Sunday, September 29, 2013

সাঈদ ইবনে আবী ওয়াক্কাসকে উদ্দেশ্য করে উমার রাযিআল্লাহু আনহুর নির্দেশ

"আমি জোর নির্দেশ দিচ্ছি,প্রতিটি ক্ষেত্রে,তুমি এবং তোমার অধীনস্ত সৈন্যরা যেন আল্লাহকে ভয় করে। কারণ শত্রুদের মুখোমুখি হবার সবচেয়ে ভাল উপায় এবং যুদ্ধে সবচেয়ে ভাল পরিকল্পনা হচ্ছে আল্লাহর ভয়। আমি আদেশ দিচ্ছি,তুমি এবং তোমার সৈন্যরা যেন পাপের ব্যাপারে তোমাদের শত্রুদের চেয়ে বেশি সতর্ক থাকে,কারণ কোন সৈন্যদলের পাপ তাদের জন্য তাদের শত্রুদের চেয়ে বেশি ভয়ংকর। আর মুসলিমরা শুধুমাত্র একটি কারণেই আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত হয়,আর সেটা হল তাদের শত্রুদের আল্লাহর প্রতি অবাধ্যতার কারণে।"

- উমার রাযিআল্লাহু আনহু (সাঈদ ইবনে আবী ওয়াক্কাসকে উদ্দেশ্য করে)

["আল-ফারূক উমার ইবনে আল-খাত্তাব",মুহাম্মাদ রাশিদ রিবা,পৃষ্ঠা ১১৯]

Friday, September 27, 2013

অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদেশ

☛ সহীহ মুসলিম, হাদীস #৪৫৫৪

হুদাইফাহ রাযিআল্লাহু আনহু একটি দীর্ঘ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন,"ভবিষ্যতে এমন কিছু শাসক আসবে যারা না আমার নির্দেশ অনুসরণ করবে,না অনুসরণ করবে আমার সুন্নাত। এমন কী তাদের মধ্যে এমনও লোক থাকবে যাদের দেহ থাকবে মানুষের,কিন্ত মন হবে শয়তানের।" হুদাইফাহ রাযিআল্লাহু আনহু প্রশ্ন করলেন, "ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমি যদি তাদের পাই,আমি কী করব?" রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,"তুমি শাসকের কথা শুনবে এবং তার আনুগত্য করবে। এমন কী সে যদি তোমার পিঠে চাবুক দিয়ে পেটায় আর তোমার ধনসম্পদ বাজেয়াপ্ত করে,তারপরও তুমি তার কথা শুনবে এবং তার আনুগত্য করবে।"

☛ সহীহ মুসলিম, হাদীস #৪৫২৪

আবু হুরাইরাহ রাযিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,"দুর্দশা এবং সমৃদ্ধিতে,সুখে এবং দু:খে,এমন কী যখন অন্য কাউকে তোমাদের চেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়,সে সময়েও শাসকের আনুগত্য করা তোমাদের জন্য ফরয।"

☛ সহীহ মুসলিম, হাদীস #৪৫৫১

আলকামাহ ইবনে ওয়ালি আল-হাদরামী তাঁর পিতা বর্ণনা করেন, সালামাহ ইবনে ইয়াজিদ আল-জুয়াফী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেন, "ইয়া রাসূলুল্লাহ। যদি আমরা এমন শাসকের সম্মুখীন হই,যারা আমাদের কাছে এটাই দাবি করে যে আমরা যেন তাদের প্রতি আমাদের দ্বায়িত্ব পালন করি,কিন্ত তারা আমাদের প্রতি তাদের দ্বায়িত্ব পালন করে না,এদের ব্যাপারে আপনি কী মনে করেন? সে অবস্থায় আপনি কী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমাদের আদেশ করেন?" রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন উত্তর দেওয়া থেকে বিরত থাকলেন। সালামাহ আবার তাঁকে (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই প্রশ্ন করলেন। তিনি আবারও উত্তর দেওয়া থেকে বিরত থাকলেন। সালামাহ আবারও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একই প্রশ্ন করলেন। দ্বিতীয় অথবা তৃতীয়বার,আশআত ইবনে কায়েস (বুঝতে পারলেন যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উত্তর দেওয়ার জন্য জোর করা হচ্ছে, যার জন্য তিনি) সালামাহকে টেনে এক পাশে সরিয়ে আনলেন এবং বললেন, "তাদের কথা শুনবে এবং তাদের আনুগত্য করবে। কারণ তাদের বোঝা তাদের আর তোমাদের বোঝা তোমাদের (অর্থ্যাৎ তারা তাদের দ্বায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে এবং তোমরা তোমাদের দ্বায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে)।"

Courtesy : My best friend Shaykh Abid.


