Friday, November 15, 2013

কী অনুভূতি নিয়ে আশুরাকে পালন করা উচিত?

ইসলামের ইতিহাসে আশুরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্মৃতিবিজরিত দিন। একদিকে জালিম ফিরআউনের কবল থেকে মুসা আলাইহিস সালাম ও বনী ইসরাইলের মুক্তি, আবার অন্যদিকে কারবালার প্রান্তরে ইমাম হোসেন রাযিআল্লাহু আনহু এবং তার সঙ্গীদের মৃত্যু।

কিন্ত কীভাবে আমরা আশুরাকে পালন করব? অর্থ্যাৎ, আশুরা পালনের সময় মনের মধ্যে কোন আবেগটি আমাদের মধ্যে কাজ করা উচিত, মুসা আলাইহিস সালামের বিপদ থেকে পরিত্রাণ লাভের আনন্দ, না কী ইমাম হোসেন রাযিআল্লাহু আনহুর শহীদ হওয়ার জন্য দুঃখ?

→ "রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ছেলে ইবরাহীম যে মাসে মারা যান, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বা সাহাবীগণ, কেউই সে মাসকে 'শোকের মাস' হিসেবে পালন করেন নি, আর সে মাসে বিয়ে করাও বাদ দেন নি। অথবা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রাণপ্রিয় চাচা, হামযা রাযিআল্লাহু আনহু যে মাসে শহীদ হয়েছিলেন, আর তাঁর কলিজা কেটে চিবানো হয়েছিল, সেই মাসকেও তাঁরা 'শোকের মাস' বা 'বিবাহ বর্জনের মাস' হিসাবে পালন করেন নি। অতএব, মহররমকে 'শোকের মাস' হিসাবে পালন করা আর এই মাসে বিয়ে বর্জন করা সুস্পষ্ট বিদআত ছাড়া কিছুই নয়।"


→ "আমাদের অন্যতম আনন্দের উপলক্ষ হচ্ছে আশুরা। এই দিনে মুসা আলাইহিস সালাম ও বনী ইসরাইলকে জালিম ফিরআউনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য আমরা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে থাকি। কিন্ত বেশিরভাগ মানুষ এটাকে ইমাম হোসেন রাযিআল্লাহু আনহুর শহীদ হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোক পালন করে।

প্রকৃতপক্ষে, এই শোক প্রকাশের আবহের মূল সূচনাকারী শিয়া সম্প্রদায়। তারা এই দিনে তাজিয়া মিছিল বের করে, চাবুক আর ছুরি দিয়ে নিজেদের শরীর রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত করে, যার সাথে ইসলামের নূন্যতম সম্পর্ক নেই।

মজার ব্যাপার হল, শিয়াদের মূল বিশ্বাসের সাথে ঘৃণা আর প্রতিশোধ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ইতিহাসে তারা ইসলাম ও মুসলিমদের প্রতারক হিসেবেই পরিচিত। অতীতের প্রতিটি ঘটনায় তারা ইসলামের শত্রুদের মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহায়তা করেছে। তাদের বিশ্বাসের তিনটি ভিত্তি হলঃ শির্ক, কুফরী এবং তাদের আয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশ তাদের ইমামদের প্রদান!

তারা কি কাফির?

এখানে যে বিষয়টা বুঝতে হবে, কোন ব্যক্তিকে সুনির্দিষ্টভাবে কাফির বলার আগে তার বিশ্বাস সম্পর্কে প্রকৃত ও সুস্পষ্ট ধ্যারণা থাকতে হবে। সাধারণত, যদি কারো বিরুদ্ধে কোন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না থাকে, তার আগ পর্যন্ত তাকে মুসলিম হিসেবেই ধরে নিতে হবে।

কিন্ত কেউ যদি আয়িশা রাযিআল্লাহু আনহাকে গালি দেয়, আবু বকর আর উমার রাযিআল্লাহু আনহুকে অভিশাপ দেয়, তাহলে অবশ্যই সে কাফির। অথবা যদি বলে যে কুরআন অপরিবর্তিত নয়, অথবা তাদের কাছে অন্য একটি কুরআন রয়েছে, তাহলেও সে কাফির। যদি কেউ মনে করে যে তাদের ইমাম অদৃশ্য ক্ষমতার অধিকারী, অথবা মৃতকে জীবিত করতে পারে, তাহলে তা শির্ক।

