্যই প্রত্যক্ষভাবে কোন ব্যক্তি যে সমস্যার সম্মুখীন হন,ঐ সমস্যা সম্পর্কে তিনি,যে আলেমের কাছে ঐ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চাচ্ছেন,তাঁর (আলেম) থেকে বেশি অবগত। কিন্ত কখনোই আলেমের কাছে জিজ্ঞাসা করা ব্যতীত নিজে নিজে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারেন না,এটাই বাস্তব। ঠিক এভাবেই আমরা কুরআনের সূরা নাহলের ৪৩ নম্বর আয়াতটা দিয়ে ঐ যুবকদের উত্তর দিয়ে থাকি।

বর্তমানে বেশ কিছু "জিহাদী দল" প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তারা কী চায়? তারা আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রাম করতে চায়। ঠিক আছে। কিন্ত আলেমগণ এবং সত্যানুসন্ধানী ব্যক্তিবর্গ জিহাদ সম্পর্কে জানেন না (আর জানলেও বলেন না),এটা কি সম্ভব???

সুবহানআল্লাহ... আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করি।

মূল পোস্টঃ

Doubt: Scholars don’t know Current events – Answered by Shaykh Al Albani (rahimahullaah)

কৃতজ্ঞতাঃ 

বাংলাদেশী আতাহারী

Tuesday, August 27, 2013

ঈমানের স্বাদ

আলহামদুলিল্লাহ,পূর্বের জীবনে প্র্যাকটিসিং মুসলিম না হলেও,বই পড়ার অভ্যাসের কারণে ইসলাম বিষয়ে একেবারেই ক-অক্ষর গোমাংস কখনোই ছিলাম না,কিছু জেনারেল ইসলামিক ইতিহাসের সাথে পরিচয় ভালমতনই ছিল।

আজকে একটা ভিডিওতে ইউসুফ আলাইহিস সালামের সেই অসাধারণ কাহিনীটা আবার দেখলাম।

আমি জানি,প্রাকৃতিকভাবেই আমাদের বোনদের এটা কল্পনার বাইরে,কিন্ত আমরা ছেলেরা এটা ভালভাবেই বুঝি,রুদ্ধদার কক্ষে একজন নারী নিজে থেকে যদি আদিম খেলায় মেতে ওঠার আহবান জানায়,ছেলেদের পক্ষে সেটা দূরে ঠেলে দেওয়া কতটা দুঃসাধ্য।

কিন্ত ইউসুফ আলাইহিস সালাম সেটাই করে দেখিয়েছিলেন।

প্র্যাকটিসিং মুসলিম হওয়ার পর,একটা অবাক করা জিনিস আমার সাথেও ঘটছে।

অনেকের কাছেই মনে হতে পারে,নিজের ঢোল নিজে পিটাচ্ছি।

কিন্ত আসলেই যখন রাস্তায় হাঁটতে থাকা মেয়েদের দিকে চোখ পড়লেও নিজেই সরিয়ে নেই,যেখানে ফ্রি মিক্সিংয়ের হাটবাজার,নিতান্ত প্রয়োজন না হলে তখন সচেতনভাবেই সেখান থেকে নিজেকে সরিয়ে নেই,তখন একটা জিনিস অনুভব করি।

আর এখন বুঝি,আমার মত নিতান্ত অধম বান্দার মধ্যেও যদি সামান্য পরিমাণে এই জিনিস থাকে,তাহলে ইউসুফ আলাইহিস সালামের মত পবিত্র নবীর পক্ষে সেটা কী পরিমাণ ধারণ করা সম্ভব!

এটাকে আসলে ব্যাখ্যা করা যায় না। এ জন্য কেউ যদি ব্যাখ্যা দাবি করেন,এটা আমি দিতেও পারব না।
এটা completely অনুভব করার জিনিস।

যে অনুভবের জন্য ইউসুফ আলাইহিস সালাম অপূর্ব সুন্দরী এক নারীকে উপভোগ করার আবেদন ফিরিয়ে দিতে পারেন।

যে অনুভবের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলিষ্ঠ কণ্ঠে বলতে পারেন,তাঁর এক হাতে চাঁদ আর অন্য হাতে সূর্য এনে দিলেও আল্লাহর দ্বীন প্রচারে পিছপা হবেন না।

যে অনুভবের জন্য বিলাল রাযিআল্লাহু আনহু তপ্ত বালুর নিচে শুয়ে সূর্যের দিকে তাকিয়ে প্রবল তৃষ্ণার্ত অবস্থাতেও "আহাদ,আহাদ" (আল্লাহ এক,আল্লাহ এক) বলতে পারেন।

বিশ্বাস করেন,এটা একবার পেলে,এই জীবনের কোন কিছুতেই কিছু এসে যায় না।

এর নাম "ঈমানের স্বাদ"।

Friday, August 23, 2013

HOW FUNNY

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে যুল খুওয়াইসিরা বেয়াদবি করে চলে যাচ্ছিল,তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন,যুল খুওয়াইসিরার অনুগামীরা ইসলামের মধ্যে প্রবেশ করে আবার বেরিয়ে যাবে। আর তিনি ঘোষণা করেছিলেন,তিনি যদি তাদেরকে পান,সামূদ জাতির মত এই সম্প্রদায়কে হত্যা করে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন। পরবর্তীতে এই নির্দেশও তিনি দিয়ে যান,যেখানেই তাদেরকে পাওয়া যায়,তাদেরকে হত্যা করতে,কারণ তাদের হত্যা করলে পুরষ্কার রয়েছে।

আমরা সবাই জানি,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে পান নি। পেয়েছিলেন আলী রাযিআল্লাহু আনহু এবং অন্যান্য সাহাবীরা।

এই খারেজিরা অনেক সাহাবীসহ বহু মুসলিমকে বিনা বিচারে "কাফির" আখ্যায়িত করে হত্যা করেছে।

সাহাবীরাও কি তাই করেছিলেন?

না,তা তাঁরা করেন নি। বরং যুদ্ধের ময়দান ব্যতীত কোন খারেজিকে হত্যা করা তো দূরের কথা,তাঁরা তাদের সাথে মিশেছেন,সালাম বিনিময় করেছেন,এমন কী তাদের ইমামতিতে নামায পর্যন্ত পরেছেন।

এর মানে কী,সাহাবীরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা মানেন নি,খারেজিদের সাথে আপোষ করেছেন (নাউযুবিল্লাহ মিন জালিক)?

মোটেই তা না। কারণ স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীদের নির্ভরযোগ্যতার সংজ্ঞা দিয়ে গেছেন। আর তাঁরা যেভাবে ইসলাম বুঝেছেন,সেটাই প্রকৃত ইসলাম।

তাই সালাফী আলেমগণ সব সময় চেষ্টা করেন,কোন একটা ঘটনার প্রেক্ষিতে সালাফগণ কী ব্যাখ্যা দিয়ে গেছেন,বা কী কাজ করেছেন,সেটা অনুযায়ী similar কোন পরিস্থিতিকে ব্যাখ্যা করতে,ঐ অনুযায়ী ফতোয়া দিতে।

যাদের তাফসীরসহ পুরো কুরআন মুখস্থ,লক্ষ লক্ষ হাদীস সনদ সহ মুখস্ত,জিজ্ঞাসা করলেই যাঁরা মনে দিতে পারেন এই হাদীস সহীহ,ঐ হাদীস হাসান,ঐ হাদীস যঈফ,ঐ হাদীস জাল,তাঁরাও নিজেরা কোন ফতোয়া দেওয়ার আগে দেখেছেন সালাফদের ব্যাখ্যা কী,তারপরই ফতোয়া দিয়েছেন!