Tuesday, September 24, 2013

কেনিয়া (এবং পাকিস্তানে) অমুসলিমদের উপর সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিক্রিয়া - শায়খ ইয়াসির কাযী

কেনিয়ায় ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসবাদী হামলাটি নব্য-খারেজী সংগঠনগুলোর সত্যিকার ঘৃণ্য চরিত্রই আরো একটাবার ফুটিয়ে তুলেছে।

এই রক্তপাতের মাধ্যমে তারা আসলে কী পাবে বলে আশা করে? কোন প্রভু তাদেরকে এটা করতে আদেশ করেছেন? নিরীহ নিরস্ত্র মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করার এই পন্থা তারা কোন বইয়ে খুঁজে পেয়েছে? যখন তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মায়ের নাম জিজ্ঞাসা করে মানুষকে বিচার করছে,আর তাকেই মেরে ফেলছে যে তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মা) নাম জানে না,এর মাধ্যমে তারা কোন নবীর মর্যাদা রক্ষার চেষ্টা করছে?

তারা কি একটাবারও এটা বুঝতে চেষ্টা করেছে যে,তাদের প্রভু,তাদের ঐশীগ্রন্থ,আর তাদের নবী,প্রত্যেকে তাদের পাগলামি আর উন্মাদনা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ও পবিত্র?

যারা এই ঘটনার সাথে নানা পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে তারা সম্পূর্ণরূপে বিষয়টা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। এটা সেই সাদা-কালো মানসিকতা যেটা এই রকম উন্মাদনাকে একদম প্রথমেই উসকিয়ে দেয়।

আমরা পশ্চিমা শাসকদের নানা অন্যায়-অবিচারের বিপক্ষে,কিন্ত মুসলিমদের এ রকম কার্যকলাপ কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কারণ মুসলিম হিসেবে,আমাদের প্রত্যেকের দ্বায়িত্ব ইসলাম সম্পর্কে ভালভাবে জানা,আর আমাদের কাজের মাধ্যমে আমাদের বিশ্বাসটাকে আশেপাশের লোকেদের সামনে তুলে ধরা।

এই জঙ্গিদের কার্যকলাপ থেকে আমাদের বিশ্বাস,আমাদের ধ্যানধারণা,আমাদের ইসলাম,সম্পূর্ণরূপে মুক্ত ও পবিত্র।

- শায়খ ইয়াসির কাযী

[যদিও শায়খ তাঁর লেখায় উল্লেখ করেন নি,কিন্ত এরই সাথে,সম্প্রতি পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় গির্জায় ভয়াবহ হামলার কথাটাও এখানে উল্লেখ করতে চাই।

হ্যাঁ,এই মানুষদের বেশিরভাগই অমুসলিম,কিন্ত কুরআনের কোন আয়াতে বা কোন হাদীসে লেখা আছে যে যে অমুসলিমেরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে কোন চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত নেই,অমুসলিম শাসক গোষ্ঠীর চক্রান্তের প্রতিশোধ নিতে তাদের ধরে ধরে মেরে ফেলতে?

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে গেছেন,“যদি কোন ব্যক্তি কোন মু’আহিদ (অমুসলিম)-কে হত্যা করে তবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবেনা। যদিও চল্লিশ বছরের দূরত্ব থেকেই জান্নাতের ঘ্রাণ পাওয়া যায়।”

এই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোর সদস্যদের ঈমান নিয়ে এতটুকু প্রশ্ন তোলা যায় না। শুধু এটাই আফসোস হয়,এদের এই ঈমান ইসলামের কোন কাজে আসে না,বরং বিশ্বব্যাপী অমুসলিমদের মধ্যে ইসলামের প্রতি ঘৃণাই ছড়িয়ে দেয়।]

