Thursday, June 27, 2013

স্ত্রীর জন্য ভালবাসা

প্রথমেই বলে নিই,এই লেখাটা অনুবাদ করাটা হয়তো আমার জন্য একটু ইঁচড়ে পাকামিই হয়ে যাচ্ছে,কারণ স্ট্যাটিস্টিকস বলে,আমার নিজের বিয়ের এখনো অনেক দেরি! কিন্ত আমার অনেক ভাই এবং বন্ধু ইনশাআল্লাহ খুব শীঘ্রই বিয়ে করতে যাচ্ছে বলে আশা করি,সেই জন্যই অনুবাদ করে ফেললাম। পাশাপাশি, self reminder বলে একটা জিনিস তো আছেই!

বাংলাদেশি একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান আমি,তার উপর ছেলে। স্বাভাবিকভাবেই,একটু superior মনোভাব নিয়েই আমার বেড়ে ওঠা। পাশাপাশি,বরাবরই ক্লাসে top ranked student ছিলাম,যার ফলে আমার সহপাঠীরা আমার সাথে অনেকটা "celebrity" type আচরণ করত,যদিও আমি সবসময় নিজেকে সাধারণ বলেই মনে করতাম।

আমার কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ অংশ কেটেছে সেক্যুলার মনোভাব নিয়ে। কিন্ত তারপরও,কখনো কোন রিলেশনশিপে জড়াই নি। এর পিছনের একটা কারণ হতে পারে যে,আমি খুবই বুদ্ধিমান ছিলাম!

যাই হোক,আসল কারণটা হচ্ছে,একটা বিব্রতকর অনুভূতি। আমি বুঝেই উঠতে পারতাম না,কীভাবে একজন মানুষ,আরেকজন মানুষকে দিনের ২৪ ঘণ্টা ধরে সহ্য করতে পারে,যেখানে একজন চিন্তাধারা,চালচলন,আচার-আচরণ,আরেকজনের পুরো বিপরীত?

যার ফলে,আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম,আমি বিয়ে করব না।

যাই হোক,সময় তার মত করে চলে,সাথে আমাদের চিন্তাচেতনাও পরিবর্তিত হয়। এর ফলেই,আমার সেক্যুলার ধ্যানধারণা,ইসলাম দ্বারা পরিবর্তিত হয়ে যায়।

তারপরও,বিয়ে নিয়ে আমার চিন্তাধারার কোন পরিবর্তন ছিল না।

কিন্ত একদিন হঠাৎ করেই,বিয়ে করার জন্য জোর দিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি হাদীস আমার চোখে পড়ে।

যার জন্য,অনেকটা নিরুপায় হয়েই,মনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে,আমার বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়।

ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা বিয়ের উপর প্রচুর বই পড়েছিলাম আমি (যে সকল ভাইয়েরা বিয়ে করতে যাচ্ছেন বা করে ফেলেছেন,তাদের জন্য একটা ভাল বই হতে পারে ড. গাজী আল-শামরির লেখা "রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,সর্বশ্রেষ্ঠ স্বামী")। কিন্ত তারপরও,আমার পারিবারিক জীবন আর অ্যাকাডেমিক জীবনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারছিলাম না। যার ফলে,ঠিক বিয়ের পরপর,আমি আমার পিএইচডি কোর্সের একটা গ্রেডে ফেল করে বসি!

কিন্ত,এর সাথে সাথে,আমি দুটো গুরুত্বপূর্ণ দিক আবিষ্কার করি।

১) বাস্তব জীবনে এমন অনেক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হতে পারে,যেগুলো যুক্তিবিদ্যার কোন বইয়ে হাজার ঘাঁটলেও খুঁজে পাওয়া যাবে না।

২) যুক্তিপ্রমাণ ছাড়াও কাউকে কোন কিছু করতে প্ররোচিত করা যায়,আর সেটা করার একমাত্র উপায় হল,ভালবাসা।