আল্লাহ তাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে সঠিক বুঝ দান করুন এবং তাদের সুন্নাহ আঁকড়ে ধরার তৌফিক দান করুন।"


অতএব, আমাদের একটি খুশির উপলক্ষ হিসেবেই আশুরাকে পালন করতে হবে।

কিন্ত এরই সাথে, ইসলামের জন্য, আল্লাহর সন্তষ্টির জন্য, ইমাম হোসেন রাযিআল্লাহু আনহুর আত্মৎসর্গের কথাও আমাদের স্মরণে রাখা উচিত, কিন্ত অবশ্যই এটা মাথায় রাখতে হবে, ইসলামে "শোক দিবস" নামক কোন কনসেপ্ট নেই।

[ড. বিলাল ফিলিপস এবং শায়খ আসিম আল-হাকিমের কথাগুলো সিফাত মাহজাবীন আপুর সৌজন্যে।]

Monday, November 11, 2013

আশুরা বিষয়ক কিছু তথ্য

ইনশাআল্লাহ আগামী শুক্রবার বাংলাদেশে আশুরা। খুব সংক্ষেপে আশুরা বিষয়ক কয়েকটা কথা উল্লেখ করলাম।

☛ ১০ মুহাররম ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক দিন। আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে যে কথাটা বলতে হয়, এই দিনেই কারবালা প্রান্তরে ইমাম হুসাইন রাযিআল্লাহু আনহু শহীদ হন।

☛ আমাদের দেশে ইমাম হুসাইন রাযিআল্লাহু আনহুর হত্যাকারী হিসেবে ইয়াজিদকে দায়ী করা হয়। কিন্ত প্রকৃত ইতিহাস হল, ইয়াজিদ এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত নন। প্রকৃতপক্ষে এ সব বানোয়াট ঘটনা শিয়াদের ছড়ানো কাহিনী।

☛ এ ছাড়া কারবালা প্রান্তরে পাথর উল্টালে রক্ত বের হওয়া, সূর্যগ্রহণ, আকাশের দিগন্ত লাল হওয়া, আকাশ থেকে পাথর পড়া ইত্যাদিও সত্য না।

☛ এ দিন এবং তার আগের দিন রোজা রাখা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নত। কিন্ত এই আমলের সাথে কারবালার ঘটনার কোনই সম্পর্ক নাই।

☛ প্রকৃতপক্ষে, এই দিনে আল্লাহ মুসা আলাইহিস সালামকে বনী ইসরাইল সহ ফিরআউনের কবল থেকে রক্ষা করেন। তাই ইহুদীরা এ দিনে রোজা রাখত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনায় গিয়ে যখন তাদের এ আমল করতে দেখেন, তখন তিনিও এই দিনে রোজা রাখার ঘোষণা দেন। যেহেতু ইসলামের অন্যতম একটি মূলনীতি হল, কাফের-মুশরিকদের বৈপরীত্য করা, তাই তিনি তাঁর মৃত্যুর আগের বছরে পরবর্তী বছর আশুরার দিনের সাথে তার আগের দিন, অর্থ্যাৎ ৯ মুহাররম রোজা রাখার সংকল্প করেছিলেন। কিন্ত তার আশুরা আসার আগেই পরের বছর তিনি মারা যান।

☛ আশুরার দিনের রোজা এক বছরের করা গুনাহর কাফফারা, অতএব এর গুরুত্ব বলাই বাহুল্য। আর এর আগের দিন অথবা পরের দিন রোজা রাখা উত্তম। কিন্ত কেউ যদি শুধুমাত্র আশুরার দিনই রোজা রাখেন, সেটাও গ্রহণযোগ্য।