Friday, September 20, 2013

চলো পাল্টাই

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে হিজাব নিষিদ্ধ করার পর মুসলিমদের আবার ঐক্যবদ্ধ হওয়ার একটা প্রবল সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। প্র্যাকটিসিং মুসলিমরা তো আছেনই,মডারেট মুসলিমদের অনেকেই ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই ঘৃণ্য পদক্ষেপের বিরুদ্ধে লিখছেন,প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছেন। সকল প্রশংসা আল্লাহর। আসলেই শয়তানের চক্রান্ত দুর্বল,আর আল্লাহই প্রকৃত কৌশলী।

এবার আমি একটু অন্যদিকে দৃষ্টি ফেরাই।

একটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশে,একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি এত বড় ঘটনা ঘটানোর যে সাহসটা পেল,এটার পিছনে কি আমরাই দায়ী না?

আমাদের early generation,অর্থ্যাৎ আমাদের বাবা-মা,ছোটবেলা থেকে আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেন,"তোমাদের অনেক বড় হতে হবে,এদের এদের মত!" আর উদাহরণ হিসেবে উঠে আসে কিছু প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সেক্যুলারদের নাম!

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামায,যে মুসলিম আদায় করে না,সহীহ ধারণা মতে সে মুসলিমই না! আর এক ওয়াক্ত ফরয নামায ইচ্ছাকৃতভাবে না পড়া হল কুফরী। কিন্ত আমাদের আশেপাশের "মুসলিম"-দের দেখলে মনে হয়,এই পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয তো দূরের কথা,সুন্নাতও না,নফল! মন চাইলে পড়ব,মন না চাইলে পড়ব না।

ইসলামে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন কী মসজিদ নামায পড়ে বের হওয়ার সময়েও যেন পুরুষ ও মহিলা সাহাবীরা একত্রে না মিলেমিশে চলেন,তার আদেশ জারি করেছিলেন। আর বর্তমানের ইয়াং জেনারেশন মুসলিমরা তো মনে হয় ফ্রি মিক্সিংকে পাপ তো দূরের কথা,মাকরূহও বলে মনে করেন না!

আর ভাইয়েদের কাছে তো নিয়মিত শেভ না করলে আর গোড়ালীর নিচে প্যান্ট না ঝুলালে তো নিজেদের স্মার্টই মনে হয় না! মডারেট আপুদের কথা আর কী বলব? যাঁরা হিজাব করেন না তাঁদের কথা না-ই বলি,যাঁরা হিজাব করেন,তাঁদের মধ্যে এমন একটা দলের উদ্ভব ঘটেছে যে কোন একটা উৎসব বা ফ্যামিলি ফাংশন সামনে আসুক,আর কী চাই,হিজাবের থোড়াই কেয়ার করে মেকআপ দিয়ে সেই ফাংশনে "সক্রিয়ভাবে" অংশগ্রহণ করেন,আর ফেসবুকে সেই ছবি আপলোড দেন! আল্লাহু আকবার!!!

এই লিস্ট চলতেই থাকবে,চলতেই থাকবে,শেষ কখন হবে তা একমাত্র আল্লাহই বলতে পারবেন।

যাই হোক,এইভাবে নিজেদের স্বকীয়তাকে বিসর্জন দিয়ে,নিজেদের "আধুনিক" হিসেবে প্রমাণ করার প্রাণান্তকর চেষ্টায় আমরা লিপ্ত থাকব,আর ইসলামের শত্রুরা বসে বসে আঙ্গুল চুষবে???

উমার রাযিআল্লাহু আনহু ঠিক এই আশংকাই ব্যক্ত করেছিলেন এভাবে,

"আমি সেই দিনের ভয় করি,যেদিন কাফিররা তাদের মিথ্যা নিয়ে গর্বিত হবে,আর মুসলিমরা তাদের বিশ্বাসের জন্য লজ্জিত হবে।"

ভাই/আপু,সত্যি সত্যি চান,ইসলাম আবার দুনিয়া জুড়ে প্রতিষ্ঠিত হোক? নির্বিঘ্নে প্রতিটি মুসলিম তাদের নিজ নিজ ritual বাধাহীনভাবে পালন করুক?