যাই হোক,আমরা ঝগড়া করতাম,মাঝে মাঝে তা বেশ তীব্রই হত। কিন্ত প্রতি ঝগড়ার পর আমরা মিটমাট করে তবেই ঘুমাতে যেতাম।

নিজেকে একজন ভাল স্বামী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য,আমি একটা বই পড়তে শুরু করলাম। বইটা লেখা ছিল বিবাহিত জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে যে মতানৈক্য হয়,তা নিয়ে।

বইটা পড়তে গিয়ে,হঠাৎ একটা লাইনে থেমে যাই।

লাইনটা ছিল এরকম,

.....তারা একে অন্যের আশা,স্বপ্ন,আর বেদনা,এগুলো ভাগাভাগি করে নেয়।

লাইনটা পড়ে,আমি কিছুক্ষণের জন্য থমকে যাই। বিয়ের পর ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো মনে করতে থাকি।

আমি আমার আশা,আমার স্বপ্ন,আমার বেদনাগুলো ঠিকই মনে করতে পারি।

কিন্ত আমি কি তারগুলো মনে করতে পেরেছি? আমি কি তার স্বপ্নগুলো নিয়ে চলতে পেরেছি? বা তার দুঃখের সময়,তার কষ্টগুলো কি ভাগাভাগি করে নিতে পেরেছি?

আমি একটু পিছন ফিরে দেখতে চাইলাম,বিয়ের পর,তার জন্য,আমি নিজে কতটুকু ছাড় দিয়েছি,আর সে কতটুকু ছাড় দিয়েছে।

সে কি আমার জন্য,তার স্বপ্নগুলো উৎসর্গ করে নি?

আমার সন্তানকে আলোর মুখ দেখানোর জন্য,সে কি চরম কষ্ট সহ্য করে নি?

আমার আর্থিক দুরবস্থার সময়,সেও কি ভুক্তভোগী হয় নি?

হয়তোবা,মানব সভ্যতার শুরু থেকেই,মেয়েরা তাদের আশা,তাদের স্বপ্ন,বেশি উৎসর্গ করেছে,আর বেশি কষ্টও সহ্য করেছে,শুধুমাত্র তাদের অর্ধাঙ্গীদের জন্য।

এইজন্যই হয়তোবা,উমার রাযিআল্লাহু আনহুর মত একজন,তাঁর স্ত্রীর মেজাজ খারাপের সময়,চুপ করে থাকতেন।

যদি উমার রাযিআল্লাহু আনহুর মত একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের আচরণ এই হয়,তাহলে আমি কে?

এখন,মাঝেমাঝে,তার জায়গায় নিজেকে বসিয়ে চিন্তা করি,আমি কি এগুলো করতে পারতাম? এই যে এতটা শৃঙ্খলাবদ্ধ একটা জীবন,আমি কি এটা সহ্য করতে পারতাম? যখন আমার মেয়ের বিয়ে হবে,আর তার স্বামী যদি তার সাথে ঠিক এই আচরণগুলো করবে,যেগুলো আমি আমার স্ত্রীর সাথে করছি,এটা কি আমি সহ্য করতে পারব?

তবে সত্যি কথাটা হচ্ছে,তার মত করে ১০০% চিন্তা করতে পারি না। আর পারবই বা কীভাবে?

কিন্ত,এখন এটুকু চেষ্টা করি,যেন তার আশা,তার স্বপ্ন,আর তার বেদনাটুকু যেন ভাগাভাগি করে নিতে পারি।

মূল লেখাঃ

http://abuumaimah.wordpress.com/2013/06/16/lovefor-my-wife/


 

ফ্রি উইল (Free Will)

আমার মনে হয়,ফ্রি উইল (Free Will) মানুষকে দেওয়া আল্লাহর সবচেয়ে বড় একটা নিআমত। সাথে সাথে মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষাও এই ফ্রি উইল।

চারপাশে যথেষ্ট পরিমাণ প্রমাণ,যথেষ্ট পরিমাণ সাক্ষ্য-উপাত্ত,তারপরও "আমি মনে করি","আমার মনে হয়","আমি এটা বিশ্বাস করি" - এই সব কিছুর মূলে হল এই ফ্রি উইল।

এমন কী,mutual কোন conversation-য়ের সময়,সব যুক্তিপ্রমাণ আগাগোড়া নিজের মতের বিরুদ্ধে হলেও "আমি মানব না",এটাও ফ্রি উইল।

আচ্ছা,চোর-ডাকাতেরও তো ফ্রি উইল আছে,তাই না?