খুব সংক্ষেপে কোন রেফারেন্স ছাড়া কথাগুলো উল্লেখ করলাম। বিস্তারিত জানতে নিচের লেখাগুলো পড়তে অনুরোধ করছি।

১) শরীফ আবু হায়াত অপু ভাইয়ের লেখা "কারবালার কাহিনী"।

২) শুধুমাত্র আশুরার দিনে রোজা রাখা বিষয়ক IslamQA.com এর ফতোয়া

Tuesday, November 5, 2013

নারী এবং পুরুষের পার্থক্য

১৯১২ সালে মেডিসিনে নোবেল পুরষ্কার বিষয়ী ফ্রেঞ্চ সার্জন এবং জীববিজ্ঞানী ড. অ্যালেক্সিস ক্যারল, তাঁর "পুরুষঃ অজানা দিগন্ত" (Man, the unknown) বইয়ে পুরুষ এবং নারীর বায়োলজিকাল নানা পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করেছেন।

তিনি এই বলে উপসংহার টেনেছেন,

"প্রকৃতগতভাবেই নারী ও পুরুষ একে অপরের থেকে আলাদা। এই পার্থক্য আলাদা আলাদা যৌনাঙ্গের কারণে নয়, জরায়ুর উপস্থিতি-অনুপস্থিতি, গর্ভধারণে সক্ষমতা-অক্ষমতা অথবা শিক্ষার বিভিন্ন ধরণের কারণেও নয়।

বরং এই পার্থক্যের সূচনা একদম শুরুতে, মায়ের গর্ভে শরীরের গঠন শুরু হওয়ার সময়, যেখানে ডিম্বকোষ থেকে দুই আলাদা লিঙ্গের জন্য আলাদা আলাদা রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয়।

এই মূল বিষয়গুলো সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণেই নারীবাদের ধারক ও বাহকদের মাথায় এই ধারণা ঢুকেছে যে পুরুষ ও নারী, উভয়কেই একই পরিমাণ জ্ঞান অর্জন করতে হবে, তাদের সমান ক্ষমতা পেতে হবে এবং তাদের উভয়ের একই দ্বায়িত্ব পালন করতে হবে।

কিন্ত বাস্তবতা এটাই, নারী ও পুরুষ একে অপরের থেকে পুরোপুরিই আলাদা। নারীর দেহের প্রতিটি কোষ তার নারীত্বের পরিচয় বহন করে। একই কথা সত্য তার প্রতিটি অঙ্গের ক্ষেত্রে, এবং বিশেষ করে, তার স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষেত্রে।

মানুষের শরীরের গঠনপ্রকৃতি একেবারেই সুনির্দিষ্ট, যেমন সুনির্দিষ্ট এক বছরের ব্যাপ্তি। মানুষের ইচ্ছামত এগুলো পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। এগুলো যেমন আছে, ঠিক তেমনভাবেই মেনে নিতে আমরা বাধ্য।

অতএব, নারীদের উচিত, পুরুষদের অনুকরণ না করে তাদের নিজেদের প্রকৃতি অনুযায়ী নিজেদের দক্ষতাকে শাণিত করে তোলা। যে কাজের জন্য তারা সৃষ্ট, কোনভাবেই তাদের সে কাজ পরিত্যাগ করা উচিত নয়।"

মূল পোস্টটি দেখুন এখানে

Collected from : সিফাত মাহজাবীন আপু।

নিজস্ব একটা মন্তব্যঃ

আশা করি ড. অ্যালেক্সিস ক্যারল এবার ছাগু হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।

Monday, November 4, 2013

অন্য ধর্মের দেবদেবীদের গালি দেওয়া কতটুকু যৌক্তিক?