আর এখন,একদল মুসলিম,তাঁরা এই সকল সম্মানিত শায়খদের judge করেন। তাঁরা বলেন,"এই এই" বিষয়ে সালাফী আলেমগণের কথা মানা যেতে পারে,আর "ঐ ঐ' বিষয়ে মানা যাবে না! আর একদল তো মাশাআল্লাহ,তাঁদের চোখে এই সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ "দরবারী আলেম" ছাড়া কিছুই নন।

অথচ,এই "বিজ্ঞ" ব্যক্তিরা মাত্র একটা হাদীসের authenticity judge করতে সক্ষম নন!

তায়াম্মুম নিয়ে একটা প্রসিদ্ধ হাদীস আমরা প্রায় সবাই জানি,যেখানে জাবের রাযিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছিলেন যে এক লোক মাথায় আঘাত পাওয়ার পর যার স্বপ্নদোষ হয়ে যায়,কিন্ত তাঁর সঙ্গীগণ তাঁকে গোসল করতে বলেন। যার ফলে তিনি মারা যান।

এ খবর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে পৌঁছানোর পর তিনি কী বলেছিলেন,মনে আছে?

"ওরা ওকে মেরে ফেলল,আল্লাহ ওদেরকে ধ্বংস করুন! ওরা যদি না জানত,তাহলে জেনে কেন নেয় নি? অজ্ঞতার ওষুধ তো প্রশ্নই।"

কুরআনে আল্লাহও বলে দিয়েছেন,যদি আমরা না জানি,তাহলে যাঁরা জানেন,তাঁদের কাছ থেকে যেন জেনে নিই।

এভাবে প্রচুরভাবে আলেমদের আল্লাহ ও তাঁর রাসূল আলেমদের সম্মানিত করে গেছেন।

আর যখন এই "বিজ্ঞ" ব্যক্তিবর্গ,যাঁরা একটি হাদীসের সনদ যাচাই তো দূরের কথা,বই না দেখে বা নেট না ঘেঁটে হাদীসটা কোন কোন বইয়ে আছে,এটুকুই বলতে পারেন না,আবার সম্মানিত আলেমদের judge করতে আসেন,তখন একটা কথাই বলতে ইচ্ছা করে।

HOW FUNNY!!!




Thursday, August 22, 2013

চলো পাল্টাই - শায়খ আসিম আল হাকিম

বর্তমানে পৃথিবীর যে প্রান্তেই তাকাই না কেন,দেখি মুসলিমদের উপর চলা একের পর এক নির্যাতনের দৃশ্য। দেখে মনে হয়,এটা যেন সকলের দৈনন্দিন কাজের অংশ!

দুনিয়ার মানুষ মিয়ানমারের মুসলিমদের কথা এখন ভুলে গেছে। কেউই জানে না,ইরাকের সুন্নি মুসলিমদের এখন কী অবস্থা।

যখন সিরিয়ায় "আরব বসন্তের" ছোঁয়া এসে লাগে,তখন ফিলিস্তিন সংকট দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যায়। আবার যখন মিসরে মিলিটারি ক্যু আর সেনা অভিযান সংঘটিত হয়,তখন আমরা সিরিয়ার কথা ভুলে যাই।

আর আজকের ব্রেকিং নিউজ,"সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্রের হামলা,হাজার লোকের মৃত্যু।"

আজ বিকেলে একজন মিসরীয় ভাই আমাকে প্রশ্ন করলেন,"কেন আল্লাহ এ সব হতে দিচ্ছেন?"

প্রথমত,আল্লাহর প্রতি এমন অভিযোগ কুফরীর দিকে ঠেলে দিতে পারে! সুতরাং,বেঁফাস কোন কথা বলা থেকে সাবধান হোন।

যাই হোক,কুরআনে আল্লাহ কিন্ত বলেই দিয়েছেন,"আল্লাহ চাইলে নিজেই তাদের সাথে বোঝাপড়া করতেন৷ কিন্তু (তিনি এ পন্থা গ্রহণ করেছেন এ জন্য) যাতে তোমাদেরকে পরস্পরের দ্বারা পরীক্ষা করেন৷"

যা ঘটছে,তার সবকিছুই আমাদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ। আল্লাহ খুব সহজেই এ সবকিছু শেষ করে দিতে পারেন। একটু নূহ আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ের উপর আসা বন্যার দিকে খেয়াল করুন। সাথে মনে করুন আদ জাতির উপর আসা ভয়ংকর প্রলয়ংকরী মরু ঝড় আর সামূদ জাতির উপর আকাশ থেকে নেমে আসা বজ্র আওয়াজের কথা। 

তিনিই আল্লাহ,যিনি সর্বশক্তিমান,মহা প্রতাপশালী,প্রজ্ঞাময়। আমরা তাঁর কাছ থেকেই এসেছি,আর তাঁর কাছেই আমাদের প্রত্যার্পন।

অতএব,আসুন নিজেদের পাল্টাই,যাতে তিনি তাঁর অসীম দয়া আর করুণায় আমাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে পরিবর্তন করে দেন।

তা না হলে,আমাদের চারপাশে যা কিছু ঘটছে,তা খুব সহজেই আমাদের সাথেও ঘটা শুরু হতে পারে।

- শায়খ আসিম আল-হাকিম।

Saturday, August 17, 2013

নিউটনের তৃতীয় সূত্র ও আমরা

ঘটনা-১:

রাজধানীতে পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা তাঁর স্ত্রী সহ খুন। নানা ঘটনাপ্রবাহে পুলিশের সন্দেহ, ১৬ বছর বয়সী একমাত্র মেয়ের উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণে মেয়ের প্রত্যক্ষ জোগসাজশে এই জোড়া খুন সংগঠিত হয়।

ঘটনা-২:

ঘুম থেকে উঠে ফজরের নামায পড়ছিলেন এক বাবা। হঠাৎ টের পেলেন, তাঁর দুই পাশে ছোট্ট দুইটি দেহ দাঁড়িয়ে গেছে, তাঁর সাথে নামায পড়ছে। নামায শেষ হলে,সেই ছোট্ট দুইটি মানুষের বাবার কাছে অভিযোগ,"বাপু,আমাদের কেন ডাকলে না নামায পড়ার জন্য?"

বাবা টের পেলেন,তাঁর অন্তর শান্তিতে ভরে যাচ্ছে।

একই দিনে ঘটে যাওয়া দুইটা ঘটনা।

প্রথম ঘটনাটা,বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় সকল খবরের অনুষ্ঠান আর ওয়েবসাইটের হেডলাইন।

না,দ্বিতীয় ঘটনাটা কোন খবরের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া না। আমাদের পরিচিত শিবলী মেহেদী ভাইয়ের জমজ মেয়েদের ঘটানো কাণ্ড এটা,তাঁর স্ট্যাটাস থেকেই পাওয়া।
 
আচ্ছা,এ রকম প্রব্যাবিলিটি কতটুকু যে,শিবলী ভাইয়ের মেয়েদুটো, অথবা যে কোন একটা মেয়ে,পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ে,ঐশীর মত এ রকম কোন ঘটনা ঘটাবে?