এমন কী,তাদের চুরি-ডাকাতের পিছনেও কিন্ত শক্ত লজিক আছে। ভেবে দেখুন,তার মা অসুস্থ,তার স্ত্রী কাজ করতে করতে মৃতপ্রায়,তার বাচ্চা ক্ষুধার জ্বালায় কাঁদছে। সে হাত পেতেও আপনার কাছ থেকে সাহায্য পাচ্ছে না। এ মুহূর্তে সে আপনার সবকিছু কেড়ে নেবে,এটাই কি যুক্তিযুক্ত নয়?

তাহলে এটা কেন আমরা মানি না? কেন চোর-ডাকাতকে হাতের কাছে পেলে,পিটিয়ে হাড্ডি গুঁড়িয়ে দেই আমরা???

কারণ,এটা নৈতিকতার বিরুদ্ধে। অতএব,সে যা করছে,এটা তার ফ্রি উইল,তার নিজস্ব ইচ্ছা।

আল্লাহ খুব ভাল করেই জানেন,দূর্বল মূহূর্তে,দূর্বল সময়ে,মানুষ এই ফ্রি উইলের অনুসরণ করবে,সকল নৈতিকতাকে অকাতরে বিসর্জন দেবে। তাই সবার আগে তিনি বলেছেন আত্মসমর্পণ করতে। এটা মেনে নিতে,তার একজন প্রভু আছেন,এবং সেই প্রভুর ইচ্ছার বিরুদ্ধে গেলে সে হয়তো সাময়িক সময়ের জন্য রক্ষা পাবে,কিন্ত at the long run,তার জন্য অপেক্ষা করছে ভয়াবহ বিপদ।

অর্থ্যাৎ,একজন মুসলিম,সবার আগে,তার ফ্রি উইলকে,আল্লাহর কাছে বিসর্জন দেবে;সকল দূর্বল মুহূর্তে,সকল দূর্বল ক্ষেত্রে,সে নিজের ফ্রি উইলের উপর কুরআন আর হাদীসের নির্দেশকে প্রাধান্য দেবে।

এখন,আমরা বলছি,আমরা মুসলিম,আমরা আত্মসমর্পণকারী। অন্যদিকে,কুরআন হাদীস না মেনে,নিজের খেয়াল-খুশিমত,যা মনে আসে তাই করে যাচ্ছি,অর্থ্যাৎ,ঘুরেফিরে সেই ফ্রি উইলেরই অনুসরণ করে যাচ্ছি।

"মুসলিম" হিসেবে দাবী করাটা কি আমাদের মানাচ্ছে???

"শবে বরাত"-এর রাতের অনুভূতি

স্ট্যাটাস ১ :

এশার নামায পড়তে বের হলাম। চোখে ধান্ধা লাগল,আজকে ঈদ না কী???

দোকানপাট বন্ধ,ফলে রাস্তাঘাট অন্ধকার, আর রাস্তায় প্রচুর পরিমাণ পাঞ্জাবি পরিহিত যুবকের আনাগোনা।

এদের মাঝে ৫ বছরের পুরনো টিশার্ট আর ট্রাউজারে নিজেকে বেমানানই লাগছিল।

স্ট্যাটাস ২ :

খবর শুনতে টিভি খুললাম। আবার ধান্ধা লাগল,আজকে ঈদ না কী???

সংবাদ পাঠকের গায়ে সুদৃশ্য পাঞ্জাবি!!!