আসুন নিজেদের পাল্টাই। ইসলামকে বুঝি। সঠিকভাবে ইসলাম পালন করি,১০ ভাগ ইসলাম নয়,২০ ভাগ নয়,৫০ ভাগ নয়,১০০ ভাগ ইসলাম!

দেখবেন,আল্লাহই তাঁর অসীম দয়া আর করুণায় আমাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে পরিবর্তন করে দেবেন। তিনিই সর্বশক্তিমান,মহা প্রতাপশালী,প্রজ্ঞাময়। আমরা তাঁর কাছ থেকেই এসেছি,আর তাঁর কাছেই আমাদের প্রত্যার্পন।

যেমনটা বলেছেন শাইখ আবদুর রাহীম ম্যাককার্থি,

"আমরা শাইখ আল-আলবানীর কাছে ইমাম হাসান আল-বান্নার বলা একটি কথা শিখেছিলাম --

আপনাদের অন্তরের জগতে ইসলামের শাসনকে প্রতিষ্ঠা করুন, তাহলে আল্লাহ সারা পৃথিবীতে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠিত করে দেবেন।"

Thursday, September 19, 2013

আমি সালাফী বলছি

আমার ইসলামপূর্ব জীবনে,আমি বেশ "পপুলার" ছিলাম। যে কোন মানুষের সাথে,প্রায় সহজভাবেই মিশে যেতে পারতাম।

এর অন্যতম একটা কারণ ছিল,সবার প্রায় সব কথার সাথে "হ্যাঁ-হ্যাঁ" করার একটা বিশেষ টেকনিক!

দেখা গেল,হয়ত কারো কোন কথার সাথে আমি ভিতরে ভিতরে একমত না,কিন্ত "থাক,কী হবে বলে,শুধুশুধু একটা তর্ক শুরু হবে (আর আমার 'পপুলারিটি' নষ্ট হবে)",এই রকম একটা চিন্তা মাথায় কাজ করত।

ফলাফলঃ আমার পপুলারিটি বেশ ভালভাবেই বজায় থাকত!

আলহামদুলিল্লাহ,জীবনের একটা পর্যায়ে এসে আল্লাহ ইসলাম বোঝার তাওফীক দিলেন। আর কোন বিদআতীমার্কা ইসলাম না,একদম সলফে সালেহীনের ইসলামের সংস্পর্শে চলে এলাম।

আর এই ইসলাম বুঝে অবাক হয়ে গেলাম!

সলফে সালেহীনরা,যেটায় একমত হতেন না,সেটাতে চুপ করে তো থাকতেনই না,বরং যারা বিদআতী,বরং "জাজমেন্টাল" হয়ে তাদের মুখের উপর চ্যাটাং-চ্যাটাং করে বলেই দিতেন যে,তাদের পথ ভুল!

বর্তমানে,একটা নতুন ধারার ইসলাম প্রচার চলছে,যার মূলমন্ত্র হল,"আসলে সবাই ঠিক। আসুন জাজমেন্টাল না হয়ে নিজেদের মধ্যেকার 'সামান্য' কিছু পার্থক্য বাদ দিয়ে 'এক উম্মাহ' হয়ে যাই।"

মানে,যারা মিলাদ পড়ে তারা ঠিক,সব পীরপূজারীও ঠিক,সব মাজারপূজারীও ঠিক,যারা "ফানাফুল্লাহ"-য় বিশ্বাস করে তারাও ঠিক!

আল্লাহু আকবার!!!

সরি ভাই,আমি এই ইসলাম মানতে পারব না। আমার কাছে বিদআত বিদআতই,মাজারপূজা মাজারপূজাই,পীরপূজা পীরপূজাই! আর যে সব বই এইগুলা প্রমোট করে,সেইগুলা বস্তাপঁচা আবর্জনা ছাড়া আর কিছুই না!

আমি জানি,এই পোস্টের জন্য হয়ত অনেকের কাছে আমার "পপুলারিটি" কমে যাবে,কিন্ত সরি,"পপুলারিটির" কোন ভ্যালু আমার কাছে এখন আর নাই আলহামদুলিল্লাহ!