যুক্তিবিদ্যা অনুসারে,যে কোন কিছু ঘটার কিছু না কিছু প্রব্যাবিলিটি থাকেই। তাই এই ঘটনা ঘটার প্রব্যাবিলিটি আমি ধরলাম ০.০০০০..............০০০১%। অর্থ্যাৎ ,প্রায় শুন্য।

কারণ এই মেয়েদুটো ইসলাম জেনেবুঝে বড় হচ্ছে। তারা জানে,তাদের বাবা-মা তাদের কত বড় সম্পদ। আর তারা "শুধু" এটা জানেই না,তারা এটা "বোঝেও"।

সবচেয়ে বড় কথা,তারা এটা বুঝেই বড় হচ্ছে, তাদের প্রতিটা কর্মকাণ্ডের পাইপাই করে হিসাব,তাদের আল্লাহর কাছে দিতে হবে।

অথচ এটা তো প্রত্যেক মুসলিমের মূলমন্ত্র হওয়ার কথা ছিল। প্রত্যেকটা মুসলিম ছেলেমেয়ের এই ধ্যানধারণা নিয়ে বেড়ে ওঠার কথা ছিল।

কিন্ত কেন আমাদের মুসলিম তরুণ প্রজন্মের এই অবক্ষয়?

খুবই সিম্পল কারণ।

আমরা আমাদের বাচ্চাদের শিখাই,এই দুনিয়াই তোমাদের সব। এই দুনিয়ায় তোমাদের সব আদায় করতে হবে। Successful হতে হবে।

কিন্ত আমরা এটা ভুলে যাই,তাদের success-এর সংজ্ঞার সাথে আমাদের success-এর সংজ্ঞা নাও মিলতে পারে।

আর হবেই না কেন? তাদের সামনে নিয়ে আমরা হিন্দি মুভি দেখব,যার মূলমন্ত্র,"তোমাকে না পেলে আমি বাঁচব না প্রিয়া",মাঝখানে অ্যাড দেখব,"বন্ধু ছাড়া লাইফ ইম্পসিবল",আর এক্সপেক্ট করব,তারা আমাদের বন্ধু বলে মেনে নেবে? আমাদের success-এর সংজ্ঞাকে তাদের success-এর সংজ্ঞা করে নেবে?

অথচ আল্লাহ কতই না সুন্দর করে বলেছেন, যাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে আর জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে,সেই সফল।

আর নোমান আলী খানের কথায় বলি,মা-বাবার সাথে খারাপ সম্পর্ক থাকা জাহান্নামের রাস্তা ক্লিয়ার করার অন্যতম একটা উপায়।

আর এটা প্রায় সকল মনীষীই বলে গেছেন,তাঁরাই তত সাদা মনের মানুষ, যাঁদের নিজ নিজ মা-বাবার সাথে সম্পর্ক যত ভাল।

ড. বিলাল ফিলিপস যেমন বলেছেন,ইসলামের প্রতিটি আদেশ-নির্দেশ শুধুমাত্র একটি কারণেই,আর তা হল,মানবিক গুণাবলির চূড়ান্ত বিকাশ ঘটানো।

আর সেখানে,বর্তমানে এমন "মুসলিম" ছেলেমেয়ের দেখাও আজকাল পাওয়া যায়,সূরা ফাতিহা মুখস্ত বলতে পারা তো দূরের কথা,ঠিকমত শোনেও নি!

নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র হল,"প্রত্যেক ক্রিয়ার একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।"

ঠিক সেই রকম,আমরা যা করছি,ঠিক সেই রকমই ফল পাচ্ছি।


Friday, August 16, 2013

আবেগ বনাম সালাফদের নির্দেশ

মাশাআল্লাহ,আমরা ইসলাম বুঝি,ইসলাম মানার যথাসাধ্য চেষ্টা করি। আগে যাই ছিলাম না কেন,যাই করতাম না কেন,এখন আল্লাহর প্রতি আনুগত্যই আমাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।

কিন্ত আমরা এটা কি মানি,জ্ঞান ধীরে ধীরে উঠে যাবে?

ইসলাম মানার অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে,সালাফদের অনুসরণ করা,তাঁরা যেভাবে ইসলাম বুঝেছিলেন,তার চেয়ে বেশি বুঝতে চেষ্টা না করা,যতই আমাদের মন মানতে না চাক। কারণ প্রকৃত জ্ঞান ধীরে ধীরে দুনিয়া থেকে হারিয়ে যাবে।

এবার একজন সালাফের একটা কথা বলি।

"রাসূলুল্ললাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে নিষেধ করেছেন,যতক্ষণ পর্যন্ত তারা সলাত কায়েম করবে,যদিও তারা অত্যাচারী হয়।

তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ফলে যে বড় ধরণের বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতে পারে,সে পথ রুদ্ধ করার জন্যই এ নির্দেশ।

কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ যদি আরও বড় ধরণের অন্যায়ের আবির্ভাব ঘটায়,তাহলে তা হবে সমস্ত অন্যায়,অনাচার ও ফিতনার মূল।

বাস্তবিকই পূর্ববর্তীকালে এমনটি ঘটেছিল শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে যুদ্ধ করার কারণে। ফলে তারা যে পরিমাণ মন্দ ও বিশৃঙ্খল অবস্থায় ছিল,তার চেয়ে বহু বহু গুণে মন্দের মধ্যে পড়ে যায় শুধুমাত্র রাষ্ট্রের আনুগত্য হতে বেরিয়ে যাওয়ার কারণে।"

কথাগুলো ইবনুল কাইয়্যিম জাওযিয়া রাহিমাহুল্লার।

আজকের প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটা খবরের কিছু অংশ কপি-পেস্ট করি।

"মিসরের চলমান সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে এবং দেশটির ভবিষ্যৎ মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এ ধারণা সংশ্লিষ্ট দুই পক্ষেরই। আর তাদের এই ধারণা অনেকটাই ঠিক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

কোনো কোনো বিশ্লেষক মনে করছেন, কায়রোর রাজপথসহ মিসরজুড়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার জের টানতে হবে দেশটির পরবর্তী প্রজন্মকেও। আরব বসন্তের তোড়ে মাত্র ২০১১ সালেই প্রায় তিন দশকের স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের পতন হলে জনগণের মধ্যে আনন্দের ঢেউ বয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা সুদূর-অতীতের গল্প বলে মনে হচ্ছে। এখন দেশটিতে ‘শুধু জয়ীরাই সব কিছু পাবে’—এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিবিসি।"

এই খবরটার সাথে ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহর বলা কথাগুলো মিলিয়ে দেখুন তো,কে সঠিক?

আবেগের তোড়ে ভেসে যাওয়া,স্বল্পজ্ঞান সম্পন্ন কিছু আধুনিক "স্কলার",না ইসলামী জ্ঞানে সমৃদ্ধ সালাফগণ?

Monday, August 12, 2013

দিন ও রাত এবং আমাদের জীবন - ইয়াসমিন মোজাহেদ

আল্লাহ দিন ও রাত তৈরি করেছেন।

আপনার জীবন যদি বর্তমানে রাতের মত ঘুটঘুটে আঁধারে ঢাকা থাকে,ধৈর্য ধরুন। কারণ,রাত শেষ হলে প্রত্যেক ভোরেই সূর্য উঠে।

আর যদি বর্তমানে আপনার জীবন দিনের আলোর মত উজ্জ্বল হয়,তাহলে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হোন। আর খুশিতে উন্মত হওয়ার আগে ভেবে নিন,সূর্য কিন্ত প্রতি সন্ধ্যাতেই ডুবে যায়!