সর্বশেষ স্ট্যাটাস :

চ্যানেল ঘুরাতে ঘুরাতে বিটিভিতে আসলাম, এবং বিটিভির ঐতিহ্য মিলাদ মাহফিল চলতে দেখলাম।

মন্তব্য :

আচ্ছা দিনে রাতে ১৭ রাকআত নামায যেন কী? ফরয না???

সৌদি আরবের একজন মানুষকে নিয়ে আসলে,আমার চরম সন্দেহ আছে,উনি মানবেন কী না,বাংলাদেশ মুসলিম অধ্যুষিত দেশ।

আল্লাহর অসীম রহমত

গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন ওষুধ কোম্পানির এক শীর্ষ কর্মকর্তা ২০০৩ সালে স্বীকার করেন,৯০ শতাংশ ওষুধ কাজ করে মাত্র ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে।

এর মানে,

চিকিৎসকদের নির্দেশিত অধিকাংশ ওষুধ অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কার্যকর হয় না!!!

সূত্র : স্বাস্থ্যবটিকা, প্রথম আলো,২২ জুন ২০১৩।

সুবহানআল্লাহ।

আমরা কি এইটুকুও চিন্তা করতে পারি,কী সুবিশাল রহমতের সাগরে আমরা ডুবে আছি?

"অতএব হে জ্বীন ও মানুষ! তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে?" (সূরা আল ওয়াকিয়াহ, আয়াত ৩৪)

মনে রাখুন

"যারা আপনার জন্য আজকে রটনা ছড়াচ্ছে,মনে রাখবেন তারাই একদিন আপনাকে নিয়ে রটনা ছড়াবে।

যারা আপনার কাছে আজকে অন্যের গীবত করছে, মনে রাখবেন তারাই একদিন অন্যের কাছে আপনার গীবত করবে।"

- ইমাম শাফিঈ রাহিমাহুল্লাহ (ইমাম আয যাহাবী রাহিমাহুল্লাহর "সিয়ার আলম আল নুবালা" থেকে)

শারীরিক আকর্ষণই কি মুখ্য?

"৪৩ হোক বা ৫৩,আপনাকে লাগবে ৩৩"!!!

অবশ্যই কোন একটা মেয়েলী ফেয়ারনেস ক্রিমের অ্যাড।

আমার নানীর বয়স প্রায় ৬০,আম্মুর ৪৫+।

ওনাদের দেখতে কেমন লাগে,তা নিয়ে আমার বা আমার পরিবারের কারোর কোন মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না।

কাদের কাছে ওনাদের "লুক" একটা matter হতে পারে?

যাঁদের কাছে তাঁরা অপরিচিত, যাঁরা ওনাদের চেনেন না,তাঁদের কাছেই ওনাদের "বুড়ি বুড়ি" লাগছে, না ইয়াং লাগছে।

এখন একটা প্রশ্ন করি।

অপরিচিত মানুষদের যাঁরা নিজেদের জ্ঞান,প্রজ্ঞা আর বিদ্যা দিয়ে আকর্ষণ করেন,তাঁদের আমরা শ্রদ্ধা করি,সম্মান দিয়ে তাঁদের নাম উচ্চারণ করি।

আর যারা শরীরের নানা আঁকিবুকি দিয়ে মানুষদের আকর্ষণ করতে চায়,তাদের প্রতি আমরা কী দৃষ্টিতে তাকাই,আশা করি সেটা আর এখানে লিখতে হবে না।

এই ফেয়ারনেস কোম্পানিগুলো,বিউটি পার্লারগুলো,আমাদের বোনদের কোন দিকে ডাকছে,তাঁরা কি একটু চিন্তা করে দেখবেন?

স্তব্ধ করে দেওয়ার মত একটি হাদীস............

একটা হাদীস শুনবেন?