সত্য সত্যই। তা চাপা থাকে না, চাপা রাখাও যায় না। একদিন না একদিন তা প্রকাশিত হয়েই যায়।

কিন্ত এই সত্য মানুষের কাছে প্রচার করার কাজটা, অনেক সময়ই বেশ ধৈর্য নিয়ে, ধীরে ধীরে করা উচিত। কারণ, সত্য অনেক সময়ই মানুষের মনে বেশ বড় একটা আঘাত হানে। আর মানুষ খুবই আবেগপ্রবণ একটা প্রাণী। আবেগের বশবর্তী হয়ে মানুষ হেন কাজ নাই, যা করতে পারে না। আর সেখানে, সত্যকে অস্বীকার করা খুবই সহজ।

আর সে জন্যই আল্লাহ কুরআনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নির্দেশ দিয়েছিলেন,

"আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহবান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে এবং তাদের সাথে বিতর্ক করুন পছন্দ যুক্ত পন্থায়।" [সূরা আন-নাহল, আয়াত ১২৫]

আজকে হঠাৎ করেই ফেসবুকে এমন কতগুলো পেজ চোখে পড়ল, যেখানে "সত্য প্রচারের" জন্য হিন্দু ধর্মের দেবদেবীদের নানাভাবে আক্রমণ করা হয়েছে।

আর দুঃখের সাথে এটাও দেখতে হল, কমেন্ট বক্সে অনেক হিন্দুই আমাদের প্রিয় রাসূলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আক্রমণ করেছেন!

ইসলাম সত্য, আর অন্য সকল ধর্ম মিথ্যা। এটাই ধ্রুব সত্য, no doubt at all।

কিন্ত তাই বলে, অন্য ধর্মের দেবদেবীদের গালিগালাজ করলে কাজের কাজ কি আসলেই কিছু হবে?

কুরআনে তো আল্লাহ বলেই দিয়েছেন,

"আল্লাহকে ছেড়ে যাদেরকে তারা ডাকে তাদেরকে তোমরা গালি দিও না; কারণ এতে তারাও সীমালংঘন করে অজ্ঞতাবশত আল্লাহকে গালি দিবে।" [সূরা আল-আন'আম, আয়াত ১০৮]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই যে এত বছর ধরে ইসলাম প্রচার করলেন, এত এত যন্ত্রণা, অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করলেন, একটাবারও কি মক্কার মুশরিকদের দেবদেবীদের গালি দিয়েছেন?

আর আমাদের চাক্ষুষ উদাহরণ হিসেবে ড. জাকির নায়েক তো আছেনই। এই যে তাঁর এত এত পিস কনফারেন্স, বিভিন্ন ধর্মের তুলনা নিয়ে তাঁর এত এত লেকচার, কোনখানেই কি তিনি অন্য ধর্মের দেবদেবীদের গালি দিয়েছেন?

আমাদের মাথায় রাখা উচিত, আমাদের কাজ শুধু সত্য পৌঁছিয়ে দেওয়া, কাউকে ঘাড় ধরে সত্য মানানো না।

আর এটাও মনে রাখা উচিত, দ্বীন প্রচার করতে গিয়ে আমরা যা যা বলি, যা যা করি, তারও হিসাব কিন্ত আল্লাহর কাছে দিতে হবে!

তাঁর আদেশ না মেনে, তাঁর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দেখানো পথ অনুসরণ না করে "দ্বীন প্রচার" করতে গেলে কাজের কাজ তো কিছুই হবে না, বরং নিজেদেরই পরকাল নিয়ে টানাটানি পড়ে যেতে পারে!


Friday, November 1, 2013

কেন আল্লাহ জাহান্নামের ভয় দেখালেন?

কিছুদিন আগে, আমার একজন বন্ধুর সাথে আমার একটা বিষয়ে মনোমালিন্য হয়। যার ফলে, আমি তার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেই। এমন কী, হোয়াটস অ্যাপ আর ভাইবারে, তার সাথে যে যে গ্রুপে ছিলাম, রাগের মাথায় সেই সব গ্রুপ থেকেও নিজেকে রিমুভ করে দেই!