আর সর্বোপরি,দিন ও রাতের আবর্তনের মত এ জীবনের জন্য,প্রতি মুহূর্তে,তাঁর প্রশংসা করুন।

আর জেনে রাখুন,সব জিনিসের শেষ থাকলেও,তাঁর কিন্ত শেষ নেই! তিনি অনাদি,অনন্ত।

- ইয়াসমিন মোজাহেদ।

Courtesy : পড়ন্ত বিকেল

Thursday, August 8, 2013

ঈদ মোবারক

ঘটনা-১ :

সকাল সাড়ে নয়টায় ঘুম থেকে উঠলাম। ওঠার সাথে সাথে শুনতে পেলাম মসজিদের মাইক থেকে announce করা হচ্ছে,

"একটি শোক সংবাদ। অমুকের পিতা অমুক ইন্তেকাল করিয়াছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। বাদ যোহর তাঁর নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হইবে।"

ঘটনা-২ :

মসজিদ থেকে আসর পরে আসলাম। জামাকাপড় change করে একটু বিছানায় বসার সাথে সাথে কর্ণকুহরে প্রবেশ করল,

"কাভি তো পাস মেরে আও.................."

এবং কর্ণকুহরে একের পর এক গান প্রবেশ করাতে বাধ্য হচ্ছি।

২৯শে রমাযান,১৪৩৪ হিজরীতে ঘটে যাওয়া ছোট্ট দুটি ঘটনা।

এ বছর ৩০টি রোজা পাওয়ার সৌভাগ্য আমাদের হল না। আজ পহেলা শাওয়াল,১৪৩৪ হিজরী। আগামীকাল পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর,আমাদের সবার খুশির ঈদ।

রমাযান আমাদের দেওয়া হয়েছিল,যেন আমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পারি।

তাক্বওয়া অর্জন কতটুকু হয়েছে তা নিয়ে আমাদের কোন ভ্রুক্ষেপ না থাকলেও,কত "আনন্দ" করে ঈদ উদযাপন করা যায়,তা নিয়ে মাশাআল্লাহ আমাদের চিন্তার অন্ত নেই,তা যতই ইসলামের সকল বিধিনিষেধ ভঙ্গ করে হোক না কেন।

অথচ,যিনি আমাদের এখনও বাঁচিয়ে রেখেছেন,ঠিক আজ সকালে যেমন একজন মৃত্যুবরণ করলেন,তাঁর মত মৃত্যুবরণ করার আদেশ দেন নি,তাঁকে সন্তষ্ট করার কোন মাথাব্যথা আমাদের নেই।

অথচ,রমাযান দেওয়াই হয়েছিল,তাঁকে সন্তষ্ট করে কীভাবে জীবনযাপন করা যায়,তাঁর একটা reminder plus training হিসেবে।

যাই হোক,সবার প্রতি দুটো অনুরোধ থাকবে।

১) এই রমাযানে হয়তো কেউ কেউ সামান্য হলেও নতুন করে কোন ভাল কাজ করতে শুরু করেছি। কেউ পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়তাম না,রমাযানে পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়তে শুরু করেছি। কেউ সিগারেট খেতাম,সিগারেট খাওয়া ছেড়েছি।

রমাযানকে সত্যি সত্যি আমরা utilize করতে পেরেছি,তার একটা বড় নিদর্শন হল,যে কাজগুলো রমাযানে করতে শুরু করেছিলাম,ঠিক সেই কাজগুলো রমাযানের পরেও করে যাওয়া।

আমরা যেন রমাযানে শুরু করা কাজগুলো আমাদের সারা জীবনে চালিয়ে নিয়ে যেওয়ার সংকল্প করি,আর ঐ কাজগুলোর সাথে সাথে অল্প করে হলেও,ইসলামের বিধানগুলো এক এক করে পালন করা শুরু করার দৃঢ় সংকল্প হাতে নিই।

২) হয়তো আমরা অনেকেই এই রমাযানকে ঠিকমত utilize না করতে পেরে হতাশ হয়ে পরি,মনে করি,আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়ার অযোগ্য হয়ে পরেছি।

ভাই/আপু,

আল্লাহর ক্ষমার বিস্তৃতি যে কত বড়,তা আমাদের ধারণারও বাইরে।

আল্লাহর ক্ষমা নিয়ে একটা আলাদা নোট লিখেছিলাম,সেটা আর এখানে আলোচনা করতে চাই না। নোটটা বরং এখান থেকে পড়ে আসুন।

শুধু এটুকুই বলি,হতাশ না হয়ে,দৃঢ় মানসিকতা নিয়ে তাওবা করলে,পরবর্তীতে ঐ পাপ আর না করার দৃঢ় সংকল্প থাকলে,ইনশাআল্লাহ আল্লাহ আমাদের তাওবা কবুল করবেন।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ ও জ্ঞান লাভের তাওফীক দান করুন,24/7 ইসলামের পথে থাকার তাওফীক দান করুন,তাঁকে সন্তষ্ট করে এ ইহলৌকিক জীবন নামক যাত্রা সম্পন্ন করার তাওফীক দান করুন।

আমীন।

সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।

সংশোধনী

গতকাল রাতে একটা "রমাযানের হালখাতা" নামে একটা লেখা লিখেছিলাম। সেখানে প্রথমেই বলেছিলাম যে জান্নাতের দরজাগুলো খোলা এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ আছে।

এই অংশটুকু নিয়েছিলাম নোমান আলী খানের একটি লেকচার থেকে,যেখানে তিনি সূরা সা-দের ৪৯ এবং ৫০ আয়াত আর সূরা আয-যুমারের ৭১ এবং ৭৩ আয়াত উল্লেখ করে এই ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেছেন।

পরবর্তীতে জানতে পারলাম,আসলে তাঁর করা এই তাফসীর কোন renowned তাফসীর গ্রন্থে নেই।

সেই কারণেই সেই লেখাটি আমার ব্লগ এবং ফেসবুক পোস্ট থেকে ডিলিট করে দিয়েছি।

আল্লাহর কাছে প্রার্থনা,তিনি যেন আমার এই অনিচ্ছাকৃত ভুল মাফ করেন,এবং প্রকৃত সালাফী স্কলার বাদে অন্য কারো তাফসীর পরবর্তীতে গ্রহণ না করার তাওফীক দেন,আমীন।

Sunday, August 4, 2013

পুরুষের দায়ভার

আজ মাগরিবের নামাযে আমাদের আহলে হাদীস মসজিদের একজন নিয়মিত মুসল্লি,তাঁর মেয়েকে নিয়ে নামায পড়তে এসেছিলেন।

বাচ্চাকাচ্চাদের বয়স আন্দাজে আমি বরাবরই গাধা টাইপ (অন্য যে কোন কাজকর্মের মতই),আর মেয়েবাচ্চা হলে তো কথাই নাই! তারপরও,আন্দাজে,মেয়েটার বয়স,দুই-আড়াই বছর হবে।

স্বভাবতই,এই বয়সী কোন বাচ্চার জামাতকে follow করার কথা না,সেও করছিল না।

কিন্ত নিজের মনমত রুকু,সিজদাহ,জালসা-এ ইস্তিরাহাহ করছিল,আর শেষ বৈঠকও করল!

বাচ্চাটার এই সব কাজকর্ম দেখে,একটা কথা মনে হল।

প্রায় সময়ই,আমরা পুরুষেরা নারীদের accuse করি,তাঁরা ঠিকমত নামায পড়েন না,কুরআন-হাদীস পড়লেও মানতে চান না,হিজাব পরলেও তা শুধু পরার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে,ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি।

একটা জিনিস কি আমরা খেয়াল করি?