কারণ আমি সলফে সালেহীনদের একজন অনুসারী।

আমি একজন সালাফী।

“তুমি অবশ্যই সলফে সালেহীনের বর্ণনা ও কথা-বার্তাকে দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করো যদিও মানুষ তোমাকে প্রত্যাখ্যান করে। অন্যান্য মানুষের রায় বা অভিমত তা যতই সুন্দর ও সাজানো গুছানো হোক না কেন, তথাপি তুমি তা গ্রহণ ও অনুসরণ থেকে পূর্ণ সাবধান ও দূরে থেকো। তাহলে এক পর্যায়ে এ বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়ে যাবে যে, তুমি যে পথের উপর রয়েছ সেটাই হলো সরল সঠিক পথ।” - ইমাম আল আওযা‘য়ী।

Friday, September 13, 2013

নির্ভয়ার ধর্ষকদের ফাঁসির আদেশ,অতঃপর...............

"সিরিয়া যদি রাসায়নিক অস্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হাতে সত্যি সত্যিই তুলে দেয়,তাহলে সিরিয়ায় আর হামলা চালানোর কোন প্রয়োজন হবে না।"

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যে সাক্ষাৎকারে এ মত ব্যক্ত করেছিলেন,ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের পর্দায় সেই সাক্ষাৎকার দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল।

তো সেই সাক্ষাৎকারটি নিচ্ছিলেন একজন নারী সাংবাদিক।

সাক্ষাৎকারের সময়,as always,প্রেসিডেন্ট ছিলেন স্যুট-টাই পরিহিত। সাংবাদিক সাহেবাও পরেছিলেন স্যুট।

কিন্ত যেটা ছিল সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয়,সেটা হল,

প্রেসিডেন্ট যদিও ফুলপ্যান্ট পরিহিত ছিলেন,কিন্ত সাংবাদিকের পরনে ছিল হাফপ্যান্ট!

পাশ্চাত্য সভ্যতাকে "রোল মডেল" হিসেবে যাঁরা আমাদের সামনে উপস্থাপন করেন,তাঁরাও নিশ্চয় খেয়াল করেছেন,সেখানকার যে কোন উৎসবে,পুরুষেরা যতটা পারেন নিজেদের আবৃত করেন,আর নারীরা যতটা পারেন,শরীরের নানা অংশ দেখাতে সচেষ্ট থাকেন।

আচ্ছা,কেন তখন "সমঅধিকারের" কথা আসে না? কেন এই প্রশ্ন উত্থাপিত হয় না,যেখানে পুরুষেরা পা থেকে গলা পর্যন্ত আবৃত,সেখানে কেন নারীদের যতটা সম্ভব,উন্মুক্ত হয়ে চলাফেরা করতে হবে?

ও না না,তখন এটা আবার "সংস্কৃতির" অংশ হয়ে যায়। এক এক দেশে তো আবার এক এক সংস্কৃতি!

হুমায়ূন আহমেদের "বৃষ্টিবিলাস" বইয়ে পড়েছিলাম,নায়িকা (নাম মনে নাই)-র মা নায়িকাকে বলছেন,"মেয়েদের সেজেগুজে বিয়েবাড়িতে যাওয়া খুব ভাল। এতে অনেকের চোখে পড়ে,ভাল সম্বন্ধ আসে। আমি যতবার বিয়েবাড়িতে গিয়েছি,ততবার আমার জন্য সম্বন্ধ এসেছে।"

আবার হুমায়ূন আহমেদের এই "ডাইহার্ড" মহিলা ফ্যানরাই বলেন,"আমি তাকেই বিয়ে করব,যে 'আমার রূপ'-কে নয়,'আমাকে (অর্থ্যাৎ তাঁর মেধা)' মূল্যায়ন করবে!"