প্রায় ১৭-১৮ দিন পর,ফেসবুকে হঠাৎ এই হাদীসটা চোখে পড়ে,

হযরত আবু হোরাইয়া (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন, কোন মুসলমানের জন্য তার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সর্ম্পক ছিন্ন করে থাকা জায়েয নয়। যে ব্যক্তি তিন দিনের অধিক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকল এবং মারা গেল সে দোযখে যাবে। (আবু দাঊদ) - See more at: http://muminun.net/bengali/hadith/index.php?cID=448#sthash.hfsbUe0X.dpuf
হযরত আবু হোরাইয়া (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন, কোন মুসলমানের জন্য তার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সর্ম্পক ছিন্ন করে থাকা জায়েয নয়। যে ব্যক্তি তিন দিনের অধিক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকল এবং মারা গেল সে দোযখে যাবে। (আবু দাঊদ) - See more at: http://muminun.net/bengali/hadith/index.php?cID=448#sthash.hfsbUe0X.dpuf
"কোন মুসলমানের জন্য তার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সম্পর্ক ছিন্ন করে রাখা বৈধ নয়। যে ব্যক্তি তিন দিনের অধিক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকল এবং মারা গেল, সে জাহান্নামে যাবে।"

আল্লাহর অসীম রহমতে, এই হাদীসটা পড়েই আমার মাথায় যেন বাজ পড়ল!

আমার ঐ বন্ধুর সাথে আমি সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে রেখেছি প্রায় ১৭-১৮ দিন হয়ে গেল! আল্লাহর দয়ায় এখনো বেঁচে আছি বলে রক্ষা, অথচ এর মধ্যেই যদি মারা যেতাম, আমার স্থান হত জাহান্নাম!!!

তাড়াতাড়ি করে "মান-অভিমান চুলায় যাক", এই বলে আমার বন্ধুর ওয়ালে গিয়ে সালাম দিয়ে আসলাম।

আলহামদুলিল্লাহ, সেও সালামের উত্তর দিল, আর দুজনে মিলে আমার সেই আগের মত হয়ে গেলাম, যেন আমাদের মধ্যে কোনদিন কোন মনোমালিন্য হয়ই নাই!

নাস্তিকদের একটা খুব প্রিয় কথন যেটা,

"আল্লাহ খালি জাহান্নামের ভয় দেখান। এটা করলে জাহান্নাম, ওটা করলে জাহান্নাম, সেটা করলে জাহান্নাম! এত ভয় নিয়ে বেঁচে থাকা যায়?"

আর

"আমি কেন আল্লাহর ভয়ে, জাহান্নামের ভয়ে খারাপ কাজ বাদ দেব? কেন, আমাদের কি বিবেক নেই?"

অবশ্যই আমাদের বিবেক আছে, সেই বিবেকের কাছে দায়বদ্ধতাও আছে।

কিন্ত সাথে আর একটা জিনিসও আছে, নিজের মন্দ কাজের জন্য যুক্তি, তথা অজুহাত।

শুধু মাত্র একটা উদাহরণ দেই।

নিয়মিত ব্যভিচারে যারা অভ্যস্ত, তারা কিন্ত খুব সহজ একটা যুক্তি দিতে পারেন।

"আরে, আমাদের একে অন্যকে পছন্দ, কিন্ত সমাজ আমাদের এক হতে দেবে না। এখন কী করব? আমরা তো কেউ কাউকে কোন জোর খাটাচ্ছি না, নিজের পছন্দে একে অন্যের সাথে একান্ত সময় কাটাচ্ছি, তাতে কার কী সমস্যা হয়?"

যুক্তিটা কিন্ত সত্যিই অসাধারণ, কিন্ত এই কাজটার consequence কিন্ত আমাদের সবারই জানা।

যাদের কাছে (including so many muslims) এই যুক্তিটা ভাল যুক্তি মনে হয়, তাঁদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস অনুযায়ী একটা অনুরোধ করব।

চোখ বন্ধ করে একটু কল্পনা করুন তো, আপনার মা আপনার বাবাকে বাদ দিয়ে অন্য কোন পুরুষের সাথে একান্ত সময় কাটাচ্ছেন......