আমরা ছেলেরা,at least,সপ্তাহে এক দিন হলেও (and of course I'm meaning Friday Jummah) মসজিদে যাই (অথবা যেতে বাধ্য হই,মা-বাবার চাপে)। যার ফলে,নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও,ইমাম সাহেবের খুতবার কয়েকটা শব্দ কানে কিন্ত ঠিকই ঢোকে।

আর অনেকেই ছেলেবাচ্চাদের শুক্রবারে মসজিদে নিয়ে যান,আর বাচ্চাদের স্বভাব অনুযায়ী,ওরা আমাদের অনুকরণ করতে থাকে। ফলে ভিতরে ভিতরে,নামায পড়ার একটা তাগিদ কিন্ত তৈরি হয়ে যায়।

এই সুযোগটা কিন্ত মেয়েদের জন্যও ইসলামে দেওয়া আছে। এমন কী,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্পষ্ট হাদীস আছে,মেয়েদের মসজিদে যেতে বাধা না দিতে (অবশ্যই কিছু শর্ত যদি তাঁরা লঙ্ঘন না করেন)।

তাহলে,এই সুযোগটা সরিয়ে নিয়ে,তাঁদের এই কাজকর্মের দায়ভার কি কিছুটা আমাদের উপরও পরছে না?

Sunday, July 28, 2013

হতাশা ও আশা

রাস্তাঘাটে বের হলে তো মাথা সোজা রেখে চলা যায় না,মাথাটা নিচু রেখেই চলতে হয়। মাঝেমধ্যে হাঁপিয়ে গেলে একটু আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি। কিন্ত গত কিছুদিন মাথাটা উঁচু করে যা দেখি,তাতে এই কাজটা প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম।

কী দেখি জানেন?

কোন একটা সোনার গহনার কোম্পানির ছোট ছোট বিলবোর্ড, যাতে একজন মডেল একটা লকেটের "বিজ্ঞাপন" করছেন।

তাঁর কাঁধ থেকে বুকের উপর পর্যন্ত,অনাবৃত।

যতবার এই বিলবোর্ডটা চোখে পরে,ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিই,আর চিন্তা করি,এখানে আসল পণ্য কোনটা? লকেটটা,না কি লকেটের মডেল?

ইসলামিক হিজাবকে একপাশে সরিয়ে রেখেই বলি,আমাদের দেশে,"এখনও",মেয়েরা যে ধরণের অনুষ্ঠানে সোনার গহনা পরেন,তাতে তাঁরা normally  শাড়ি পরে থাকেন,এবং সেই শাড়ির কোন অংশে এই টাইপ কোন পোশাক থাকে না,যাতে কাঁধ থেকে বুকের উপরের অংশ অনাবৃত থাকে।

তাহলে,মডেলের উন্মুক্ত দেহাংশ দেখানোর মাধ্যমে কোম্পানির নামটা প্রচার করা ব্যতীত আর কোন যুক্তিতে এ রকম বিলবোর্ড বানানো হতে পারে,তা জানতে রোকেয়া প্রাচী  আর সুলতানা কামালের কাছে যাওয়া ব্যতীত আর কোন ভাল উপায় আপাতত খুঁজে পাচ্ছি না।

অফ টপিক :

আমার ইসলামপূর্ব জীবনে, আমার আম্মুর সাথে একটা বাজি ধরেছিলাম। 

বাজিটা ছিল যে,যদি আমার আম্মু, আমার জন্য এমন একজন বউ আনতে পারেন, যিনি এই যুগেও,বিয়ের আগে,কোন রিলেশনশিপে ছিলেন না,তাহলে "কবুল" বলার আগে আমি এক চামচ মাটি খাব!!!

এই চরম ফিতনার যুগেও, ফেসবুকে যখন ইসলাম নিয়ে সচেতন, সঠিকভাবে দ্বীন পালনে সচেষ্ট অনেক মুসলিমাহদের দেখি,তখন মনে হয়, most probably, মাটি খাওয়াটা কপালেই আছে!!!

সত্যি কথা বলতে,মাটি খেতে আসলেই উন্মুখ হয়ে আছি!!!!!


Wednesday, July 24, 2013

ইসলামকে একটা সুযোগ দিয়েই দেখুন না

আমার ইসলামপূর্ব জীবনের দুইটি ঘটনা বলি।
 
১) প্রচণ্ড গরম,মাথার উপর গনগনে সূর্য। রোদের তীব্রতা সহ্য করার বাইরে।

আমার ব্যাগে ছাতা আছে,খুব সহজেই বের করে ছাতাটা ফুটিয়ে এই রোদ থেকে বাঁচতে পারি। কিন্ত বের করছি না।

কারণ?

আরে,আমি একজন ইয়াং ম্যান,আমি হব কষ্টসহিষ্ণু। আমি যদি এভাবে মেয়েদের মত ছাতা ধরে থাকি,তাহলে লোকেরা কী বলবে? আর ভার্সিটির মেয়েদের সামনে আমার একটা প্রেস্টিজ আছে না!!!

অথচ,যাদের সামনে ভাব নেওয়া আমার উদ্দেশ্য ছিল,হয়ত তাদের ১০ জনের মধ্যে ৮ জনই আমাকে চিনতেন না।

ফাইনালি,এই ভাবের খেসারত আমাকেই দিতে হত,হয় জ্বর,নয় ঠাণ্ডা-কাশিতে ভোগার মধ্য দিয়ে।

২) আমার সামনে একজন কেউ কোন একটা কথা বলতেন,অথবা হয়ত এমন কোন মন্তব্য করতেন,যার সাথে আমি কোনভাবেই একমত হতাম না।

কিন্ত তারপরও,আমি তাঁকে কিছুই বলতাম না,চুপচাপ শুনে যেতাম,মাঝেমধ্যে হ্যাঁ-হুঁ করতাম।

পরে নিজের কাছে নিজের খারাপ লাগত,কারণ,আমি তো কথাটার সাথে কোনভাবেই একমত নই। কিন্ত ঐ মানুষটা তো ভেবে বসে আছেন,আমি তার সাথে ১০০% একমত!!!

ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে,আমি চাইতাম,"মানুষের" কাছে ভাল হওয়ার জন্য,স্মার্ট হওয়ার জন্য। কোন মানুষের কাছে আমি যেন খারাপ না হই,আনস্মার্ট না হই,হাসির পাত্র না হই,তা যতই আমার নিজস্ব সত্ত্বাকে লুকিয়ে হোক না কেন।

অর্থ্যাৎ,আমার মন আমি আমার মতই অন্য একদল মানুষের কাছে বন্ধক রেখে দিয়েছিলাম।

আলহামদুলিল্লাহ,ইসলামকে জানতে-বুঝতে শুরু করার পর,ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রাহিমাহুল্লাহর একটা বাণী,আমার পুরো চিন্তাধারা ১৮০ ডিগ্রি উলটে দিল।

"সারা দুনিয়ার মানুষ যদি তোমার উপর সন্তষ্ট থাকে,কিন্ত আল্লাহ তোমার উপর অসন্তষ্ট,তাহলে তুমি জীবনে আসলে কী পেলে? আর সারা দুনিয়ার মানুষ যদি তোমার উপর অসন্তষ্ট থাকে,কিন্ত আল্লাহ তোমার উপর সন্তষ্ট থাকেন,তুমি কীই বা হারালে?"