ইবনে উমার রাযিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে একজন বেদুইন এসে বলল,"ইয়া রাসূলুল্লাহ,আমার স্ত্রী একটা কাল ছেলে প্রসব করেছে, অথচ আমার পরিবারে কাল কেউ নেই।"

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, "তোমার কি উট আছে?"

বেদুইন : "জ্বি আছে।"

রাসূল (সা.) : "সেগুলো কী রঙের?"

বেদুইন : "লাল।"

রাসূল (সা.) : "ওগুলোর মধ্যে কোনটা কি কাল রঙের?"

বেদুইন : "না ইয়া রাসূলুল্লাহ।"

রাসূল (সা.) : "আচ্ছা,খয়েরি রঙের কোনটা আছে না কী?"

বেদুইন : "জ্বি আছে।"

রাসূল (সা.) : "তো তোমার কী মনে হয়,এটা কীভাবে হল?"

বেদুইন : "মনে হয় এটা বংশানুক্রমিক কিছু।"

রাসূল (সা.) : "আমারও মনে হচ্ছে তোমার ছেলের গায়ের রঙ বংশানুক্রমিক কিছু।"

[সুনান ইবনে মাজাহ,কিতাবুন নিকাহ,হাদীস নম্বর ২০০৩,সনদ হাসান]

হাদীসটা পড়ার পর আপনার মনের কী ফিলিংস এসেছে জানি না।

আমি আমার ফিলিংসটা শেয়ার করি।

আল্লাহু আকবার।

আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ।

মুসলিম আহলে কিতাব বিবাহ

গতকাল থেকে বেশ কয়েকটা পোস্ট দেখতে পাচ্ছি,যাতে মুসলিম পুরুষের খ্রিস্টান মহিলাকে বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।

দেখে মনে হচ্ছে বিষয়টা অনেকেই জানেন না।

In general, মুসলিম পুরুষ ও নারী, উভয়কেই মুসলিম নারী ও পুরুষদের বিয়ে করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং মুশরিকদের বিয়ে করা তাদের জন্য হারাম ঘোষণা করা হয়েছে।

"আর তোমরা মুশরেক নারীদেরকে বিয়ে করোনা, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্য মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরেক নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভালো লাগে। এবং তোমরা (নারীরা) কোন মুশরেকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরেকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা দোযখের দিকে আহ্বান করে, আর আল্লাহ নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহ্বান করেন জান্নাত ও ক্ষমার দিকে। আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ বাতলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।" [সূরা আল-বাকারাঃ ২২১]

কিন্ত তারপরেও,as an exception, মুসলিম পুরুষেরা আহলে কিতাব নারীদের without conversion বিয়ে করতে পারে,যদি তারা সতী হয় (সোজা বাংলায়, যদি তারা বিয়ের আগে কোন relationship বা fornication-য়ে জড়িত না থাকে)।

"আজ তোমাদের জন্যপবিত্র বস্তুসমূহ হালাল করা হল। আহলে কিতাবদের খাদ্য তোমাদের জন্যে হালাল এবং তোমাদেরখাদ্য তাদের জন্য হালাল। তোমাদের জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে, যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর তাদেরকে স্ত্রী করার জন্যে, কামবাসনা চরিতার্থ করার জন্যে কিংবা গুপ্ত প্রেমে লিপ্ত হওয়ার জন্যে নয়। যে ব্যক্তি বিশ্বাসের বিষয় অবিশ্বাস করে, তার শ্রম বিফলে যাবে এবং পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।" [সূরা আল-মায়িদাহঃ ৫]

কিন্ত মুসলিম নারীরা আহলে কিতাব পুরুষদের without conversion বিয়ে করতে পারবে না।

আশা করি বিষয়টা সকলের কাছে পরিষ্কার হবে ইনশাআল্লাহ।

ভালবাসার প্রকাশ হবে ঠিকই,অতিরঞ্জন হবে না,অতিরঞ্জন হবে না,অতিরঞ্জন হবে না

আমরা ইসলামকে ভালবাসি। আমরা জানি,মানি আর গভীরভাবে বিশ্বাস করি,ইসলাম এই দুনিয়ার একমাত্র সত্য ছিল,আছে আর সব সময় থাকবে।

