Friday, November 15, 2013

কী অনুভূতি নিয়ে আশুরাকে পালন করা উচিত?

ইসলামের ইতিহাসে আশুরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্মৃতিবিজরিত দিন। একদিকে জালিম ফিরআউনের কবল থেকে মুসা আলাইহিস সালাম ও বনী ইসরাইলের মুক্তি, আবার অন্যদিকে কারবালার প্রান্তরে ইমাম হোসেন রাযিআল্লাহু আনহু এবং তার সঙ্গীদের মৃত্যু।

কিন্ত কীভাবে আমরা আশুরাকে পালন করব? অর্থ্যাৎ, আশুরা পালনের সময় মনের মধ্যে কোন আবেগটি আমাদের মধ্যে কাজ করা উচিত, মুসা আলাইহিস সালামের বিপদ থেকে পরিত্রাণ লাভের আনন্দ, না কী ইমাম হোসেন রাযিআল্লাহু আনহুর শহীদ হওয়ার জন্য দুঃখ?

→ "রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ছেলে ইবরাহীম যে মাসে মারা যান, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বা সাহাবীগণ, কেউই সে মাসকে 'শোকের মাস' হিসেবে পালন করেন নি, আর সে মাসে বিয়ে করাও বাদ দেন নি। অথবা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রাণপ্রিয় চাচা, হামযা রাযিআল্লাহু আনহু যে মাসে শহীদ হয়েছিলেন, আর তাঁর কলিজা কেটে চিবানো হয়েছিল, সেই মাসকেও তাঁরা 'শোকের মাস' বা 'বিবাহ বর্জনের মাস' হিসাবে পালন করেন নি। অতএব, মহররমকে 'শোকের মাস' হিসাবে পালন করা আর এই মাসে বিয়ে বর্জন করা সুস্পষ্ট বিদআত ছাড়া কিছুই নয়।"


→ "আমাদের অন্যতম আনন্দের উপলক্ষ হচ্ছে আশুরা। এই দিনে মুসা আলাইহিস সালাম ও বনী ইসরাইলকে জালিম ফিরআউনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য আমরা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে থাকি। কিন্ত বেশিরভাগ মানুষ এটাকে ইমাম হোসেন রাযিআল্লাহু আনহুর শহীদ হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোক পালন করে।

প্রকৃতপক্ষে, এই শোক প্রকাশের আবহের মূল সূচনাকারী শিয়া সম্প্রদায়। তারা এই দিনে তাজিয়া মিছিল বের করে, চাবুক আর ছুরি দিয়ে নিজেদের শরীর রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত করে, যার সাথে ইসলামের নূন্যতম সম্পর্ক নেই।

মজার ব্যাপার হল, শিয়াদের মূল বিশ্বাসের সাথে ঘৃণা আর প্রতিশোধ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ইতিহাসে তারা ইসলাম ও মুসলিমদের প্রতারক হিসেবেই পরিচিত। অতীতের প্রতিটি ঘটনায় তারা ইসলামের শত্রুদের মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহায়তা করেছে। তাদের বিশ্বাসের তিনটি ভিত্তি হলঃ শির্ক, কুফরী এবং তাদের আয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশ তাদের ইমামদের প্রদান!

তারা কি কাফির?

এখানে যে বিষয়টা বুঝতে হবে, কোন ব্যক্তিকে সুনির্দিষ্টভাবে কাফির বলার আগে তার বিশ্বাস সম্পর্কে প্রকৃত ও সুস্পষ্ট ধ্যারণা থাকতে হবে। সাধারণত, যদি কারো বিরুদ্ধে কোন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না থাকে, তার আগ পর্যন্ত তাকে মুসলিম হিসেবেই ধরে নিতে হবে।

কিন্ত কেউ যদি আয়িশা রাযিআল্লাহু আনহাকে গালি দেয়, আবু বকর আর উমার রাযিআল্লাহু আনহুকে অভিশাপ দেয়, তাহলে অবশ্যই সে কাফির। অথবা যদি বলে যে কুরআন অপরিবর্তিত নয়, অথবা তাদের কাছে অন্য একটি কুরআন রয়েছে, তাহলেও সে কাফির। যদি কেউ মনে করে যে তাদের ইমাম অদৃশ্য ক্ষমতার অধিকারী, অথবা মৃতকে জীবিত করতে পারে, তাহলে তা শির্ক।

আল্লাহ তাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে সঠিক বুঝ দান করুন এবং তাদের সুন্নাহ আঁকড়ে ধরার তৌফিক দান করুন।"


অতএব, আমাদের একটি খুশির উপলক্ষ হিসেবেই আশুরাকে পালন করতে হবে।

কিন্ত এরই সাথে, ইসলামের জন্য, আল্লাহর সন্তষ্টির জন্য, ইমাম হোসেন রাযিআল্লাহু আনহুর আত্মৎসর্গের কথাও আমাদের স্মরণে রাখা উচিত, কিন্ত অবশ্যই এটা মাথায় রাখতে হবে, ইসলামে "শোক দিবস" নামক কোন কনসেপ্ট নেই।

[ড. বিলাল ফিলিপস এবং শায়খ আসিম আল-হাকিমের কথাগুলো সিফাত মাহজাবীন আপুর সৌজন্যে।]

No comments:

Post a Comment