আসলেই তো। কী লাভ আমার আমার মতই আরেকজন মানুষের সন্তষ্টি পেয়ে? কী লাভ আমার,আমার মতই আরেকজন মানুষের প্রিয় মানুষ হয়ে,নিজের সত্ত্বাকে বিক্রি করে? তার আর আমার মধ্যে তো কোন পার্থক্য নেই। সেও আল্লাহর সৃষ্টি,আমিও আল্লাহর সৃষ্টি। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো বলেই গেছেন,অনারবের উপর আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই,কালোর উপর সাদারও শ্রেষ্ঠত্ব নেই। একটা জিনিসই শুধুমাত্র একজনের তুলনায় অন্যজনকে বড় করে তুলতে পারে,আর তা হল তাক্বওয়া,আল্লাহর ভয়।

আলহামদুলিল্লাহ,এখন আর ভাব মারার জন্য চড়া রোদের নিচে ছাতা ছাড়া বের হই না,পাঁচ মিনিটের দূরত্ব হলেও না। আর যদি কারো কোন কথা ভাল না লাগে,আমি একমত না হই,সাথে সাথে যথাসম্ভব ভদ্র ভাষাতেই প্রতিবাদ করি,বলি,"ভাই,আপনার সাথে একমত না।"

আমার নিজের যে একটা আলাদা সত্ত্বা আছে,ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে জীবনে ধারণ করে,তা পুরোপুরিভাবে বুঝতে পারছি,উপভোগ করতে পারছি।

আর এটার যে স্বাদ,এই স্বাদ শুধুমাত্র একটা ভাবেই পাওয়া যেতে পারে।

যিনি এই বিশ্বজগতের অধিপতি,সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা,তাঁর কাছে নিজের মনটাকে বন্ধক দিয়ে।

কারণ তিনিই এর একমাত্র যোগ্য।

"কুরআন আপনার গলার স্বরের একটা মাত্রা ঠিক করে দিয়ে বলে,'তোমার কণ্ঠস্বর উঁচু কর না।' আপনার চলার গতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে নির্দেশ দেয় এই বলে,'পদচারণায় মধ্যবর্তিতা অবলম্বন কর।' আপনার চোখের দৃষ্টিকে সংযত করে এই বলে,'(আমি এদের বিভিন্ন প্রকার লোককে পরীক্ষা করার জন্যে পার্থিবজীবনের সৌন্দর্য স্বরূপ ভোগ-বিলাসের যে উপকরণ দিয়েছি),আপনি সেই সব বস্তুর প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করবেন না।' আপনার কানকে সংযত করে এই বলে,'এবং (অন্যের ব্যাপারে) গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না।' আপনার খাদ্যাভাসকে পরিমিত করে এই বলে যে,'খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না।'

এই অসাধারণ বইটি খুব সহজেই আপনার জীবনকে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে দিতে পারে,আপনাকে এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ বানাতে পারে।

একবার এটাকে সুযোগ দিয়েই দেখুন না।"

- শায়খ আসিম আল হাকিম।

Monday, July 22, 2013

এটি একটি দালালী পোস্ট

বাংলায় একটা বাগধারা আছে,"যারে দেখতে নারি,তার চলন বাঁকা।"।

 আসুন এর একটা প্র‍্যাকটিকাল উদাহরণ দেখি।


 একদল মানুষ আছেন,যাঁরা মাশাআল্লাহ

- দেশের সংবিধান হিসেবে আল-কুরআনকে দেখতে চান
- দেশের আইন হিসেবে ইসলামী শরিয়া আইন দেখতে চান
- রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামী দাওয়াহ কার্যক্রম দেখতে চান।

কিন্ত......

- Already একটা দেশের সংবিধান হিসেবে আল-কুরআন চালু আছে।
- Already সেই দেশে ইসলামী শরিয়া আইন প্রচলিত।
- এবং already সেই দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামী দাওয়াহ প্রচলিত, এবং আলহামদুলিল্লাহ এই দাওয়াহর ফলে শুধুমাত্র যে প্রচুর অমুসলিমই যে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আসেন নি,বরং ভুল আক্বীদার অনেক মুসলিম সহীহ আক্বীদার ইসলাম খুঁজে পেয়েছেন।


কিন্ত তারপরও,তাঁরা সেই দেশের উপর সন্তুষ্ট তো ননই,বরং সেই দেশের শাসকবর্গকে উঠতে-বসতে-খেতে-শুতে কাফির অ্যাখ্যায়িত করতেও তাঁদের এতটুকু বাধে না।


 অর্থ্যাৎ,"যারে দেখতে নারি,তার চলন বাঁকা।"।


 পুনশ্চ: এটি একটি দালালী পোস্ট।

Friday, July 19, 2013

হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকীঃ আমাদের কিছু চিন্তা করার আছে কি?

আজ ১৯ জুলাই,২০১৩। সম্ভবত,বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক,হুমায়ূন আহমেদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী।

As always,এ নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস বারে স্বভাবতই ঝড় উঠেছে। তাঁর ভক্তরা,তাঁকে নিয়ে মাতামাতি করছেন,এবং আমার ইসলামপন্থী বন্ধুদের অনেকেই তাঁকে তুলোধনা করছেন!

যাই হোক,তাঁকে নিয়ে আমার আসলে কিছু বলার নেই। শুধু এই হাদীসটা উল্লেখ করতে চাই,

আয়েশা রাযিআল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

"তোমরা মৃত ব্যক্তিদেরকে গালি দিও না, কারণ তারা তাদের কৃতকর্মের পরিণাম পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে।"। [সহীহ বুখারী,৮ম খণ্ড,হাদীস #৫২৩]

তাঁর ভক্তকুলের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলতে চাই।

ভাই/আপু,

কখনো কি চিন্তা করেছেন,আমাদের এই জীবনে,আমরা কিন্ত একদম ১০০% নিশ্চিত করে,পাঁচটা মিনিট পরেও আমাদের সাথে কী ঘটবে,তা বলতে পারি না,পারি কি?

পাঁচ মিনিট তো অনেক লম্বা সময়,এক মিনিট পরেও কী ঘটবে,আমরা কি তাও জানি?

না,জানি না।

কিন্ত একটা inevitable reality,একটা অনিবার্য সত্য,আমরা কিন্ত সবাই জানি।

সেটা হচ্ছে,death,মৃত্যু।

আমার আপনার ভাগ্যে কী আছে,এ বিষয়ে আমরা আর কিছু না জানলেও,এইটুকু কিন্ত আমরা অবশ্যই জানি,মৃত্যুর হাত থেকে আমাদের মুক্তি নেই।

হুমায়ূন আহমেদের দিকে তাকিয়ে দেখুন। তাঁর কত অসংখ্য লেখায়,ঘুরে ফিরে,তিনি মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে চেয়েছিলেন। কত হাহাকার তিনি করেছেন,একদিন তিনি আর এই পৃথিবী দেখতে পারবেন না,জোছনা দেখতে পারবেন না,কাশবাগানের ঝিরঝির বাতাস অনুভব করতে পারবেন না।

তাঁর মত,এত বিখ্যাত,এত জনপ্রিয় একজন মানুষও কি মৃত্যুকে এড়িয়ে যেতে পেরেছেন? 

না।

আল্লাহ কিন্ত বারবার,বারবার আমাদের সতর্ক করেছেন,এই মৃত্যুর হাত থেকে আমাদের মুক্তি নেই।

“প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।” [সূরা আলে ইমরান-১৮৫]

“অতঃপর নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন এক মুহুর্তও বিলম্বিত কিংবা তরান্বিত করতে পারবে না।” [সূরা নাহল-৬১]

"তোমরা যেখানেই থাক না কেন; মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেও অবস্থান কর, তবুও।" [সূরা আন নিসাঃ আয়াত ৭৮]

"মৃত্যুযন্ত্রণা নিশ্চিতই আসবে। এ থেকেই তুমি টালবাহানা করতে।" [সূরা ক্বাফঃ১৯]

ভাই/আপু,

একটু চিন্তা করে দেখুন তো,হুমায়ূন আহমেদ,তাঁর বিভিন্ন লেখার মাধ্যমে,জীবন সম্পর্কে তাঁর যে দর্শন আমাদের সামনে ফুটিয়ে তুলেছেন,তাঁর আসলেই কি কোন মূল্য আছে? বৃষ্টি আর জোছনার মত দুটো "সৃষ্টি"-কে ভালবেসে আমাদের আসলেই কি কোন লাভ আছে? আমাদের বোনদের অবলীলায় যার তার প্রেমে পড়ার যে মন্ত্র তিনি শিখিয়ে গেলেন,তার থেকে আসলেই কি কোন উপকার আছে?

"যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখিরাতে সে ক্ষতি গ্রস্ত।'' [সূরা আলে-ইমরান, আয়াত ৮৫]

আল্লাহ নানা নিদর্শনের মাধ্যমে,একদম চোখে আঙ্গুল দিয়ে আমাদের দেখিয়ে দিচ্ছেন,কোনটা মুক্তির পথ,কোনটা সরল পথ,কোনটা সাফল্যের পথ।

এরপরও,যদি আমরা না শুনি,না মানি,তাহলে আমাদের নিজেদের ছাড়া,কাউকে blame করার কোন অজুহাত কি থাকবে?

"তোমাদের আচরণ তোমাদের পূর্ববর্তীদের মতোই। তারা ছিল তোমাদের চাইতে বেশী শক্তিশালী এবং তোমাদের চাইতে বেশী সম্পদ ও সন্তানের মালিক। তারপর তারা দুনিয়ায় নিজেদের অংশের স্বাদ উপভোগ করেছে এবং তোমরাও একইভাবে নিজেদের অংশের স্বাদ উপভোগ করেছো। যেমন তারা করেছিল এবং তারা যেমন অনর্থক বিতর্কে লিপ্ত ছিল তেমনি বিতর্কে তোমরাও লিপ্ত রয়েছো। কাজেই তাদের পরিণতি হয়েছে এই যে, দুনিয়ায় ও আখেরাতে তাদের সমস্ত কাজকর্ম পণ্ড হয়ে গেছে এবং তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।

তাদের কাছে কি তাদের পূর্ববর্তীদের ইতিহাস পৌঁছেনি? নূহের জাতির, আদ, সামূদ ও ইবরাহীমের জাতির, মাদইয়ানের অধিবাসীদের এবং যে জনবসতিগুলো উল্টে দেয়া হয়েছিল সেগুলোর? তাদের রসূলগণ সুস্পষ্ট নিশানীসহ তাদের কাছে এসেছিলেন। এরপর তাদের ওপর জুলুম করা আল্লাহর কাজ ছিল না বরং তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছিল।" [সূরা আত তাওবা ৬৯-৭০]

ফকিন্নির পুত সমাচার

আমার আব্বা বুয়েটে পড়েছেন,তাঁর ব্যাচের সিভিলের ফিফথ বয়। সুতরাং তিনি একজন ‘ফকিন্নির পুত’।

আমার আম্মা ঢাকা ইউনিভার্সিটির ছাত্রী,তাঁর ব্যাচের বোটানি ডিপার্টমেন্টের মাস্টার্সে প্র্যাকটিকাল গ্রুপ থেকে প্রথম স্থান অধিকারী। সুতরাং তিনিও ‘ফকিন্নির পুত’। ওহ,সরি,‘ফকিন্নির পুতনি’!

আমি,এই মহা গর্ধব Esclavo-deAlá Sami,প্রথম বার চান্স না পেয়েও শুধুমাত্র ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়ার জন্য সেকেন্ড টাইম পরীক্ষা দেই,এবং আল্লাহর রহমতে চান্সও পাই। অতএব,আমি বংশানুক্রমিকভাবেই ‘ফকিন্নির পুত’।


অতএব,আমার পরিবারই ‘ফকিন্নির পুত’!

কিন্ত এই ‘ফকিন্নির পুত’ পরিবার অন্তত আমাকে কাউকে ‘ফকিন্নির পুত’ বলে গালি দিতে শিখায় নি,রাস্তার ফকিরদেরকেও কখনো ‘ফকিন্নী’ বলতে শিখায় নি,বরং সামাজিক মর্যাদায় ছোট,কিন্ত বয়সে বড় মানুষগুলোকে শ্রদ্ধা দিতেই শিখিয়েছে।

ভাই,আমার দরকার নাই আপনার মত,আপনাদের মত হাইফাই সমাজের সংস্পর্শ।

‘ফকিন্নির পুত’ আছি,‘ফকিন্নির পুত’-ই থাকতে চাই।

অন্তত মানুষকে তো মানুষ হিসেবেই জানব,রাজা প্রজা ‘ফকিন্নী' বলে ডিভিশন করা শিখব না।

Thursday, June 27, 2013

স্ত্রীর জন্য ভালবাসা

প্রথমেই বলে নিই,এই লেখাটা অনুবাদ করাটা হয়তো আমার জন্য একটু ইঁচড়ে পাকামিই হয়ে যাচ্ছে,কারণ স্ট্যাটিস্টিকস বলে,আমার নিজের বিয়ের এখনো অনেক দেরি! কিন্ত আমার অনেক ভাই এবং বন্ধু ইনশাআল্লাহ খুব শীঘ্রই বিয়ে করতে যাচ্ছে বলে আশা করি,সেই জন্যই অনুবাদ করে ফেললাম। পাশাপাশি, self reminder বলে একটা জিনিস তো আছেই!

বাংলাদেশি একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান আমি,তার উপর ছেলে। স্বাভাবিকভাবেই,একটু superior মনোভাব নিয়েই আমার বেড়ে ওঠা। পাশাপাশি,বরাবরই ক্লাসে top ranked student ছিলাম,যার ফলে আমার সহপাঠীরা আমার সাথে অনেকটা "celebrity" type আচরণ করত,যদিও আমি সবসময় নিজেকে সাধারণ বলেই মনে করতাম।

আমার কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ অংশ কেটেছে সেক্যুলার মনোভাব নিয়ে। কিন্ত তারপরও,কখনো কোন রিলেশনশিপে জড়াই নি। এর পিছনের একটা কারণ হতে পারে যে,আমি খুবই বুদ্ধিমান ছিলাম!

যাই হোক,আসল কারণটা হচ্ছে,একটা বিব্রতকর অনুভূতি। আমি বুঝেই উঠতে পারতাম না,কীভাবে একজন মানুষ,আরেকজন মানুষকে দিনের ২৪ ঘণ্টা ধরে সহ্য করতে পারে,যেখানে একজন চিন্তাধারা,চালচলন,আচার-আচরণ,আরেকজনের পুরো বিপরীত?

যার ফলে,আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম,আমি বিয়ে করব না।

যাই হোক,সময় তার মত করে চলে,সাথে আমাদের চিন্তাচেতনাও পরিবর্তিত হয়। এর ফলেই,আমার সেক্যুলার ধ্যানধারণা,ইসলাম দ্বারা পরিবর্তিত হয়ে যায়।

তারপরও,বিয়ে নিয়ে আমার চিন্তাধারার কোন পরিবর্তন ছিল না।

কিন্ত একদিন হঠাৎ করেই,বিয়ে করার জন্য জোর দিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি হাদীস আমার চোখে পড়ে।

যার জন্য,অনেকটা নিরুপায় হয়েই,মনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে,আমার বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়।

ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা বিয়ের উপর প্রচুর বই পড়েছিলাম আমি (যে সকল ভাইয়েরা বিয়ে করতে যাচ্ছেন বা করে ফেলেছেন,তাদের জন্য একটা ভাল বই হতে পারে ড. গাজী আল-শামরির লেখা "রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,সর্বশ্রেষ্ঠ স্বামী")। কিন্ত তারপরও,আমার পারিবারিক জীবন আর অ্যাকাডেমিক জীবনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারছিলাম না। যার ফলে,ঠিক বিয়ের পরপর,আমি আমার পিএইচডি কোর্সের একটা গ্রেডে ফেল করে বসি!