তাই যখন কেউ ইসলামের নামে,ইসলামের ১৪৫০ বছরের ইতিহাসে যা ছিল না,তা জায়েজ করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে,আমরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠি। প্রতিক্রিয়া দেখাই,সমালোচনায় মুখর হই।

এটা অস্বাভাবিক না,একেবারেই স্বাভাবিক।

কিন্ত আমাদের মাথায় রাখতে হবে,সমালোচনা করতে গিয়ে,প্রতিক্রিয়া দেখাতে গিয়ে,আমরা যেন কুরআন আর হাদীসে যা আছে,আল্লাহ এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেভাবে নির্দেশ দিয়ে গেছেন,যে বাউন্ডারি দিয়ে দিয়েছেন,তার বাইরে চলে না যাই।

আজকে মুসলিমদের মাঝে যে দলাদলি,যে বিভক্তি,তার শুরুটা হয়েছিল ঠিক এইভাবে,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চেয়ে ইসলামকে দুই আঙ্গুল বেশি বুঝতে গিয়ে।

সীরাতে দেখা যায়,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুব ভালভাবে তাঁর আশেপাশের প্রত্যেকটা মুনাফিককে জানতেন,চিনতেন। যেখানে মুনাফিকদের কল্লা উড়িয়ে দেওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক,সেখানে প্রকাশ্যে একটাবারের জন্যও তিনি কোন মুনাফিককে "হে মুনাফিক" বলে সম্বোধন করেন নি।

আর সহীহ মুসলিমে বর্ণিত তাঁর সরাসরি নির্দেশ তো আছেই,কোন মুসলিম যেন অন্য কোন মুসলিমকে "হে কাফের" বলে সম্বোধন না করে।

শুধুমাত্র এই একটা নির্দেশ না মানার কারণে,গণহারে মুসলিমদের "কাফির" ট্যাগ দেওয়ার কারণে একটা দলের জন্ম,যাঁদের সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভবিষ্যৎবাণী,তীর যেমন ধনুক থেকে বেরিয়ে যায়,তারাও তেমনি ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে। সেই থেকে তাদের নাম "খারেজি"।

অবশ্যই আমরা প্রতিক্রিয়া দেখাব,সমালোচনা করব,এটা ঈমানের দাবি,করতেই হবে।

কিন্ত,খারেজিদের মত,বা অন্য সেক্টরগুলোর মত,ইসলামকে আল্লাহ আর রাসূলের চেয়ে দুই আঙ্গুল বেশি বোঝার চেষ্টাটুকু বাদ দিয়ে।

পিএন জাংশন ও আমরা

পিএন জাংশন (PN Junction),একপাশে পজিটিভ আয়ন বা হোল,অন্যপাশে নেগিটিভ আয়ন বা ইলেকট্রন,মাঝখানে ডিপ্লেশন রিজিওন,যেন ইলেকট্রন হোলের সাথে মিশতে না পারে।

এই পিএন জাংশন ততক্ষণই কাজ করে,যতক্ষণ ডিপ্লেশন রিজিওন exist করে।

আর যখন ডিপ্লেশন রিজিওন ভেঙে যায়,হুড়মুড় করে ইলেকট্রন এন টাইপ থেকে পি টাইপে গিয়ে হোলের সাথে মিশে যায়।

ফলাফল : পিএন জাংশনের ব্রেকডাউন,তথা ধ্বংস।

নারী-পুরুষের পারস্পারিক সম্পর্কটাও ঠিক এই পিএন জাংশনের মত।

যার মাঝে আল্লাহর দেওয়া কিছু বিধান ঠিক ডিপ্লেশন রিজিওনের মত কাজ করে।

যতদিন মানুষ এই বিধানগুলো মেনেছে, ততদিন সমাজ ঠিকমত চলেছে।

এখন আমরা, এই অতিশয় অহংকারী প্লাস নির্বোধ মানবজাতি, আল্লাহর দেওয়া ডিপ্লেশন রিজিওন ভেঙে ফেলেছি।