কিন্ত সত্যি সেটাই,যেটা হুমায়ূন আহমেদ তাঁর বৃষ্টিবিলাস বইয়ে নায়িকার নাম দিয়ে বলেছেন,অথচ তাঁদের মাথায় এটা ঢোকে না।

আমি বুঝি না,মেয়েরা এত কিছু বোঝেন,এই বাংলা কথাটা কেন বোঝেন না (বা বুঝলেও মানেন না) যে,ছোটবেলা থেকে চারপাশ থেকে তাঁদের মাথায় এইটা ঢোকানোর প্রাণান্তকর চেষ্টা চালানো হচ্ছে যে,"তোমার আসল সম্পদ তোমার রুপ,তোমার সৌন্দর্য। এটা যত expose করবে,তত তোমার দাম বাড়বে। তোমার কাজ,তোমার মেধা,তোমার চরিত্রের কানাকড়ি দামও নাই। তাই নিজের সৌন্দর্য,নিজের শরীরকে কাজে লাগাও।"

অন্যদিকে আল্লাহ হিজাবের সিস্টেমটা দিয়ে এই কথাটাই বোঝাতে চাইলেন,"তোমরা যদি নিজেদের এই শারীরিক সৌন্দর্যটাকে লুকিয়ে রাখ,তাহলেই শুধুমাত্র তোমাদের মেধা,তোমাদের গুণ,তোমাদের চরিত্র,অর্থ্যাৎ,'তোমাকে' সবাই মূল্যায়ন করবে। নইলে,তোমার চারপাশ তোমার শরীরটাকেই চাইবে,'তোমাকে' না।"

কিন্ত কীসের কী?

আজ নির্ভয়ার ধর্ষকদের ফাঁসির আদেশ হয়েছে (একজন অবশ্য 'নাবালক' হবার কারণে সবচেয়ে active থেকেও লঘু শাস্তি পেয়ে পার পেয়ে গেছেন,যাই হোক)। তো প্রথম আলো ডটকমে এই খবরটার সাথে আরেকটা খবর অ্যাড করা আছে।

দিল্লির নারীদের এই রায়ের পর জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল,তাঁরা কি এখন নিরাপদ বোধ করছেন?

তাঁরা সত্যি উত্তরই দিয়েছেন,না,তাঁরা নিরাপদ বোধ করছেন না।

তবে,একটা উত্তর পড়ে পুরো টাসকি খেয়ে গেলাম!

"যে দেশে নারীর ছোট পোশাক পরাকে সব সমস্যার মূল হিসেবে মনে করা হয়, সে দেশে নারী নিরাপদ বোধ করবে কীভাবে?"

অর্থ্যাৎ,

"কুমীর ভরা নদীতে কীভাবে সাঁতার কাটা হবে,সেটা যদি কুমীরে টেনে নিয়ে যাওয়ার মূল কারণ হয়,তাহলে সাঁতারু নিরাপদ বোধ করবেন কীভাবে?"

একটি অসাধারণ হাদীস ও আমি

আবু হুরাইরাহ রাযিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

"আল্লাহ জান্নাত ও জাহান্নাম তৈরি করে জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম)-কে বললেন,'যাও,জান্নাত এবং এর অধিবাসীদের জন্য আমি কী কী তৈরি করলাম,গিয়ে দেখে এস।'"

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

"আদেশমত জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) জান্নাত এবং এর অধিবাসীদের জন্য আল্লাহ যা যা তৈরি করেছেন,তা দেখে আসলেন। অতঃপর,তিনি আল্লাহকে বললেন,'আপনার মহিমার কসম। এমন কেউ নেই,যে এই জান্নাতের কথা শুনে এর ভিতরে প্রবেশ করার জন্য আগ্রহবোধ করবে না।'

এরপর আল্লাহ জান্নাতকে দুঃখ-কষ্ট দ্বারা আবৃত করলেন এবং জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম)-কে বললেন,'যাও,জান্নাত এবং এর অধিবাসীদের জন্য আমি কী কী তৈরি করলাম,এবার গিয়ে দেখে এস।'

জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) ফিরে এসে বললেন,'আপনার মহিমার কসম। আমার সন্দেহ হচ্ছে,কেউ এই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে কী না!'