কিন্ত,এর সাথে সাথে,আমি দুটো গুরুত্বপূর্ণ দিক আবিষ্কার করি।

১) বাস্তব জীবনে এমন অনেক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হতে পারে,যেগুলো যুক্তিবিদ্যার কোন বইয়ে হাজার ঘাঁটলেও খুঁজে পাওয়া যাবে না।

২) যুক্তিপ্রমাণ ছাড়াও কাউকে কোন কিছু করতে প্ররোচিত করা যায়,আর সেটা করার একমাত্র উপায় হল,ভালবাসা।

যাই হোক,আমরা ঝগড়া করতাম,মাঝে মাঝে তা বেশ তীব্রই হত। কিন্ত প্রতি ঝগড়ার পর আমরা মিটমাট করে তবেই ঘুমাতে যেতাম।

নিজেকে একজন ভাল স্বামী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য,আমি একটা বই পড়তে শুরু করলাম। বইটা লেখা ছিল বিবাহিত জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে যে মতানৈক্য হয়,তা নিয়ে।

বইটা পড়তে গিয়ে,হঠাৎ একটা লাইনে থেমে যাই।

লাইনটা ছিল এরকম,

.....তারা একে অন্যের আশা,স্বপ্ন,আর বেদনা,এগুলো ভাগাভাগি করে নেয়।

লাইনটা পড়ে,আমি কিছুক্ষণের জন্য থমকে যাই। বিয়ের পর ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো মনে করতে থাকি।

আমি আমার আশা,আমার স্বপ্ন,আমার বেদনাগুলো ঠিকই মনে করতে পারি।

কিন্ত আমি কি তারগুলো মনে করতে পেরেছি? আমি কি তার স্বপ্নগুলো নিয়ে চলতে পেরেছি? বা তার দুঃখের সময়,তার কষ্টগুলো কি ভাগাভাগি করে নিতে পেরেছি?

আমি একটু পিছন ফিরে দেখতে চাইলাম,বিয়ের পর,তার জন্য,আমি নিজে কতটুকু ছাড় দিয়েছি,আর সে কতটুকু ছাড় দিয়েছে।

সে কি আমার জন্য,তার স্বপ্নগুলো উৎসর্গ করে নি?

আমার সন্তানকে আলোর মুখ দেখানোর জন্য,সে কি চরম কষ্ট সহ্য করে নি?

আমার আর্থিক দুরবস্থার সময়,সেও কি ভুক্তভোগী হয় নি?

হয়তোবা,মানব সভ্যতার শুরু থেকেই,মেয়েরা তাদের আশা,তাদের স্বপ্ন,বেশি উৎসর্গ করেছে,আর বেশি কষ্টও সহ্য করেছে,শুধুমাত্র তাদের অর্ধাঙ্গীদের জন্য।

এইজন্যই হয়তোবা,উমার রাযিআল্লাহু আনহুর মত একজন,তাঁর স্ত্রীর মেজাজ খারাপের সময়,চুপ করে থাকতেন।

যদি উমার রাযিআল্লাহু আনহুর মত একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের আচরণ এই হয়,তাহলে আমি কে?

এখন,মাঝেমাঝে,তার জায়গায় নিজেকে বসিয়ে চিন্তা করি,আমি কি এগুলো করতে পারতাম? এই যে এতটা শৃঙ্খলাবদ্ধ একটা জীবন,আমি কি এটা সহ্য করতে পারতাম? যখন আমার মেয়ের বিয়ে হবে,আর তার স্বামী যদি তার সাথে ঠিক এই আচরণগুলো করবে,যেগুলো আমি আমার স্ত্রীর সাথে করছি,এটা কি আমি সহ্য করতে পারব?

তবে সত্যি কথাটা হচ্ছে,তার মত করে ১০০% চিন্তা করতে পারি না। আর পারবই বা কীভাবে?

কিন্ত,এখন এটুকু চেষ্টা করি,যেন তার আশা,তার স্বপ্ন,আর তার বেদনাটুকু যেন ভাগাভাগি করে নিতে পারি।

মূল লেখাঃ

http://abuumaimah.wordpress.com/2013/06/16/lovefor-my-wife/


 

ফ্রি উইল (Free Will)

আমার মনে হয়,ফ্রি উইল (Free Will) মানুষকে দেওয়া আল্লাহর সবচেয়ে বড় একটা নিআমত। সাথে সাথে মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষাও এই ফ্রি উইল।

চারপাশে যথেষ্ট পরিমাণ প্রমাণ,যথেষ্ট পরিমাণ সাক্ষ্য-উপাত্ত,তারপরও "আমি মনে করি","আমার মনে হয়","আমি এটা বিশ্বাস করি" - এই সব কিছুর মূলে হল এই ফ্রি উইল।

এমন কী,mutual কোন conversation-য়ের সময়,সব যুক্তিপ্রমাণ আগাগোড়া নিজের মতের বিরুদ্ধে হলেও "আমি মানব না",এটাও ফ্রি উইল।

আচ্ছা,চোর-ডাকাতেরও তো ফ্রি উইল আছে,তাই না?

এমন কী,তাদের চুরি-ডাকাতের পিছনেও কিন্ত শক্ত লজিক আছে। ভেবে দেখুন,তার মা অসুস্থ,তার স্ত্রী কাজ করতে করতে মৃতপ্রায়,তার বাচ্চা ক্ষুধার জ্বালায় কাঁদছে। সে হাত পেতেও আপনার কাছ থেকে সাহায্য পাচ্ছে না। এ মুহূর্তে সে আপনার সবকিছু কেড়ে নেবে,এটাই কি যুক্তিযুক্ত নয়?

তাহলে এটা কেন আমরা মানি না? কেন চোর-ডাকাতকে হাতের কাছে পেলে,পিটিয়ে হাড্ডি গুঁড়িয়ে দেই আমরা???

কারণ,এটা নৈতিকতার বিরুদ্ধে। অতএব,সে যা করছে,এটা তার ফ্রি উইল,তার নিজস্ব ইচ্ছা।

আল্লাহ খুব ভাল করেই জানেন,দূর্বল মূহূর্তে,দূর্বল সময়ে,মানুষ এই ফ্রি উইলের অনুসরণ করবে,সকল নৈতিকতাকে অকাতরে বিসর্জন দেবে। তাই সবার আগে তিনি বলেছেন আত্মসমর্পণ করতে। এটা মেনে নিতে,তার একজন প্রভু আছেন,এবং সেই প্রভুর ইচ্ছার বিরুদ্ধে গেলে সে হয়তো সাময়িক সময়ের জন্য রক্ষা পাবে,কিন্ত at the long run,তার জন্য অপেক্ষা করছে ভয়াবহ বিপদ।

অর্থ্যাৎ,একজন মুসলিম,সবার আগে,তার ফ্রি উইলকে,আল্লাহর কাছে বিসর্জন দেবে;সকল দূর্বল মুহূর্তে,সকল দূর্বল ক্ষেত্রে,সে নিজের ফ্রি উইলের উপর কুরআন আর হাদীসের নির্দেশকে প্রাধান্য দেবে।

এখন,আমরা বলছি,আমরা মুসলিম,আমরা আত্মসমর্পণকারী। অন্যদিকে,কুরআন হাদীস না মেনে,নিজের খেয়াল-খুশিমত,যা মনে আসে তাই করে যাচ্ছি,অর্থ্যাৎ,ঘুরেফিরে সেই ফ্রি উইলেরই অনুসরণ করে যাচ্ছি।

"মুসলিম" হিসেবে দাবী করাটা কি আমাদের মানাচ্ছে???