ফলাফল : একের পর এক পরিমলের আবির্ভাব।

পরিমল নাম্বার টু তো গতকালই আবির্ভূত হয়েছেন।

এখন পরিমল নাম্বার থ্রির জন্য অপেক্ষা।

তবে ভাল করেই জানি, বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না।

ডিপ্লেশন রিজিওন ভেঙে গেছে, তাকিয়ে তাকিয়ে এই সমাজটার ব্রেকডাউন দেখে যাচ্ছি।

Friday, June 14, 2013

আত্মকথা

প্রথমেই বলে নিই,এই লেখাটা নিতান্তই ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ। তেমন কোন স্পেসিফিক মেসেজ দেবার চেষ্টা করি নি এখানে। তাই যাঁদের চোখে এই লেখাটা পড়বে, তাঁরা অনায়াসে স্কিপ করে যেতে পারেন। 

 বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম


"অপদার্থ" শব্দটার একটা বাস্তব উদাহরণ হিসেবে আমি নিজেকে বেশ যোগ্য বলে মনে করি। আমার খুব ক্লোজ মানুষ যাঁরা আছেন, তাঁরা বেশ তীব্রভাবেই আমার এই ধারণার সাথে একমত পোষণ করেন।
 
বিশ্বাস করুন,একটুও বাড়িয়ে বলছি না! আমি একটা লিস্ট দিচ্ছি,এটা পড়লেই বুঝতে পারবেন, আমার দাবি কতটুকু সত্যি!

১) আমি খুবই নাদুসনুদুস মাশাআল্লাহ (খেতে খুবই পছন্দ করি)। গোলগাল চেহারা, চোখে হাই পাওয়ারের চশমা। বর্তমান যুগের স্টাইলের সাথে কোনভাবেই নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারি না।

২) যে কোন খেলাধুলায় আমি ডাব্বা। ফুটবলে কিক দিলে যে দিকে মারি,বল তার উল্টো দিকে চলতে শুরু করে। ক্রিকেটে ব্যাট করতে নামলে গোল্ডেন ডাক তো অবধারিত! আর বল করলে তা ব্যাটসম্যানের মাথার এত উঁচু দিয়ে যায়,৮ ফুট লম্বা কোন ব্যাটসম্যানকে নামালেও সে ওটা মারতে পারবে কী না সন্দেহ!

৩) আমি মাইল্ড অ্যাজমা রোগী। পান থেকে একটুখানি চুন খসলেই অসুস্থ হয়ে পরি। আর যা তা অসুস্থ না,একদম গা কাঁপিয়ে জ্বর! ফলাফল : বন্ধুরা নানা জায়গায় ঘুরতে যায়,আম্মু আমাকে কোথাও যেতে দেন না,আমি অসুস্থ হয়ে পড়ব,এই ভয়ে!

৪) এখন তো নাচগান না শেখা  বা মিউজিক্যাল কোন ইন্সট্রুমেন্ট না চালাতে জানা একটা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে! সেখানে আমি নাচ বা গান,এদের ক খ গ ঘ-ও জানি না। আর কোন মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট জীবনে হাতে ধরেও দেখি নি!

 ৫) এই যুগের তরুণ তরুণী প্রেম করবে না,এটা তো এখন কল্পনারও বাইরে! সেখানে গার্লফ্রেন্ড নামক কেউ কখনো আমার জীবনে আসে নি।


৬) উপরের সবকিছু পড়ে নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে, আমি একজন প্রথম শ্রেণীর আঁতেল, সারাক্ষণ পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকি,পরীক্ষায় ফার্স্ট সেকেন্ড থার্ড হওয়া আমার কাছে পানিভাত! অতি দু:খের সাথে জানাচ্ছি,পড়াশুনার ব্যাপারে আমি বিশাল ফাঁকিবাজ, আর টেনেটুনে পরীক্ষাগুলোয় পাস করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য!