সত্যিই যদি বিবেক বলে আপনার কিছু থাকে, এরপর থেকে ব্যভিচারের প্রতি আপনার প্রবল ঘৃণা জন্মানোর কথা।

যাক সে কথা।

সোজা বাংলায়, শুধুমাত্র একটা কারণেই আল্লাহ আমাদের জাহান্নাম নিয়ে এত ভয় দেখিয়েছেন, কারণ আমাদের সৃষ্টিকর্তা হিসেবে তিনি জানেন, যুক্তি (actually কুযুক্তি) নামক নানা রকম অজুহাত খাড়া করে নিজেদের যত মন্দ কাজ আছে, তার সব কিছু জাস্টিফাই করা আমাদের কাছে বাঁ হাতের খেল।

তাই তিনি সে সব কাজের ক্ষেত্রে জাহান্নামের ভয় দেখিয়েছেন, যে সব কাজগুলো সত্যিকার অর্থেই খারাপ কাজ, মন্দ কাজ, সমাজ ব্যবস্থাকে লন্ডভন্ড করে ফেলতে পারে যা, সেগুলো মানুষ যেন করার আগে তিন-চার বার চিন্তা করে, এটা ভাবে যে, "আল্লাহ তো দেখছেনই, সাথে দুই কাঁধের ফেরেশতা তো সব নোট করে রাখছেন, এইখানে কুকাজটা করে না হয় কোনভাবে ফাঁকিঝুঁকি দিয়ে বেরিয়ে যাব, কিন্ত আল্লাহকে ফাঁকি দেব কীভাবে? আর আল্লাহ মাফ না করলে তো সোজা জাহান্নাম!"

আল্লাহর ইবাদত করি বা না করি, আল্লাহর তাতে বিন্দুমাত্র কিছু যায় আসে না।

কিন্ত তাঁর ইবাদত করলে, অক্ষরে অক্ষরে মেনে চললে, আমাদের সমাজের যে চরিত্র দাঁড়াবে, তার একটা ছোট্ট উদাহরণ দিতে পারি।

মক্কা-মদীনায় যখন ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হয়ে গেল, তখন একজন যুবতী ঘুটঘুটে রাতের বেলায় একা একা রাস্তায় চলতে পারতেন। না ছিল তার কাছে থাকা জিনিস চুরি বা ডাকাতি হবার ভয়, না ছিল ধর্ষিত হবার ভয়। শুধু একটাই ভয় ছিল, কোন বন্য জন্তু হঠাৎ করে আক্রমণ করে বসে না কী!

নারী স্বাধীনতার এই দৃষ্টান্ত কি বর্তমান সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা প্রচলিত সমাজের কোথাও দেখাতে পারবেন?
কোন মুসলমানের জন্য তার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সর্ম্পক ছিন্ন করে থাকা জায়েয নয়। যে ব্যক্তি তিন দিনের অধিক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকল এবং মারা গেল সে দোযখে যাবে। - See more at: http://muminun.net/bengali/hadith/index.php?cID=448#sthash.hfsbUe0X.dpuf
হযরত আবু হোরাইয়া (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন, কোন মুসলমানের জন্য তার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সর্ম্পক ছিন্ন করে থাকা জায়েয নয়। যে ব্যক্তি তিন দিনের অধিক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকল এবং মারা গেল সে দোযখে যাবে। (আবু দাঊদ) - See more at: http://muminun.net/bengali/hadith/index.php?cID=448#sthash.hfsbUe0X.dpuf
হযরত আবু হোরাইয়া (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন, কোন মুসলমানের জন্য তার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সর্ম্পক ছিন্ন করে থাকা জায়েয নয়। যে ব্যক্তি তিন দিনের অধিক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকল এবং মারা গেল সে দোযখে যাবে। (আবু দাঊদ) - See more at: http://muminun.net/bengali/hadith/index.php?cID=448#sthash.hfsbUe0X.dpuf
হযরত আবু হোরাইয়া (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন, কোন মুসলমানের জন্য তার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সর্ম্পক ছিন্ন করে থাকা জায়েয নয়। যে ব্যক্তি তিন দিনের অধিক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকল এবং মারা গেল সে দোযখে যাবে। (আবু দাঊদ) - See more at: http://muminun.net/bengali/hadith/index.php?cID=448#sthash.hfsbUe0X.dpuf