এবার আল্লাহ জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম)-কে বললেন,'যাও,জাহান্নাম এবং এর অধিবাসীদের জন্য আমি কী কী তৈরি করলাম,গিয়ে দেখে এস।'

আদেশমত জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) জাহান্নাম দেখতে গেলেন,এবং এর নানা স্তর দেখে আসলেন।

জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) ফিরে এসে বললেন,'আপনার মহিমার কসম। এমন কেউ নেই,যে এই জাহান্নামের কথা শুনে এর ভিতরে প্রবেশ করার জন্য আগ্রহবোধ করবে।'

অতঃপর আল্লাহ জাহান্নামকে ভোগ-লালসা দ্বারা আবৃত করলেন এবং জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম)-কে বললেন,'যাও,এবার গিয়ে দেখে এস,জাহান্নাম এবং এর অধিবাসীদের জন্য আমি কী কী তৈরি করলাম।'

জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) ফিরে এসে বললেন,'আপনার মহিমার কসম। আমার সন্দেহ হচ্ছে,কেউ এই জাহান্নামে ঢোকার হাত থেকে বাঁচতে পারবে কী না!'"

[তিরমিযী,আবু দাউদ,নাসাঈ]

হাদীসটা প্রথম শুনেই বুকে একটা ধাক্কা লেগেছিল। এখনো যখনই হাদীসটা শুনি,বুকে চরম একটা ধাক্কা এসে লাগে।

আর চারপাশের বাঁধভাঙা আনন্দ-উল্লাসের কবলে আবার ভেসে যাওয়ার আগমূহূর্তে,এই হাদীসটা একদম টনিকের মত কাজ করে!

Friday, September 6, 2013

শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী রাহিমাহুল্লাহর তেরশ' বছর আগের একজন "দরবারী আলেম"

আসুন শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী রাহিমাহুল্লাহর তেরশ' বছর আগের একজন "দরবারী আলেম" সম্পর্কে জেনে নিই।

ইবন সা'দ রাহিমাহুল্লাহ বর্ণনা করেন,একদল মুসলিম আল-হাজ্জাজের (সে সময়ের স্বৈরশাসক) বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার ব্যাপারে ফতোয়া জানার জন্য হাসান আল-বাসরী রাহিমাহুল্লাহর কাছে আসেন। তারা বলেন,"হে আবু সাঈদ (হাসান আল-বাসরীর ডাকনাম),একজন শাসক অন্যায়ভাবে রক্ত প্রবাহিত করে,অন্যায়ভাবে সম্পদ ভক্ষণ করে,সাথে আরো অনেক কিছু করে। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার ব্যাপারে আপনি কী মনে করেন?"

হাসান রাহিমাহুল্লাহ উত্তর দেন,

"আমি মনে করি তা উচিত হবে না। কারণ,

☛ যদি (এই শাসকের কর্মকাণ্ড) আল্লাহর পক্ষ থেকে (আমাদের কর্মকাণ্ডের ফলস্বরূপ) শাস্তি হয়ে থাকে,তাহলে তোমাদের তরবারি দিয়ে তোমরা তাকে (রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে) সরাতে পারবে না।

☛ আর যদি তা আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা হয়ে থাকে,তাহলে আল্লাহর বিচারের জন্য আমাদের ধৈর্য ধরা উচিত। কারণ,তিনিই সর্বোত্তম বিচারক।"

কিন্ত সেই লোকেরা তাঁর সাথে একমত না হয়ে চলে গেল। পরবর্তীতে,তারা আল-হাজ্জাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল,যার ফলে আল-হাজ্জাজ তাদের প্রত্যেককে হত্যা করেন।

হাসান রাহিমাহুল্লাহ এ ঘটনার পর বলেন,

"যখন কোন জনপদ অত্যাচারী শাসকের দ্বারা পরীক্ষিত হয়,তখন যদি তারা ধৈর্য ধরে,শীঘ্রই আল্লাহ কোন বা কোনভাবে তাদের এই পরীক্ষা থেকে মুক্তির পথ করে দেন। কিন্ত আফসোস,তারা তরবারি হাতে তুলে নিতে এতই মরিয়া হয়ে ওঠে যে,আল্লাহ তাদেরকে তাদের তরবারির উপরেই ছেড়ে দেন। আল্লাহর শপথ,একটা দিনের জন্যও তারা (পূর্বের চেয়ে) কোন ভাল কিছু নিয়ে আসতে পারে না।"

[তাবাক্বাত আল-কুবরা,৭/১৬৩-১৬৫]

মূল পোস্টটি দেখুন এখানে

Courtesy : ফেসবুক পেজ IRF (Islamic Research Foundation).