আমি যদি অপদার্থ না হই,অপদার্থ আর কে,বলুন?


মাঝেমাঝে খুবই হতাশ হয়ে যেতাম। চিন্তা করতাম, মানুষ তো কোন না কোন বিষয়ে পারদর্শী হয়। কেউ পড়াশুনায় বস,কেউ গান করে,কেউ নাচে,কেউ খুব সুন্দর গিটার বাজাতে পারে,কেউ খুব ভাল ক্রিকেট ফুটবল খেলে,কেউ প্রেম করে। আমি কী পারি? কিছুই পারি না,কিছুই না! আমার জীবনের মানে কী তা হলে?

আলহামদুলিল্লাহ, জীবনের একটা বাঁকে এসে,আল্লাহর অশেষ দয়া আর রহমতে, ইসলাম সম্পর্কে জানতে শুরু করলাম। একে একে অজানা সব তথ্য আমার সামনে উন্মোচিত হতে শুরু করল।

জানলাম, নাচগান ক্রিকেট ফুটবল প্রেম ভালবাসা পরীক্ষায় ফার্স্ট সেকেন্ড,এই সব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লক্ষ্যের জন্য আমার জন্ম হয় নি। আমাকে সৃষ্টি করা হয় নি এ জীবন নিয়ে পরে থাকার জন্য,এ জীবনে কী পেলাম আর কী না পেলাম, কী করলাম আর কী না করলাম, তার হিসাব নিকাশ কষার জন্য। আমাকে সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য আরো অনেক বড় কিছু। এত বিশাল সে লক্ষ্য,ইহলৌকিক কোন স্ট্যান্ডার্ড ধরে তার হিসাব করা সম্ভব না।


আমি জ্বিন ও মানুষকে কেবল এ উদ্দেশ্যেই সৃষ্টি করেছি যে,তারা শুধুমাত্র আমারই ইবাদত করবে। আমি তাদের কাছ থেকে জীবিকা চাই না আর এও চাই না যে,তারা আমার আহার্য যোগাবে। (সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত ৫৬-৫৭)

 ড. বিলাল ফিলিপসের ভাষায় বলি,

আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। তাঁর কোন কিছুরই দরকার নেই,কোন কিছুই দরকার নেই। আমাদের ইবাদতের বিন্দুমাত্র প্রয়োজন তাঁর নেই। শুধুমাত্র একটা কারণেই তিনি আমাদের তাঁর ইবাদত করতে বলেছেন, কারণ একমাত্র তাঁর ইবাদতই "মানুষ" হিসেবে আমাদের পূর্ণতা দান করতে পারে। সর্বশ্রেষ্ঠ চরিত্রের অধিকারী হওয়া একমাত্র তাঁর ইবাদতের মাধ্যমেই  সম্ভব।


সুবহানআল্লাহ!


ইহলৌকিক আর কোন লক্ষ্য, আর কোন উদ্দেশ্য, এই উদ্দেশ্যকে অতিক্রম করতে পারে?

আলহামদুলিল্লাহ, এখন আর হতাশা আসে না। কোন ক্ষোভ,দু:খও না।

 যেখানে আল্লাহকে সন্তষ্ট করাই এই ক্ষুদ্র জীবনটার একমাত্র লক্ষ্য,হতাশা, ক্ষোভ, দু:খ,এগুলোকে মনে স্থান দেওয়ার সময়টাই বা পাই কোথায় বলুন?

যদি আল্লাহকে সন্তষ্ট করাই আপনার দৈনন্দিন কাজের প্রথম উদ্দেশ্য হয়,তাহলে আর কোন কিছু নিয়েই আপনার চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। - জোহরা সরওয়ারী, ইনস্ট্রাক্টর, ইসলামিক অনলাইন ইউনিভার্সিটি।