Friday, August 30, 2013

আলেম "জানেন না"!!!

প্রশ্নঃ সূরা নাহলের ৪৩ নম্বর আয়াতে বলা আছে,"তোমরা যদি না জানো তাহলে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস করে জেনে নাও।"

কিন্ত বর্তমানে কিছু যুবকের কাছে যখন এটা বলা হয়,তখন তারা বলে,"শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী,শায়খ আব্দুল আযীয বিন বায,তাঁরা ফিকহ এবং হাদীস বিষয়ে অভিজ্ঞ। কিন্ত জিহাদের বিষয়ে তাঁদের কোন অভিজ্ঞতা নেই।"

তাহলে এ ব্যাপারে কে অভিজ্ঞ? কার কাছ থেকে আমরা সঠিক দিকনির্দেশনা নিতে পারি?

শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানীঃ

হুম,কথাটা কিন্ত এক অর্থে ঠিক! শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী,শায়খ আব্দুল আযীয বিন বায,তাঁরা কেউই এটাও জানেন না যে একটা অস্র কীভাবে বহন করতে হয়।

কিন্ত তার মানে কি এই,তাঁরা জিহাদ সম্পর্কে অজ্ঞ?

প্রশ্নকর্তাঃ অবশ্যই না।

শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানীঃ

তাহলে এই বক্তব্যের ভিত্তি কী???

এটা ঐ যুবকদের প্রতি শয়তানের প্রলোভন ব্যতীত আর কিছুই না। সে তাদের কাছে তাদের বক্তব্য,যেটা সম্পূর্ণরুপে কুরআন এবং সুন্নাহ বিরোধী,তা সঠিক বলে তুলে ধরে তাদের পথভ্রষ্ট করার চেষ্টা করছে।

প্রশ্নকর্তাঃ আরেকটা প্রশ্ন। যখন তাদের কাছে এটা তুলে ধরা হয়,তারা বলে,"শায়খ আলবানী এবং শায়খ বিন বায,তাঁদের কারোরই "বাস্তব" সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। আমরা বাস্তবে (জিহাদের ময়দানে) অবস্থান করছি,আর শায়খ আলবানী (তাঁর ঘরে বসে) বই লিখছেন!"

শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানীঃ

ও তাই? আচ্ছা ঠিক আছে,তারা আমাকে একটা "বাস্তব" কাহিনী তুলে ধরে সেটার "সঠিক" সিদ্ধান্তটা আমার কাছে তুলে ধরুক,আমি তাদের কাছ থেকে শিখে নিই!

জেনে রাখুন,বাস্তবতা নিজের চোখে দেখার মানে এই নয় যে এই বাস্তবতা আপনাকে ঐ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে পারে। কোন কিছুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র দুটো জিনিস থেকেই নেওয়া যায়,আল্লাহর কিতাব এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ!

কী গোঁড়ামি,সুবহানআল্লাহ!!!

পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে আলেমদের কাছে যখন প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়,তাদের মধ্যে প্রচুর প্রশ্ন থাকে যা "বাস্তবে ঘটে গেছে"! এখন প্রত্যেক আলেম কি ঐ ঘটনাগুলোর প্রত্যেকটা ঘটার সময় সেখানে উপস্থিত থেকে "বাস্তবতা অনুভব করেছিলেন",না কি প্রশ্নকর্তা "বাস্তবে যা ঘটেছে",সেটাই তার প্রশ্নে উত্থাপন করে থাকেন?

যেহেতু প্রশ্নকর্তা,ঘটনা ঘটার সময়,"বাস্তবে" উপস্থিত ছিলেন,তাহলে তিনি নিজে নিজে কেন সিদ্ধান্ত নেন না,কেন ঐ সিদ্ধান্ত নিতে আলেমের কাছে আসেন?

কারণ একটাই। প্রশ্নকর্তা জানেন যে,আলেম "প্রত্যক্ষভাবে" ঐ ঘটনা ঘটার সময় উপস্থিত না থাকলেও,এ ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্তটা কি হবে,তা জানেন,তা কেউ পছন্দ করুক,বা না করুক।

এখন,সেই যুবকেরা,তারা ভাবছে যে "যেহেতু" তারা বাস্তবতাকে নিজে প্রত্যক্ষ করছে,"তাই" তাদের সিদ্ধান্তই সঠিক,যতই তারা কুরআন এবং হাদীস সম্পর্কে অজ্ঞ হোক না কেন! কী চমৎকার!

তারা এই বিষয়ে সম্বন্ধে "সম্যক অবগত",আল্লাহ তাদের এই জ্ঞানকে বরকত দান করুন,কিন্ত তার মানে এই নয় যে,এই বাস্তবতাই ঐ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে পারে। যেমন আল্লাহ কুরআনে বলেছেন,ঠিক তেমনিভাবে কোন ব্যাপারে সিদ্ধান্ত "একমাত্র" আলেমরাই দিতে পারেন,কুরআন হাদীস ফিকহ বিষয়ে অজ্ঞ কেউ নয়।

এটা খুবই স্বাভাবিক যে,আলেমদের যা যা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে,তার "প্রত্যেকটা" সম্পর্কে তাঁদের বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকবে না। যার কারণে,কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য "বাস্তব অভিজ্ঞতা" কোন শর্ত নয়।

আসলে সত্যি বলতে,তাদের নিজেদের উক্তি থেকেই স্পষ্ট যে তারা ভ্রান্তির মধ্যে ডুবে আছে। অর্থ্যাৎ,যদিও তারা "বাস্তবতা" সম্পর্কে সম্যক অবগত,তারপরও তাদের জ্ঞানের বিভ্রান্তির কারণে তারা ভ্রান্তিতে নিপতিত হয়েছে।

হে আমার ভাই,অবশ্যই প্রত্যক্ষভাবে কোন ব্যক্তি যে সমস্যার সম্মুখীন হন,ঐ সমস্যা সম্পর্কে তিনি,যে আলেমের কাছে ঐ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চাচ্ছেন,তাঁর (আলেম) থেকে বেশি অবগত। কিন্ত কখনোই আলেমের কাছে জিজ্ঞাসা করা ব্যতীত নিজে নিজে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারেন না,এটাই বাস্তব। ঠিক এভাবেই আমরা কুরআনের সূরা নাহলের ৪৩ নম্বর আয়াতটা দিয়ে ঐ যুবকদের উত্তর দিয়ে থাকি।

বর্তমানে বেশ কিছু "জিহাদী দল" প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তারা কী চায়? তারা আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রাম করতে চায়। ঠিক আছে। কিন্ত আলেমগণ এবং সত্যানুসন্ধানী ব্যক্তিবর্গ জিহাদ সম্পর্কে জানেন না (আর জানলেও বলেন না),এটা কি সম্ভব???

সুবহানআল্লাহ... আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করি।

মূল পোস্টঃ

Doubt: Scholars don’t know Current events – Answered by Shaykh Al Albani (rahimahullaah)

কৃতজ্ঞতাঃ 

বাংলাদেশী আতাহারী

No comments:

Post a Comment